থ্রিডি মডেল বানানো হল ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের অফিসের। কসবার যে অফিসে দিনের পর দিন ভুয়ো নথি ছাপানো হত এবং ভুয়ো ভ্যাকসিনের উপর কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ড, স্পুটনিক ইত্যাদির লেবেল লাগানো হত। ওই অফিস স্ক্যান করা হল এই অত্যাধুনিক স্ক্যানার দিয়ে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি অবলম্বন করে এই স্ক্যানারের সাহায্যে চালানো হল তদন্ত।
শনিবার দুপুর দু’টোয় দেবাঞ্জনের অফিসে পৌঁছোয় গোয়েন্দা প্রধান মুরলিধর শর্মা। তাঁর সঙ্গে ছিল লাল বাজারের scientific wings। টানা দু’ঘণ্টা ধরে অফিস স্ক্যান করা হয় এবং তৈরী করা হয় থ্রি ডি মডেল। এরপর দেবাঞ্জনকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছয় বিশেষ তদন্তকারী দল। তারপর আরও তিন ঘণ্টা ধরে ওই অফিসে চলে চিরুনি তল্লাশি।
এই বিষয়ে গোয়েন্দা প্রধান মুরলিধর শর্মা জানিয়েছেন, ‘এটা খুবই গুরুতর অপরাধ। সরকারী নথি জাল করে নিজেকে সরকারী আধিকারিক বলে পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ঠকানো হয়েছে। আমাদের কাছে যে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে তা ব্যাবহার করেই এই ঘটনার তদন্ত চালানো হচ্ছে। ব্যবহার করা হচ্ছে থ্রিডি স্ক্যানার ।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘এই স্ক্যানার উইজ করে থ্রিডি মডেল তৈরি করা হবে। যাতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়। আর গোটা ঘটনা বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও বাকি কর্মীদের বুঝে যাওয়ার কথা। যারা বলছেন কিছু জানেন না, তাঁরা সত্যি লুকোচ্ছেন। থ্রিডি এই মডেলকে বিচারকের সামনে দেখানো হবে। যাতে বিচারক বিষয়টি ভালো ভাবে বুঝতে পারেন।’
কী এই থ্রি ডি স্ক্যানার?
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তদন্ত করা হয় এই স্ক্যানারের মাধ্যমে। প্রথমে লেজার স্ক্যানারের মাধ্যমে ক্রাইম সিনের একটি থ্রি ডি মডেল তৈরি করা হয়। যার মাধ্যমে গোটা ঘটনার একটি থ্রি ডি ভিউ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন না করেও এই মডেলের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি ক্রাইম সিনে পৌঁছে তদন্ত করা যায় ।
এর আগে কোন তদন্তে থ্রিডি স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়েছে ?
২০১৯ সালে জুলাই মাসে বাঁশদ্রোণী বাজারে এক বৃদ্ধ দম্পতি খুনের তদন্তে এই থ্রি ডি স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়েছিল। এরপর থেকে বহু তদন্তেই ব্যবহৃত হয়েছে এই আধুনিক স্ক্যানার।
১.গড়িয়াহাটে শাশুড়িকে খুন। অভিযুক্ত বৌমা, নাতনি এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
২.রেড রোডে আর্সালানের গাড়ি দুর্ঘটনা।
৩.পঞ্চসায়র গ্যাং রেপ।
এবার এই একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে দেবাঞ্জন কাণ্ডে। এই বিশেষ স্ক্যানারের দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা পুলিশের একটি বিশেষ টিম।
দেবাঞ্জনের অফিসে কেন ব্যবহার করা হচ্ছে এই স্ক্যানার ?
দিনের পর দিন ওই অফিসে তৈরি হত ভুয়ো নথি। সেগুলি অফিসেই রাখা থাকত। এমনকী ভুয়ো ভ্যাকসিনের উপর কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ড, স্পুটনিক ইত্যাদি ভ্যাকসিনের লেবেলও লাগানো হয়েছিল ওই অফিসে। গোটা ঘটনা কীভাবে বাকি কর্মীদের নজর এড়িয়ে গেল? নাকি তাঁরা সত্যি বলছে না। তছাড়াও অফিসের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ নমুনা এবং বাকি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খতিয়ে দেখার জন্যেই এই থ্রিডি স্ক্যানারের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।