মঙ্গলবার বাম্বোলিমের অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে এটিকে মোহনবাগানের মোলাকাত হায়দরাবাদ এফ সি-র সঙ্গে। এই মুহূর্তে হায়দরাবাদ আই এস এল-এর লিগ টেবলে আছে এক নম্বরে। চোদ্দ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট তাদের। দুই নম্বরে থাকা কেরল ব্লাস্টার্সের চেয়ে তারা তিন পয়েন্টে এগিয়ে। আর বারো ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে আছে মোহনবাগান। হায়দরাবাদের এই সাফল্যের পিছনে আছে তাদের নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার বার্থোমিউ ওগবেচের দুরন্ত ফর্ম। চোদ্দ ম্যাচে ১৪ গোল করা হয়ে গেছে তাঁর। সব মিলিয়ে আই এস এল-এ ৪৯ গোল করেছেন তিনি। এস সি ইস্ট বেঙ্গলের বিরুদ্ধে কদিন আগেই হ্যাটট্রিক করেছেন ওগবেচে। প্রথম লিগে মোহনবাগান এবং হায়দরাবাদ ২-২ করেছিল। সেই ম্যাচেও গোল ছিল ওগবেচের। তাই মঙ্গলবার মোহনবাগান ডিফেন্সের প্রথম কাজ হল ওগবেচেকে থামানো।
সেটা ভাল করেই জানেন মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দো। ডার্বিতে ইস্ট বেঙ্গলকে ৩-১ গোলে হারানোর পর গত ম্যাচে মুম্বই সিটি এফ সি-র সঙ্গে ১-১ করেছে মোহনবাগান। গোল করে এগিয়ে গিয়েও গোল খেতে হয়েছে। তাই ফেরান্দোর মাথায় ঘুরছে ডিপ ডিফেন্সে সন্দেশ ঝিঙ্গনকে নামানো কথা। তবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি তিনি। ফেরান্দোর টিম নির্বাচন কিংবা ম্যাচের মধ্যে প্লেয়ার বদলানো নিয়ে খানিকটা বিভ্রম তৈরি হচ্ছে। ডার্বিতে একুশ বছরের কিয়ান আনসারিকে নামিয়ে ফাটকা খেলে জিতেছিলেন তিনি। হ্যাটট্রিক করেছিলেন কিয়ান। কিন্তু পরের মুম্বই ম্যাচে পাঁচ মিনিটের জন্য নামালেন কিয়ানকে। এ নিয়ে মিডিয়ায় সোরগোল হওয়ায় তিনি সাফাই দিলেন কিয়ানের চোট ছিল। জামশিদ নাসিরির পুত্রের কোথায় লা্ল, কবে লাগল তার কোনও হদিশ তিনি দিতে পারেননি। তাই সন্দেশকে যে হায়দরাবাদ ম্যাচে খেলাবেনই তার কোনও হদিশও তাঁর কথায় পাওয়া যায়নি।
বারো ম্যাচে মোহনবাগান কুড়ি গোল খেয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হতে চাওয়া টিমের পক্ষে এটা ভাল বিজ্ঞাপণ নয়। আবার এমন একটা টিমের বিরুদ্ধে ম্যাচ যারা এ পর্যন্ত ৩৩ গোল করে বসে আছে। তাই সন্দেশই খেলুন বা না খেলুন ওগবেচেকে থামাতে চাওয়া মোহনবাগানের ডিফেন্সের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। আশুতোষ মেহতা, প্রীতম কোটাল, তিরি এবং শুভাশিস বসুকে নিয়ে গড়া মোহন ডিফেন্স যদি গোল না খায় তা হলে ম্যাচ জেতার কথা ভাবতেই পারেন ফেরান্দো। কারণ বাগানের সামনের দিকটা বেশ ভাল। উই ডিফেন্সিভ হাফ কার্ল ম্যাকহিউ এবং দীপক ট্যাংরির সামনে তিনজন অ্যাটাকিং মিডিও। মনবীর সিং, হুগো বুমো এবং লিস্টন কোলাসো। তিনজনই গোল করতে পারেন, করাতে পারেন। আর বুমো তো এই টিমটার গেমমেকার। সেট পিসে অসাধারণ। এদের সামনে থাকবেন ডেভিড উইলিয়ামস। প্রথম দিকে দলে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। জুয়ান আসার পর তাঁকে প্রথম একাদশে দেখা যাচ্ছে। আর উইলিয়ামস গোল করে তাঁর উপর রাখা আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন। রয় কৃষ্ণর অভাব আর তাই তেমনভাবে অনুভূত হচ্ছে না। জনি কাউকোর অফ ফর্মের জন্য তেমন ক্ষতি হচ্ছে না মোহনবাগানের।
আর এদের পাশে তো নতুন নায়ক কিয়ান নাসিরি তো আছেন। রোজ রোজ তিনি হ্যাটট্রিক করবেন না এটা যেমন ঠিক কথা, তেমনই রোজ রোজ ফেরান্দো তাঁকে পাঁচ মিনিটের জন্য নামাবেন এটাও ঠিক নয়। তাই ম্যাচে গোল করার নতুন লোকও পেয়ে গেছে বাগান। তাদের জেতা তাই অসম্ভব নয়। শুধু ওগবেচে কাঁটাটা একটু উপড়ে ফেলতে হবে। এই যা।