আই এস এল সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে বুধবার এটিকে মোহনবাগানকে খেলতে হবে হায়দরাবাদ এফ সি-র সঙ্গে। গোয়ার বাম্বোলিম আ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামের এই ম্যাচে মোহনবাগান মাঠে নামবে ১-৩ গোলে পিছিয়ে থেকে। রবিবারের ফাইনালে যেতে হলে গত বারের রানার্স মোহনবাগানকে ম্যাচটা জিততে হবে তিন গোলের ব্যবধানে। তবে যদি মোহনবাগান দু গোলের ব্যবধানে জিততে পারে তাহলে ম্যাচটা গড়াবে অতিরিক্ত সময়ে। তাতেও ফয়সালা না হলে টাই ব্রেকার।
লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে জামশেদপুরের কাছে এক গোলে হেরে যাওয়ার পর সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ১-৩ গোলে হার। প পর দু ম্যাচে হারের পর মোহনবাগান শিবিরে সেই ফিল গুড পরিস্থিতিটা কতটা উধাও তা বোঝা যাবে বুধবারের ম্যাচে। তবে ফুটবলারদের চাঙ্গা রাখতে কোচ জুয়ান ফেরান্দো বলে দিয়েছেন কত গোলে ম্যাচ জিততে হবে তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে ম্যাচটা উপভোগ করতে এবং জেতার মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামতে। পর পর দুই ম্যাচে হারের আগে মোহনবাগান টানা পনেরো ম্যাচ অপরাজিত ছিল। তাই হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় লেগে তারা যে জিততে পারবে না তা বলা যাচ্ছে না।
মোহনবাগানের সমস্যা হচ্ছে প্রথম একাদশ ঠিক মতো বেছে নেওয়া। তিরি ছাড়া সব ফুটবলার ফিট আছেন। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে তিরি আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন। তবে এখন তনি ফিট হওয়ার পথে। তিরিকে তিনি খেলাবেন কি না তা নিয়ে কোনও ইঙ্গিত দেননি ফেরান্দো। তবে তিরি খেললে মোহনবাগান আক্রমণের যে ভারসাম্য থাকে সেটা তিনি না খেললে থাকবে না। তখন সন্দেশ ঝিঙ্গনের পাশে প্রীতম কোটালকে খেলিয়ে রাইট ব্যাকে খেলাতে হবে প্রবীর দাসকে। এতে দলের আক্রমণ এবং রক্ষণ–দু দিকের ভারসাম্যই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই তিরি খেলা বা না খেলার উপর মোহনবাগান রক্ষণের অনেক কিছু নির্ভর করছে। জুয়ান ফেরান্দো আগের দিন জনি কাউকোকে ফরোয়ার্ডে খেলিয়ে ভুল করেছিলেন। ফিনল্যান্ড তারকা বেশ ভাল ফর্মেই আছেন। কিন্তু তিনি আদতে মিডফিল্ডার। কোনও ভাবেই ফরোয়ার্ড নন। তাই কাউকোকে মাঝ মাঠে খেলানোই শ্রেয়। আর সামনের দিনে লিস্টন কোলাসো এবং মনবীর সিংকে দুই উইংয়ে খেলিয়ে সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে রয় কৃষ্ণকে দিয়ে শুরু করলেই ভাল। মোহনবাগান এই কম্বিনেশনে খেলেই সেমিফাইনালে উঠেছে। হঠাৎ করে সেই কম্বিনেশন ভেঙেই হায়দরাবাদের কাছে হারতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে মাঝ মাঠে হুগো বুমো এবং জনি কাউকোর সঙ্গে লেনি রডরিগস কিংবা দীপক ট্যাংরিকে নিয়ে দল গড়া যেতে পারে। ভুলে গেলে চলবে না ম্যাচটায় মোহনবাগানকে জিততে হবে। শুরু থেকে অ্যাটাকিং না খেললে মুশকিল আছে।
হাবদরাবাদের মূল শক্তি তাদের স্ট্রাইকার বার্ট ওগবেচে। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে ১৮টা গোল করা হয়ে গেছে তাঁর। সংখ্যাটা কম নয়। ফাইনালে উঠলে (যার সম্ভাবনাই বেশি) ওগবেচের গোল সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তাঁকে সামলানোই এখন বাগানের বড় চ্যালেঞ্জ। তাঁর পাশে জেভিয়ার সিভেরিও বেশ ভাল। সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ওগবেচের যেমন গোল আছে, তেমনই গোল আছে সিভেরিওর। তাই গোলের জন্য মরিয়া হতে চাওয়া মোহনবাগানকে এই দুই ভয়ঙ্কর স্ট্রাইকারের উপরেও কড়া নজর রাখতে হবে। টুর্নামেন্টে ৪৬টা গোল করে ফেলেছে হায়দরাবাদ। তাদের অ্যাটাককে তাই সমীহ করতেই হবে বাগানকে। হায়দরাবাদ ডিফেন্সও যথেষ্ট সমীহ করার মতো। জুয়ানন, চিঙ্গেলসানা কিংবা আকাশ মিশ্রদের টপকে গোল পাওয়া থয়তো অসম্ভব নয়, কিন্তু বেশ কঠিন। মোহনবাগানকে বুধবার তাই নিজেদের ছাপিয়ে যেতে হবে। সেটা জুয়ান ফেরান্দোর ছেলেরা পারেন কি তাই এখন দেখার।