নয়াদিল্লি: ২০১৬, ৮ নভেম্বর। জোর গলায় দেশবাসীর কাছে ৫০ দিন সময় চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বন্ধ করে দিয়েছিলেন ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট। তারপর দেখতে দেখতে কেটে গেল পাঁচটা বছর। আদৌ কী মোদির দাবি পূরণ হল? তা নিয়ে হাজার বিতর্ক থাকলেও দুর্দশার ছবি বারে বারে চোখের সামনে ফুটে উঠছে। ফেসবুক সহ একাধিক সামাজিক মাধ্যমে ছবি গুলি আবারও ভাইরাল হচ্ছে।
নোটবন্দিতে ঘোষিত উদ্দেশ্যগুলোর অন্যতম ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে নগদের ঢালাও ব্যবহার বন্ধ করে, তাঁদের ডিজিটাল লেনদেনের পথে নিয়ে আসা। পাঁচ বছর পর কী অবস্থা? নগদে লেনদেনে আদৌ রাশ পরানো গিয়েছে কি? ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, মানুষের কাছে এখনও লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ সেই নগদ টাকাই।
সোমবার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন মোদির পাঁচ আগের নোটবন্দির সেই ভাষণ টুইট করেন। ৪০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্যাপশনে ডেরেক লেখেন, ‘ছাত্রী জীবনে আমরা গালাগালি হিসাবে …।
Please watch this 40-second video today.
In schoolboy slang we called this Big Bullshixxxx
Am on #Instagram. Follow for more videos, pics & infographics>> https://t.co/xq2uUJtPiS pic.twitter.com/xnJuw9Dxhk
— Derek O'Brien | ডেরেক ও'ব্রায়েন (@derekobrienmp) November 8, 2021
আরও পড়ুন-শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির বাড়ি অ্যান্টিলার নিরাপত্তা বাড়াল মুম্বই পুলিশ
নোটবন্দির সময়ে ভারতীয় বাজারে ৮৬ শতাংশ ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই ব্যাংক আর এটিএমে-র বাইরে গ্রাহকদের লম্বা লাইন, ভিড় জমে যায়। মোদির বলেছিলেন, যাদের কাছে বেহিসেবি পয়সা রয়েছে, তাঁদের বাধ্য হয়ে এবার সেগুলোর হিসেব দিতে হবে। এরফলে অবৈধ লেনদেন থেকে মুক্তি মিলবে এবং কালোটাকার হদিশও পাওয়া যাবে। অনেকেই নোটবন্দিকে দুর্নীতির উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। যদিও, নোটবন্দির সঙ্গে অনেকেই ডিজিটাল লেনদেনকে জুড়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন।

কিন্তু, পাঁচ বছরেও কতটা সম্পূর্ণ হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছেই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হিসেবেই স্পষ্ট, নোটবন্দির সিদ্ধান্তের পর পাঁচ বছর কেটে গেলেও অন্যতম ঘোষিত উদ্দেশ্য পূরণ হওয়া এখনও বিশবাঁও জলে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-এর নভেম্বরে রাতারাতি ৫০০ ও ১ ০০০ টাকার নোট বাতিলের আগে মানুষের হাতে নগদের পরিমাণ ছিল ১৭.৯৭ লক্ষ কোটি টাকা। নোটবন্দির ঠিক পরে, ২০১৭-এর জানুয়ারি মাসে তা কমে গিয়ে ঠেকে ৭.৮ লক্ষ কোটি টাকায়। উৎসবের মরসুমে সাধারণত নগদ লেনদেন বেশি হয়। এ বারও তার অন্যথা হয়নি।

কিন্তু শুধু উৎসবই নয়, এ দেশের ১৫ কোটি মানুষের এখনও ব্যাঙ্কের খাতা নেই। স্বভাবতই তাঁরা নগদ লেনদেনই করে থাকেন। তা ছাড়া, দেশের ‘টিয়ার-ফোর’ শহরে সাধারণ লেনদেন তো বটেই, ই-কমার্স সংস্থায় কেনাকাটাও ৯০ শতাংশই হয় নগদে। যা কলকাতার মতো ‘টিয়ার- ওয়ান’ শহরে ৫০ শতাংশ।
নেটিজেনরা বহু মিম পোস্ট করেছেন। কোথাও বলা হয়েছে, ‘পাঁচ বছর ধরে আমরা চিপ লাগানো নোট ব্যবহার করছি।’ সেখানে ছবি দেওয়া হয়েছে ২০০০ টাকার নোটের ওপর একটি কলার চিপস। অন্য এক নেটিজেন তাঁর মিমে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ঠোঙায় বাদাম ভরেছেন, তার ছবিও দিয়েছেন। আরও একটি মিমে দেখা গিয়েছে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে মালা পরানো ও ক্যাপশনে লেখা, ‘পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটকে আসুন স্মরণ করি।’