আর কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা। তার পরেই শুরু হবে বর্ষবরণ। পুরোনো বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানাতে মেতে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার রাজ্যের বিভিন্ন পিকনিক স্পটে দেখা গেল মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
বছরের শেষ দিনে ফেস্টিভ মুড দেখা গেল বাঁকুড়ায়। জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভিড় জমিয়েছেন মানুষজন। বছরের শেষ দিনে পিকনিকের আমেজে মেতে উঠেছে আট থেকে আশি। জয়পুরের জঙ্গলে পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকেই বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় পরিজন, পরিবার নিয়ে জয়পুরের শাল জঙ্গলের কোলে চলছে পিকনিক। শুক্রবার দিনভর চলবে খাওয়া দাওয়া, গল্প, আড্ডা, আর সব শেষে বর্ষবরণ।
ওমিক্রনের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করেই উপচে পড়ল তারাপীঠে ভক্তদের ভিড়। বছরের শেষ দিনে মন্দিরে পুজো দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে উদ্যত পুণ্যার্থীরা। তীর্থক্ষেত্রের সঙ্গে সঙ্গেই তারাপীঠ এখন একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। পুণ্যার্থীদের পাশপাশি পিকনিকের মরসুমে বহু পর্যটক তারাপীঠে আসেন। ২৫ ডিসেম্বরে থেকে তারাপীঠে দেখা গিয়েছে মানুষের ঢল। শুক্রবার বছরের শেষ দিন উপলক্ষে সকাল থেকেই মন্দির প্রাঙ্গণে ভিড় বেড়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে মন্দির কতৃপক্ষ। মাস্ক ছাড়া মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মানতে হচ্ছে সামাজিক দুরত্ব বিধি।
আরও পড়ুন : Dhupguri: ধূপগুড়িতে হাসপাতাল চত্বরে বক্স বাজিয়ে ‘ডাক্তার’দের পিকনিক
বর্ষবরণের মধ্যেও যেমন আনন্দ রয়েছে, তেমনি রয়ে গিয়েছে ওমিক্রনের আতঙ্ক। তার মধ্যেই পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন টাকিতে। সুন্দরবন, কলকাতা, বারাসাত সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসেছেন। কেউ রাজবাড়ি ঘাটে, কেউ মিনি সুন্দরবনে আবার কেউ নৌবিহারে বেড়িয়েছেন। বহু মানুষ এখানে পিকনিক করতে আসছেন। তারা নিজেদের মতো করে নাচ গানে মেতে আছেন। এক কথায় বলা যেতে পারে ২০২১-এর গ্লানি কাটিয়ে ওমিক্রনের আতঙ্ক উপেক্ষা করে ২০২২-কে স্বাগত জানাতে উৎসুক টাকিতে আগত পর্যটকরা।
বর্ষশেষে রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্র শান্তিনিকেতনে উপচে পড়া ভিড় দূর-দুরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের। শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত স্থান ঘুরে দেখছেন পর্যটকরা। অন্যদিকে কোপাই, সোনাঝুরি হাট, কঙ্কালীতলায় ভিড় জমিয়েছেন ভ্রমণপিপাশু মানুষ। বীরভূমের অন্যতম ঐতিহ্য বাউল গানের সুরে মুখরিত হচ্ছে শান্তিনিকেতন। আদিবাসী নৃত্যে রীতিমতো উপভোগ করছেন পর্যটকরা।
প্রায় দু’বছর পর ফের ঘুরে দাঁড়াল বেলপাহাড়ি সহ ঝাড়গ্রামের পর্যটন শিল্প। করোনার প্রভাব কিছুটা কমতে কম খরচে বৈচিত্র্যপূর্ণ জঙ্গলমহলের পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে ভ্রমনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। এবার নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই পর্যটক আসছেন জঙ্গলমহলের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র বেলপাহাড়ীর ঘাঘরা, ঢাঙ্গিকুসুম, গাডরাসিনি, তারাফেনী ড্যাম, সহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে। বেলপাহাড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পুলিস মোতায়ন করা হয়েছে। নতুন বছরের আগে জঙ্গলমহলে ফের পর্যটকরা আসায় খুশি এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় দোকানদাররা।
ওমিক্রনের দাপট রুখতে বছর শেষে দুর্গাপুরে পুলিস প্রশাসনের কড়া নজরদারি। এদিন সকাল থেকেই দেখা গিয়েছে, পিকনিক স্পটে করোনা বিধিনিষেধ নিয়ে সচেতন করতে মাইকিং করছে কোকওভেন থানার পুলিস। তারা মাস্ক বিলি করে। অন্যদিকে দুর্গাপুরের বিভিন্ন পার্কে চলছে নজরদারি ও সচেতনতা মূলক প্রচার।