পিংলা: পরকীয়ার জেরে দু’বছরের কন্যাসন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানার বাগনাবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তরবাড় গ্রামের ঘটনা। মৃত শিশুর নাম দীপ্তি জানা৷ মায়ের নাম পূজা জানা৷ বাবার নাম দেবাশিস জানা। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি৷
দেবাশিস জানা কর্মসূত্রে দিন পাঁচেক আগেই আন্দামানে যান। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই শিশুর মা পূজা প্রথম বাড়িতে জানায়, বাড়ির সামনে লেপ রোদে দেওয়া ছিল৷ বাচ্চা লেপের মধ্যে খেলার সময় কোনওভাবে তাতে জড়িয়ে দমবন্ধ হয়ে মারা যায়৷ যদিও মায়ের বক্তব্য পুলিস বা প্রতিবেশী কেউ বিশ্বাস করতে পারেনি। সন্দেহ জাগে, কীভাবে শিশু লেপের মধ্যে জড়িয়ে মারা যেতে পারে। পরে প্রতিবেশীরা পূজার ওপর চাপ সৃষ্টি করলে বদলে যায় তার বয়ান। তার দাবি, শিশুকে স্তন্যপান করানোর সময় কামড়ে দেওয়ায় যন্ত্রণা এবং রাগবশত মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে দেয়। পূজা বুঝতে পারেনি যে, বাচ্চা মারা যাবে। যদিও মায়ের দেওয়া এই তথ্যকেও অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেননি। স্তন্যপান করানোর সময় কামড় দিলে মা বকাবকি বা চড়-থাপ্পড় মারতে পারে, কিন্তু বালিশ চাপা দিয়ে মারবে কেন? এরপরই প্রতিবেশীদের সন্দেহ চরম পর্যায়ে পৌঁছয়৷ তাহলে কি এই ঘটনার পেছনে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি রয়েছে? খোঁজ করার পর স্থানীয় সূত্রে উঠে আসে প্রতিবেশী দেবাশিস মণ্ডলের নাম।
আরও পড়ুন-বসিরহাটে সিলিকোসিসে মৃত যুবক, আক্রান্ত ১৫
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামী বাড়িতে থাকাকালীনই ওই ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে পূজা। পাচঁ দিন আগেই স্বামী কর্মসূত্রে আন্দামান চলে যাওয়ার পরেই জমে ওঠে পুরনো সেই প্রেম। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, প্রেমিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় ওই শিশু মা’কে কামড়ে দিলে কথার মাঝে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় রাগের বশে শিশুটিকে বালিশ চাপা দিয়ে দেয়।
ইতিমধ্যেই পিংলা থানার পুলিস মৃত শিশুটির দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এই খুনে দেবাশিস মণ্ডলের কোনও মদত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে পূজা ও প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিস।