মুর্শিদাবাদ: বেআইনি বালি খাদানে (Illegal Sand Mining) রুষ্ট হাইকোর্ট। বালি খাদানের ফলে নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে চাষের জমি। চাষের জমি রক্ষায় কড়া পদক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High-count)। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বহরমপুর ব্লকের নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়া চাষের জমি প্রশাসনকে রক্ষা করতে হবে।
মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর থানার রানিনগর ব্লক-১ ও দৌলতাবাদ থানার বহরমপুর ব্লকের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরবী নদী। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, নদী থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা হয়। ফলে বহরমপুর ব্লকের অনগ্রসর শ্রেণির বেশ কিছু চাষের জমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে।
বহরমপুর ব্লকের সীসা পাড়া, চক জামা, ট্যাকা রায়পুর, মাধপুর সহ বেশ কিছু গ্রামের অনগ্রসর শ্রেণির বসবাস। অনগ্রসর শ্রেণির জন্য উন্নয়নের জন্য ভৈরব নদীর পাড়ের বেশ কিছু জমি পাট্টা দেওয়া হয়। পাট্টা পাওয়া জমিতেই চাষআবাদ শুরু করে স্থানীয় বিপিএল তালিকাভুক্ত বাসিন্দারা।
স্থানীয় মানুষের অভিযােগ, রানিনগর ব্লকের তরফে নদী থেকে বালি তােলার বরাত দেওয়া হয় এক ঠিকাদারকে। অভিযােগ ওই ঠিকাদার বেআইনি ভাবে অপর পাড়ের বহরমপুর ব্লক থেকে বালি তুলছেন। বালি তােলার ক্ষেত্রে বড় বড় পে-লােডার ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বহু চাষের জমি তলিয়ে যাচ্ছে ভৈরব নদীতে। স্থানীয় থানায় জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না।
আরও পড়ুন : বালি খাদান দুর্নীতি নিয়ে রুষ্ট মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী
এরপরই স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তার শেখ সহ আরও কয়েকজন কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবী জানান, বহরমপুর ব্লকের বিএলআরও দৌলতাবাদ থানায় বেআইনি খাদান আইনে অভিযােগ দায়ের করেছে।
আবেদনকারীর আইনজীবী গােলাম নুরে ইমরহি জানান যে, মুর্শিদাবাদে নদী ভাঙন একটা বড় সমস্যা। সেখানে ভৈরব নদীর পাড়ে বালি খাদানের জন্য সরকার লাইসেন্স দেয়। কিন্তু কিছু বালি মাফিয়া লাইসেন্স ছাড়াই নদীর পাড় থেকে জমি কাটছে। এর ফলে নদীর ধারে পাট্টা জমিতে যাঁরা চাষাবাদের কাজ করেন, তাঁদের জমিও দখল করে নিচ্ছে বালি মাফিয়ারা। নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই নিয়ে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন মুক্তার শেখ।
আরও পড়ুন : অবৈধ বালি মজুত রাখার অপরাধে গ্রেফতার ৩
এই মামলায় আদালত রায় দেয়। রায়ে বলা হয়, অবিলম্বে বহরমপুর ব্লকের চাষের জমি যাতে রক্ষা হয় সে বিষয়ে প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ওই এলাকায় বেআইনি খাদান নিয়ে প্রশাসনকে হাইকোর্টে রিপাের্ট জমা করতে হবে। আদালতের এই হস্তক্ষেপে স্বস্তি ফিরল স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাদের আশা, আগামী দিনে রিপাের্ট পাওয়ার পর বেআইনি বালি তােলা নিয়ে আদালত কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।