আলিপুরদুয়ার : বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। এই কথাটা আমরা সকলেই শুনেছি। তবে বর্তমানে অরণ্য আজ ধ্বংসের পথে। বর্তমান সময়ে গোটা বিশ্বে যেভাবে চোরাশিকারের জন্য বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হচ্ছে তার থেকে গন্ডারদের রক্ষা করার জন্য প্রতি বছর গন্ডার দিবস পালিত হয়। বিভিন্ন দেশের সরকার, এনজিও, চিড়িয়াখানা আর সাধারণ মানুষ মিলে পালন করে দিনটি। বিশ্ব গন্ডার দিবসে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে এক শৃঙ্গ গন্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন বনকর্মীরা।
আজ থেকে প্রায় ৮০ বছর আগে ২২ সেপ্টেম্বর সরকারিভাবে জলদাপাড়ায় গন্ডার সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছিল। বেড়ে গিয়েছিল চোরাশিকারির দৌরাত্ম্য। ১৯৮৪-তে গন্ডারের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৪তে। মাত্র তিরিশ বছরে সঠিক সংরক্ষণের ফলে একলাফে সেই গন্ডারের সংখ্যা পৌঁছোয় ২৩৭-এ। ২০২২-এর ফেব্রুয়ারিতে এই সংখ্যা ৩০০ ছুঁয়ে ফেলবে, এমনটাই আশাবাদী বন দফতর।
গন্ডারের মৃত্যু ঠেকাতে এগিয়ে আসতে হবে গ্রামবাসীদের। বিভিন্ন সময়ে গ্রামে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখতে পেলে দফতরকে যেন খবর দেওয়া হয়। পাশাপাশি বনদফতরের পেট্রোলিং করা হবে সবসময়। এমনটাই জানাচ্ছেন জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের ডিএফও দীপক এম সহ অন্যান্য বন দফতরের আধিকারিকরা। তিনি আরও বলেন, জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে বেড়েছে গন্ডারের সংখ্যা।

আরও পড়ুন – মোদির জন্মদিনে টিকাকরণের পরিসংখ্যানে ব্যাপক কারচুপি, টিকা পেয়েছেন ‘মৃত’ মহিলাও
অনেকেই হয়তো জানেন না যে সারা বিশ্বে পাঁচ ধরণের গন্ডার হয়। আফ্রিকায় দেখতে পাওয়া যায় সাদা ও কালো গন্ডার, একশৃঙ্গ গন্ডার। জাভা ও সুমাত্রায় পাওয়া যায় এশিয়ান গন্ডারের প্রজাতি। চোরা শিকারীদের হাত থেকে এই সমস্ত বিপন্ন প্রজাতির গন্ডারদের বাঁচানো অত্যন্ত প্রয়োজন। পৃথিবীতে বর্তমানে যে পাঁচ প্রজাতির গন্ডার রয়েছে, তাদের সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা।
আরও পড়ুন – সরকারি আবাসন দখল মামালায় রাজ্যকে জরিমানা করল কলকাতা হাইকোর্ট
বুধবার অসমে ২,৪৭৯টি গন্ডারের খড়্গ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চোরাশিকারিরা এই গন্ডারের খড়্গগুলি পাচারের চোষ্টাতেই ছিল। তবে তার আগেই খড়্গগুলি বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা নিজে গন্ডারের খড়্গগুলি পুড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেন। তিনি বলেন, গন্ডার হত্যা ঠেকাতেই হবে। এর জন্য ভারতের আইনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনও কঠোরভাবে মানতে হবে। গন্ডারের খড়্গ বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে।
আজ চোরাশিকারিদের দাপটে সারা বিশ্বে অসংখ্য প্রাণীর মতোই বিপন্ন গন্ডার। তাই গন্ডার হত্যা আর নয়। চোরাশিকারির হাত থেকে গন্ডারদের বাঁচানোই এক ও অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত।