তিনি টলিপাড়ার আর পাঁচ জন নায়িকার মতন নন. সুন্দরী নন যাকে সাজিয়ে গুছিয়ে বাঙালি কনের ভূমিকায় অভিনয় করানো যায়. তার পাঁচটা বয়ফ্রেইন্ড নেই যাকে নিয়ে ম্যাগাজিনের পাতায় মুচমুচে গল্প তৈরী করা যায়. প্রেম ভেঙে গেলেও তিনি কাঁদেন না, বরং রীনাদির ছবি থেকে বাদ পড়ার আশংকায় হাউ হাউ করে কাঁদতে পারেন। কাঁথির মেয়ে হয়ে কলকাতায় অবলীলায় এক চলে আসতে পারেন। গল্ফ গ্রীন এ একার সংসার সাজিয়ে নিতে পারেন। আর পরিবারের লোকেরা যাতে টেনশন না করেন সেই জন্য থিয়েটার করতে কলকাতায় আসার কারণতা লুকিয়ে বলে ফেলতে পারেন যে ফ্যাশন নিয়ে পড়তে যাচ্ছেন। তিনি তুহিনা দাস. টলিপাড়ার একটু অন্যরকম মেয়ে যে নিজের পায়ে দাঁড়াতেই শুধু পছন্দ করেন না. নিজেকে নারী বা পুরুষ হিসেবে বিচার না করে মানুষ হিসেবে ভাবতেই বেশি ভালোবাসেন।
কাঁথির সেই অন্যরকম তুহিনা এবার অপরাজিতা। রোহন সেনের পরিচালনায় অপরাজিতা ছবিতে তিনিই নামভূমিকায়। অপরাজিতা বাবা ও মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে গল্প বলে ।
ছবি মুক্তির দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে ১১ই মার্চ। অতএব আলোচনাতে উঠে আসবেই নারী দিবসের কচকচি। আর নারী দিবসের প্রসঙ্গ উঠতেই আধুনিকা তুহিনার সপাটে স্ট্রেট ড্রাইভ। তুহিনের মতে, দিন যাপন পরে হবে. আগে নারী-পুরুষ সমানাধিকার তৈরি হোক. মানুষ হিসেবে মানুষকে বিচার করতে শিখি আমরা। তারপরে তো নারী দিবসের ভাষণ শোনা বা শোনানো যাবে। যে সমাজে এখনো মেয়েদের মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় পণের জন্য, যে সমাজে এখন কন্যাভ্রূণ হত্যা হয়, যে সমাজে এখন ঘাড় থেকে নামানোর জন্য সন্তানের পিত নিজের হাতে নাবালিকার বিয়ে দেন ষাটোর্দ্ধ বুড়োর সাথে, সেই সমাজে নারী দিবস পালন নিছক একটা প্রহসন।
সাবাশ, এ যুগের তুহিনারা। মাতঙ্গিনী হাজরার জেলার মেয়ের মুখেই মানায় এই সোজা সাপ্টা সত্যি কথাগুলো।