Tuesday, August 12, 2025
HomeফিচারBooker Prize: দিল্লির দাঙ্গা, লিঞ্চিং এবং বুকার পুরস্কারে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতার রাজনীতি

Booker Prize: দিল্লির দাঙ্গা, লিঞ্চিং এবং বুকার পুরস্কারে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতার রাজনীতি

Follow Us :

নীরবতা অনেক কথা বলে। ভারতীয় লেখক গীতাঞ্জলি শ্রীর বই ‘টুম্ব অফ স্যান্ড’ আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেয়েছে। হিন্দিতে লেখা উপন্যাস ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ হওয়ার পর গীতাঞ্জলি শ্রী এই পুরস্কার পেলেন। কোনও ভারতীয় ভাষায় এটাই প্রথম বুকার। এর আগে যে ভারতীয় লেখকরা এই পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁরা লিখেছিলেন ইংরেজি ভাষায়। যদিও ইংরেজিকে ভারতীয় ভাষা না বলার কোনও যুক্তি সংগত কারণ আছে বলে মনে হয় না। প্রায় আড়াইশো বছর ধরে ভারতে ইরেজি ভাষা চালু আছে। এখনও সরকারি কাজের বড় অংশ ইংরেজিতে হয়। এখনও সংসদে বহু সাংসদ ইংরেজিতে বক্তৃতা দেন। আমাদের সংবিধান প্রথম লেখা হয়েছিল ইংরেজিতে।

সে যাই হোক! মূল প্রসঙ্গে ফেরা যাক। ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন সহ যে কোনও খেলায় কোনও আন্তর্জাতিক পুরস্কার কোনও ভারতীয় যখনই পেয়েছেন, তাঁকে বা তাঁদের অভিনন্দন জানাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খুব একটা দেরি করেন না। কিন্তু বেশ কয়েক দিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও, ৩১ মে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গীতাঞ্জলিকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনও অভিনন্দন বার্তা দেখা গেল না। কোনও টুইট হয়নি। ঠিক যেমন দেখা গিয়েছিল দিল্লির দাঙ্গার সময় বা গোরক্ষকদের হাতে একের পর এক লিঞ্চিং-এর ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীকে নীরব থাকতে।

গীতাঞ্জলি শ্রীকে কেন অভিনন্দন জানালেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? সেটা কি এই জন্য যে ধর্মীয় বিভাজন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ইত্যাদি প্রসঙ্গে এই উপন্যাসে বেশ কিছু কথা এবং মন্তব্য রয়েছে? কীরকম? কয়েকটি লাইন এখানে দৃষ্টান্ত হিসেবে এখানে তুলে দেওয়া যেতে পারে।

দৃষ্টান্ত ১) ‘…But who cares about Indo-Pak friendships? This is the era of the gleeful promotion of competition and enmities. When hate is on the rise, talk of love seems mushy and clammy. Who connects great love stories like Laila-Majnun, Shireen-Farhad, Chanda-Anwar to Khyber? Khyber enters the headlines for murderers, Kalashnikovs, the Taliban, drone attacks, school bombings, and other such atrocities….’

দৃষ্টান্ত ২) ‘…And who were the criminals and who the upholders of the law in the Dadri lynching, and among those cow protectionists? To the point that when it comes to patriotism and treason, the law is awfully confused as to who what where when which books which punishments, what manipulations, what tweakings, and so on and so forth, so who’s been murdered, and who’s the witness?…’

এবার একটু মন্দির-মসজিদ প্রসঙ্গে আসা যাক। নরেন্দ্র মোদীর শাসনের অষ্টম বছর। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আর দেরি নেই। তার আগেই অবশ্য গুজরাট, হিমাচলপ্রদেশ, ছত্তশগড়, রাজস্থান সহ বেশ কিছু বিধানসভা ভোট। এরকম সময় জ্ঞানবাপী মসজিদকে ইস্যু করে ফের ধর্মের ভিত্তিতে ভোট ভাগাভাগীর নতুন এক প্রয়াস শুরু হয়েছে। ক্রমেই আমাদের নির্বাচন আরও বেশি করে ঘৃণা নির্ভর হয়েউঠছে। আমাদের অতীত কিন্তু এরকম ঘৃণা নির্ভর নয়। আমরা যদি কয়েকশো বছর পিছিয়ে যাই দেখব অন্য একটা ছবিও ছিল। কী সেই ছবি?

আরও পড়ুন- India Government: বন্ধ হল ৫১ হাজার স্কুল, মুদ্রাস্ফীতি ১৫ শতাংশ, শাসকদল মেতেছে শিবলিঙ্গে বুলডোজারে 

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এ মধ্য যুগে বাংলায় হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক নিয়ে জগদীশনারায়ণ সরকার ১৩৮১ বঙ্গাব্দে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন (পরে বই হয়েছে সেই বক্তৃতা) সেখান থেকে আমরা জানতেপারি, ‘…সুলতান হুসেন শাহের (১৪৯৩-১৫১৯) অনেক কর্মচারীই কবি ছিলেন। তাঁহাদের মধ্যে সনাতন, রূপ, কেশবখান ছত্রী রামচন্দ্র খান উল্লেখযোগ্য। দামোদর যশোধর খান তাঁহার কৃষ্ণমঙ্গল কাব্যে হুসেন শাহের উল্লেখ করিয়াছেন। …হুসেন শাহের পুত্র সুলতান নসীরুদ্দীন নসরৎ শাহ (১৫১৯-৩৩) কবিশেখর উপাধিক দেবকীনন্দন সিংহের পোষক ছিলেন। নসরতের পুত্র সুলতান আলাউদ্দীন ফিরুজ শাহ (১৫৩২-৩৩) শ্রীধর ব্রাহ্মণকে দিয়া’বিদ্যাসুন্দর’ কাব্য লিখাইয়াছিলেন। ‘
‘…সমসাময়িক প্রখ্যাত লেখক সৈয়দ সুলতান লিখিয়াছেন হিন্দু এবং মুসলমান ঘরে ঘরে ইহা (রামায়ণ, মহাভারত, গীতা) পাঠ করিত…’।

প্রবাসী, জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৮ সংখ্যায় বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ফণীন্দ্রনাথ বসুর লেখা থেকে কিছু অংশ আমাদের কাজে লাগতে পারে। সম্রাট আকবর রামায়ণের ফারসি অনুবাদের জন্য ফারসি লেখকদের নিযুক্ত করেছিলেন। আকবরের আগ্রহে অথর্ব বেদ, মহাভারত, লীলাবতী ফারসি ভাষায় প্রথম অনুবাদ হয়। ১৫৮২ খৃষ্টাব্দে মহাভারতের ফারসি অনুবাদ শেষ হয়। নাম , ‘রজ মনামা’। রামায়ণের অনুবাদ শেষ হয় ১৫৮৯-এ। ফারসি পদ্যে লেখা হয়েছিল এই রামায়ণ। হাতে লেখা ওই বইয়ে সম্রাট আকবর তাঁর চিত্রশিল্পীদের দিয়ে ছবি আঁকিয়েছিলেন। তার পর তিনি তাঁর নিজের গ্রন্থাগারে সেই বই সযত্নে রেখে দিয়েছিলেন।

এর পরে অবশ্য রামায়ণের আরও বেশ কয়েকটি ফারসি অনুবাদ করেছিলেন বিভিন্ন ফারসি লেখক। ফণীন্দ্রনাথ বসু চার জন হিন্দু লেখকের নামও করেছেন যাঁরা ফারসিতে রামায়ণ অনুবাদ করেছিলেন বিভিন্ন সময়ে।তাঁদের মধ্যে অন্যতম শ্রীচন্দ্রভাল বেদিল, লালা অমর সিংহ। চন্নদ্রভালবেদিল অনুবাদ করেছিলেন ঔরংজেবের সময়ে। ফারসিতে গীতা অনুবাদ করেছিলেন লালা অমানত রায়। সেই বই বেশ জনপ্রিয় হওয়ার পর (মুসলিমদের মধ্যে) লালা অমানত রায় ইংরেজি ১৭৫৪ সালে রামায়ণ অনুবাদ করেছিলেন ফারসি ভাষায়। সেই হাতে লেখা বই ১৮৭২-এ লখনউয়ের নওলকিশোর প্রেস থেকে ছাপা হয়।

ফণীন্দ্রনাথ বসু বলছেন, আকবরেরও অনেক আগে খালিফ আল মামুনের রাজত্বকালে হিন্দু চিকিৎসা শাস্ত্র এবং বীজগণীত মুসলিম লেখকদের দিয়ে আরবি ভাষায় অনুবাদ করানো হয়েছিল। এই কথাগুলো আজ এই কারণে জরুরি যে আমরা যেন ভুলে না যাই, গুজরাটের দাঙ্গা, নাথুরাম গডসে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসকরা, এটাই আমাদের ইতিহাস নয়। আমাদের একটা ঐক্যের ইতিহাসও আছে। সহনশীলতার, সহিষ্ণুতার ইতিহাসও আছে। আমাদের আজ বেছে নিতে হবে কোন ইতিহাসকে আমরা লালন করব!

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Amit Shah | রাজ্য বিজেপি কর্মীদের কড়া নির্দেশ অমিত শাহর, কী কী নির্দেশ? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
Abhishek Manu Singh | SIR-এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব যাচাই করা যায় না, দাবি অভিষেক মনু সিংভির
00:00
Video thumbnail
Supreme Court | DA মামলার শুনানি মুলতুবি সুপ্রিম কোর্টে, ফের শুনানি কবে? দেখুন বড় আপডেট
00:00
Video thumbnail
Rahul Gandhi | আমরা থামব না...পিকচার আভি বাকি হ্যায়
00:00
Video thumbnail
Election Commission | মুখ্যসচিবকে তলব জাতীয় নির্বাচন কমিশনের, দেখুন বিরাট খবর
02:08:46
Video thumbnail
Supreme Court | সুপ্রিম কোর্টে বিহার SIR মামলা, কী হতে চলেছে? দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
SIR | Congress | কংগ্রেসের SIR প্রতিবাদ, রাজভবনের সামনে তু/লকা/লা/ম কাণ্ড, দেখুন Live
02:04:25
Video thumbnail
Supreme Court | DA মামলার শুনানি শুরু সুপ্রিম কোর্টে, কী আছে কর্মচারীদের ভাগ্যে? দেখুন সরাসরি
02:23:13
Video thumbnail
West Bengal Police | পুলিশকে আ/ক্র/মণ, প্রতিবাদে সাংবাদিক বৈঠক পুলিশ পরিবারের
09:11
Video thumbnail
TMC | বাংলা ভাষার অপমান, সংসদ চত্বরে বি/ক্ষো/ভ তৃণমূলের, দেখুন সরাসরি
03:38