লন্ডন: জল্পনা উড়িয়ে শেষমেশ আস্থা অর্জন করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কোভিডবিধি উড়িয়ে পার্টি করার খেসারত হিসেবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন দলেরই সাংসদরা৷ তার জেরে টলমল হয়েছিল বরিসের কুর্সি৷ কিন্তু পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করলেও কনজারভেটিভ দলের ১৪৮ জন অনাস্থার পক্ষেই ভোটদান করেছেন।
৩৫৮টি ভোটের মধ্যে ১৪৮টি ভোট তাঁর বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। যা বরিসের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতে। কেউ কেউ এও মনে করছেন যে, দলের অভ্যন্তরে তাঁর নেতৃত্ব শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল। যদিও আস্থাভোটে জিতে আরও একটি বছরের জন্য দলে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার প্রভাব জিইয়ে রাখলেন জনসন। সেদেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের অধ্যাপক প্যাট্রিক ডায়মন্ডের মতে, বরিস আস্থাভোটে বেঁচে গিয়েছেন ঠিকই, তবে খুবই গভীরভাবে জখম হয়েছেন।
আরও পড়ুন: Weather Updates: উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গে কবে?
প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে হলে বরিসকে আস্থা ভোটে জিততেই হতো৷ হেরে গেলে পদ থেকে সরতে বাধ্য হতেন তিনি৷ এরপর নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নিত কনজারভেটিভ পার্টি৷ তবে সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন না বরিস জনসন৷
২০১৯ সালে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বরিস৷ তার পরের বছর বিশ্বজুড়ে শুরু হয় করোনার দাপট৷ সংক্রমণ রুখতে ব্রিটেনে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার৷ কিন্তু সেই বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না-করে বরিস নিজেই মেতে ওঠেন পুলপার্টিতে৷ তাতে যোগ দিতে দেখা যায় ব্রিটিশ সরকারের একাধিক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিকে৷ করোনা মোকাবিলায় তখন ব্রিটেনে কঠোর লকডাউন চলছে৷ ঘরবন্দি দেশের নাগরিকরা৷ এরকম এক পরিস্থিতিতে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও অফিসারদের নিয়ে পার্টি করে দেশবাসীর তোপের মুখে পড়েন বরিস৷ দলের সাংসদরাও তাঁর সমালোচনায় মুখর হন৷ এর প্রভাবে গত মে মাসের স্থানীয় নির্বাচনে খারাপ ফল করে কনজারভেটিভ পার্টি৷
এরপরই ৫৪ জন সাংসদ বরিসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেন৷ যার ফলে এই আস্থা ভোটের পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ জনসনকে পদ থেকে সরাতে কনজারভেটিভ পার্টির অধিকাংশ সাংসদকে অথবা পার্লামেন্টের ১৮০ জনকে তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দিতে হতো৷ সেই অর্থে কানায় কানায় এসে জিতে গিয়েছেন তিনি। এবারের মতো অন্তত এক বছর আর অনাস্থার মুখোমুখি হতে হবে না জনসনকে।