নিউ ইয়র্ক: বিপদ একেবারে শিয়রে। বাড়বে খরা, তাপপ্রবাহ৷ কার্যত, সঙ্কটের মুখে গোটা পৃথিবীই৷ এই আশঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত অন্তর্মহাদেশীয় প্যানেল (আইপিসিসি)-র রিপোর্টে। আইপিসিসি-র গ্রুপ-১ রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দশকে ভারতীয় উপমহাদেশে খরা, তাপপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত এবং সাইক্লোনের প্রকোপ বাড়বে। যা আগে ছিল স্তিমিত, ধীর গতির৷ এখন সেই পরিবর্তন দ্রুত গতিতে ঘটছে। তাই, এখনই সংযত না হলে ধ্বংসের আর বেশি বাকি নেই।
The difference between 1.5°C & 3°C global warming means vastly different scenarios for the future.
Our survival on this planet hinges on these few degrees.
Addressing the climate crisis & limiting temperature rise is possible, if we #ActNow. https://t.co/X0Shwfcd3n via @UNFCCC pic.twitter.com/AQbfsRGrMv
— United Nations (@UN) August 9, 2021
আরও পড়ুন- চতুর্থ স্তম্ভ: ইংরেজ ভারত ছাড়
১৯৫টি সদস্য দেশকে নিয়ে বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনের ষষ্ঠ রিপোর্ট ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ২০২১ প্রকাশ করেছে৷ সোমবার সেই রিপোর্টের দ্য ফিজিক্যাল সায়েন্স বেসিস’ শীর্ষক সিক্সথ অ্যাসেসমেন্টের প্রথম অংশে বলা হয়েছে, একুশ শতাব্দী জুড়েই তাপপ্রবাহ এবং হিউমিড হিট স্ট্রেসের প্রকোপ বেশি হবে। অর্থাৎ, ২০০৮ সালে বিজ্ঞানীরাদের যে ধারনা ছিল, তার প্রায় এক দশক আগেই বিশ্ব উষ্ণায়ন বিপজ্জনক হতে পারে। সর্বোপরি আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে গোটা বিশ্বের সার্বিক ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন- যন্তর-মন্তরে মুসলিম বিরোধী স্লোগানের ঘটনায় দিল্লি পুলিশের অভিযান
কারণ, যে গতিতে জলবায়ু গরম হচ্ছে তার থেকে অনেক ধীরে শীতল হচ্ছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ১৮৫০-১৯০০ সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা (সারফেস মিন টেম্পারেচার) যতটা বেড়েছে তা বর্তমান সময়ে কয়েকগুণ বেশি। এমনকী, ১৯৫০ সালের পর থেকে তাপপ্রবাহ বাড়তে থাকলেও সেভাবে শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়নি। এ কারণে, আগামী কয়েক দশকে ভারতীয় উপমহাদেশে খরা, তাপপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত এবং সাইক্লোনের প্রকোপ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷
It doesn't tell us what to do. It is up to us to be brave and take decisions based on the scientific evidence provided in these reports. We can still avoid the worst consequences, but not if we continue like today, and not without treating the crisis like a crisis. 2/2
— Greta Thunberg (@GretaThunberg) August 9, 2021
আরও পড়ুন- CPM BREAKING: সাদা চুলে সিলিং, পঁচাত্তর হলেই ছাড়তে হবে কেন্দ্রীয় কমিটি, পলিটব্যুরো
আজকের দিনে জলবায়ু পরিবর্তন কতটা উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছেছে, তা-ও রিপোর্টে বিশদে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, শুধু ভারত নয়, গোটা পৃথিবী বিপদের মুখে৷ রিপোর্ট পেশকারী অ্যান্টনিও গুতালেজ বলছেন, বিপদের মুখে গোটা পৃথিবীই। বিশ্ব উষ্ণায়নের চরম রূপে এক দশক আগেই পৃথিবীর তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। ২০৩০-এর মধ্যে গড় তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি বাড়বেই।
আরও পড়ুন- পেগাসাস: সংসদে মোদি-অমিত শাহের থেকেই জবাব চান বিরোধীরা
এই বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধির কারণ কী? রিপোর্টে মনুষ্যঘটিত কারণগুলির উপরই জোর দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানীরাদের দাবি, শহর এলাকাগুলি উষ্ণায়নের মূল কেন্দ্র৷ লাগাতার তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে উষ্ণ বাতাস অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে, এইফলে শীতল হতে দীর্ঘ সময় লাগে। এরফলে, নদী, হ্রদ, জলাধা, গাছগাছালিতে ঘেরা সবুজ এলাকাগুলিতেও উষ্ণতা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে তীব্র বন্যা, খরা ঘন ঘন দেখা দেবে৷ তাই বিশ্ব উষ্ণায়নকে নিয়ন্ত্রণ করতে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট নির্মাণের সরঞ্জামের দিকে নজর দিতে হবে। বেশি করে সবুজ জঙ্গল, উদ্যান নির্মাণ করতে হবে৷ সব দেশের সরকারকে শিল্পজনিত উষ্ণতাবৃদ্ধির কারণগুলিও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাধ্যতামূলক ভাবে জীবাশ্ম জ্বালানি, গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে হবেই।