ইরানে সরকার বনাম সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে মতবিরোধ ক্রমেই বাড়ছে৷ সরকার জনতার কাছে মাথা নোয়াতে নারাজ৷ হিজাব পরা এবং প্রকাশ্যস্থানে ঢিলেঢালা পোশাক পরার বিধি অমান্য করার দায়ে সম্প্রতি ২২ বছরের ইরানি তরুণী মাসহা আমিনির পুলিশি হেজাজতে মৃত্যুর পরে নাগরিক বিক্ষোভে উত্তাল ইরান৷ বিক্ষোভ প্রশমিত করার পথ অবলম্বন করার পরিবর্তে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি আগামী দিনে বিক্ষোভ দমন করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে সাফ জানিয়েছেন৷ ফলে অশান্তি থামার কোনও লক্ষণই নেই৷ আশা নেই মহিলাদের উপর সরকার যে পোশাকবিধি আরোপ করেছে, সেই পোশাকবিধি প্রত্যাহারের৷
গত এক সপ্তাহব্যাপী ইরানে যে অশান্তি চলছে তাতে ইতিমধ্যে অন্ততপক্ষে ৫০জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ ইরানের ৩১টি প্রদেশে রবিবারও চলেছে তুমুল নাগরিক বিক্ষোভ৷ যদিও প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নাগরিক বিক্ষোভকে আমল না দিয়ে বলেছেন, এই বিক্ষোভের জেরে ইরানের নিরাপত্তা এবং শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে৷ এটা বরদাস্ত করা হবে না৷
সরকারি সংবাদ মাধ্যম প্রেসিডেন্টে ইব্রাহিম রাইসির বক্তব্য ফলাও করে সম্প্রচার করেছে৷ এর আগে প্রেসিডেন্ট রাইসি ইরানের প্রতিবাদের নামে নৈরাজ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে আঙুল তুলেছেন প্রতিবাদকারীদের দিকে৷ প্রেসিডেন্ট রাইসির অভিযোগ, দাঙ্গা ছড়ানো হচ্ছে প্রতিবাদের নামে৷ ইরানস্থিত রাষ্ট্রপুঞ্জের কার্যালয়ের সামনে এদিন চলেছে মাসহা আমিনির ছবিসম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্বৈরাচারী শাসকের পতনের দাবিতে নাগরিক আন্দোলন৷
ইরানজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও বেহাল৷ সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা শিথিল হওয়ার কোনও আশা এখনও নেই৷ এই পরিস্থিতিতে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে আর্জি জানিয়েছে, স্বাধীনভাবে গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখুক রাষ্ট্রপুঞ্জ৷
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, রক্তপাতের মধ্যে দিয়ে নাগরিক বিক্ষোভ দমন করতে চাইছে নিরাপত্তা বাহিনী৷ গত ২১ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে একদিনে ১৯জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে৷ মৃতদের মধ্যে তিনজন শিশু৷