লাহোর: অভিযোগ উঠেছিল, পবিত্র কোরান (Holy Quran) অবমাননার। তার জন্য মাঝবয়সি এক ব্যক্তিকে পাথর ছুড়ে খুনই (Khanewal Lynching) করে ফেলল একদল ধর্মীয় উন্মাদ! মধ্যযুগীয় এই বর্বরতার (Mob Lynchings) ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার, পাকিস্তানের খানেওয়াল জেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামে। বর্বরোচিত এই ঘটনা সামনে আসার পরেই নিন্দায় সরব নানামহল।
ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও (Imran Khan)। পিটিয়ে খুনের নিন্দা করে ইমরান জানান, কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবে, এটা তাঁর সরকার বরদাস্ত করবে না। ‘মব লিঞ্চিং’-এর মতো ঘটনা আইনি পথে কড়া হাতে মোকাবিলা করা হবে। পাক পঞ্জাবের আইজি-র কাছে তিনি রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়েছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হল, তা জানতে চান ইমরান। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই অঞ্চলের পুলিসের ভূমিকা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। পুলিস কেন পাথর ছুড়ে (Lynching horror-man) হত্যার ঘটনা ঠেকাতে ব্যর্থ হল, সেই কৈফিয়ত্ও চেয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠা ওই পুলিসকর্মীদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হল, তা-ও জানতে চান ইমরান।
We have zero tolerance for anyone taking the law into their own hands & mob lynchings will be dealt with full severity of the law. Have asked Punjab IG for report on action taken against perpetrators of the lynching in MIan Channu & against the police who failed in their duty.
— Imran Khan (@ImranKhanPTI) February 13, 2022
দু’মাসের ব্যবধানে একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল ইমরান খানের দেশে। ধর্ম অবমাননা করার অভিযোগে গত বছরের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কার এক ইঞ্জিনিয়ারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। শিয়ালকোটের যে কারখানায় এই ঘটনাটি ঘটেছিল, তিনি ছিলেন সেখানকার ম্যানেজার। পাকিস্তানের শিয়ালকোটের ওই ঘটনা আন্তর্জাতিক স্তরে অস্বস্তি বাড়িয়েছিল ইমরান খানের।
শিয়ালকোটের ওই ঘটনার রেশ কাটার আগেই শনিবারের এই ঘটনা (Mob Lynchings) সামনে আসে। ঘটনাটি ঘটে জঙ্গল ডেরা গ্রামে। মাগরিবের নমাজ আদায়ে কয়েক’শো মুসল্লি জড়ো হয়েছিলেন। অভিযোগ, সেখানেই এক প্রৌঢ় পবিত্র কোরানের কয়েকটি পাতা ছিঁড়ে নাকি আগুন জ্বালিয়ে দেন। ওই অভিযুক্তের নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেও কেউ-ই তাঁর কথা শুনতে চাননি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দড়ি দিয়ে বেঁধে একটি বড় গাছ থেকে ওই প্রৌঢ়কে ঝোলানো হয়। এর পর, মারমুখী লোকজন পাথর ছুড়তে থাকেন। মৃত্যু নিশ্চিত না-হাওয়া পর্যন্ত পাথর ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: Jagdeep Dhankhar: মমতাকে ট্যাগ করে বিধানসভার অধিবেশন সমাপ্তি নিয়ে স্ট্যালিনকে জবাব রাজ্যপালের
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, লোকটিকে পাথর ছুড়ে হত্যার আগেই খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিল। ওই ব্যক্তিকে তাঁর হেফাজতেও নিয়েছিলেন। কিন্তু, উত্তেজিত জনতা পুলিসের হেফাজত থেকে ওই প্রৌঢ়কে ছিনিয়ে নেন। তার পর পুলিসের চোখের সামনেই ঘটে যায় গোটা ঘটনা। কয়েক’শো লোকের হাত থেকে ওই ব্যক্তিকে রক্ষা করার মতো ফোর্স পুলিসের ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজদর আইজিপি রাও সদর আলি খানের কাছ থেকে ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছেন।