বেলারুশ থেকে শরণার্থীদের পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তাই পোল্যান্ডের সীমান্ত বরাবর এক সংরক্ষিত জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পাঁচিল নির্মাণ শুরু করেছে পোলিশ কন্ট্রাক্টররা। এই পাঁচিল বানাতে খরচ হবে ৩৫৩ মিলিয়ন ইউরো। পোলিশ বর্ডার গার্ডের তরফে জানানো হয়েছে, ৫.৫ মিটার উঁচু এই পাঁচিলটির দৈর্ঘ্য ১৮৬ কিমি। যা পোল্যান্ড এবং বেলারুশের সীমান্ত বরাবর তৈরি করা হচ্ছে। পাঁচিলে থার্মাল ক্যামেরা ও মোশান ডিটেক্টর বসানো হবে।
শরণার্থী সমস্যার কারণে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে পোল্যান্ড। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা শরণার্থীদের বেলারুশ হয়ে ইউরোপের দেশগুলিতে যেতে সাহায্য করছে বেলারুশ, এমন অভিযোগ জানিয়েছে পোল্যান্ড। শরণার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগই আসছেন আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাকি কুর্দিস্তান থেকে। পোল্যান্ডে প্রবেশের সময় কিছু শরণার্থীকে বাধা দেওয়া হলে তারা বেলারুশ ও পোল্যান্ডের মাঝে অবস্থিত একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেন। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে সেখানে প্রায় ১৯ জন শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছিল।
শরণার্থীরা জানান, সম্প্রতি প্রায় ৫০ জন শরণার্থীর একটি দলকে সীমান্ত পেরোতে সাহায্য করে বেলারুশ সৈন্যরা। কাঁটাতার কেটে শরণার্থীদের দলটিকে পোলান্ডে পাঠিয়ে দেয় তারা। এর পরই সীমান্ত পাঁচিল নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়। পোলিশ বর্ডার গার্ডের টুইটারে জানানো হয়েছে, এই পাঁচিল সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নির্মাণ হয়ে থাকবে।
পোল্যান্ডের সীমানায় পাঁচিল দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলি। তারা জানিয়েছে, এভাবে শরণার্থীদের আটকানো যাবে না। এর ফল হতে পারে ভয়াবহ। এমনকি এই পাঁচিল নির্মাণের ফলে পরিবেশ নষ্ট হবে। কারণ এই জঙ্গল হল সমগ্র ইউরোপের বাইসনের একটি বৃহত্তর আবাসস্থল।
আরও পড়ুন :পোল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে উজ্জ্বল ভারতের প্রাচীন গ্রন্থ উপনিষদ
পোল্যান্ডের গ্রূপা গ্রানসিকে নামে একটি সেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান অ্যানা আলবথা সীমান্তে পাঁচিল দেওয়া প্রসঙ্গে জানান, পাঁচিল দেওয়ার ফলে দুই দেশকে আলাদা করা হচ্ছে। কিন্তু সুরক্ষিত করা যাবে না। এর ফলে পরিবেশের উপর একটা খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। এই দেওয়াল নির্মাণে বেসরকারি সংস্থাগুলি যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে, সেটি যদি শরণার্থীদের জন্য খরচ করা হত, তাহলে অনেক বেশি মঙ্গলকর হত বলে জানান অ্যানা।