নিউ ইয়র্ক: মাঝআকাশে বিমানের শৌচাগারে নিজেকে বন্দি করে ফেললেন এক মার্কিন মহিলা (US woman self-isolates)। বন্দি, মানে, আইসোলেশন। এক ঘণ্টা নয়, দু’ঘণ্টা নয়– টানা তিন ঘণ্টা, গোটা যাত্রাপথে একটি বারও চেষ্টা করেননি বাইরে আসার (US woman isolates in plane toilet)। বিমান ল্যান্ডিং করা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে নিজেকে শৌচালয়ে আইসোলেশনে রেখেছিলেন (self-isolates at plane)। এ ছাড়া আর কোনও বিকল্প পথ মহিলার সামনে ছিল না। জানা গিয়েছে, মাঝআকাশে হাঠাৎ করে কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ার কারণেই এই বিপত্তি (self-isolates in plane toilet for covid 19)।
সূত্রের খবর, শিকাগো থেকে বিমানে আইসল্যান্ড রওনা দিয়েছিলেন ওই মার্কিন মহিলা। গন্তব্যের মাঝপথে কোভিডের উপসর্গ দেখে, নিজেই উদ্যোগী হয়ে টেস্টের জন্য নমু্না দেন। রিপোর্ট পজিটিভ দেখে, শৌচাগার থেকে আর বাইরে বেরোতে চাননি। সেখানেই নিজেকে কোয়ারান্টাইন করে ফেলেন।
জানা গিয়েছে, কোভিড আক্রান্ত মার্কিন মহিলার নাম মরিসা ফোটিয়ো। মিশিগানের এক স্কুলের শিক্ষিকা। ১৯ ডিসেম্বর শিকাগো থেকে আইসল্যান্ডের বিমানে উঠেছিলেন। সঙ্গে পরিবারের কয়েক জন সদস্যও ছিলেন। মহিলার দাবি, বিমানে ওঠার আগে তিনি দু-বার পিসিআর টেস্ট করান। পাঁচটি র্যাপিড টেস্টও করিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছিল। তার পরেই বিমানে ওঠেন। কিন্তু উড়ানের দেড় ঘণ্টার মধ্যে গলায় ব্যথা অনুভব করেন। কোভিডের অন্যান্য উপসর্গও স্পষ্ট হতে থাকে। মনের সন্দেহ দূর করতে কোভিড টেস্ট করালে, রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
আরও পড়ুন : Australia Omicron: ওমিক্রনে মৃত্যু এ বার অস্ট্রেলিয়াতেও, সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিশ্ব!
ফোটিয়োর কথা অনুযায়ী, তাঁর ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজই নেওয়া ছিল। এমনকি বুস্টার ডোজও নিয়েছেন। তার পরেও ভাইরাসের এই সংক্রমণ তিনি এড়াতে পারেননি। ওই মার্কিনির কথায়, ‘বিমান তখন আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর। রিপোর্ট পজিটিভ দেখে ভয়ে কেঁদে ফেলি।’ জানালেন, নিজের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর পরিবারকে নিয়েই বেশি দুশ্চিন্তা করছিলেন। বিমানের সহযাত্রীদেরও মধ্যেও যদি করোনা ছড়িয়ে পড়ে, তা নিয়েও উত্কণ্ঠায় ছিলেন।
মহিলা জানালেন, রিপোর্ট পজিটিভ দেখে বিমানেসেবিকা তাঁর জন্য ফাঁকা জায়গায় বসার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, ফ্লাইটে ফাঁকা জায়গা ছিল না। তখন তিনি নিজেই বিমানসেবিকার কাছে প্রস্তাব দেন, বাকি পথ বিমানের শৌচাগারেই তিনি কোয়ারান্টাইনে থাকবেন। উনিও আর আপত্তি করেননি।
আরও পড়ুন : Corona China: চীনে ফের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ, গোষ্ঠী সংক্রমণের শঙ্কায় জিয়ানে টানা লকডাউন
আইসল্যান্ডে বিমান পৌঁছলে, ফোটিওর পরিবারের সকলের পুনরায় কোভিড টেস্ট করানো হয়। মহিলার ভাই ও বাবার মধ্যে কোনও উপসর্গ ছিল না। টেস্টেও কিছু ধরা পড়েনি। তাই সংযোগকারী উড়ানে তাঁরা সুইৎজারল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু ফোটিওকে থাকতে হয়েছে বিমানবন্দরের কাছেই এক হোটেলে। বিমান থেকে নামার পর আরসি-পিসিআর টেস্ট পজিটিভ এলে, তাঁকে ওই হোটেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ১০ দিন সেখানেই মহিলা আইসোলেশনে থাকবেন। দিনে তিন বার করে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন ডাক্তাররা।