ওয়েব ডেস্ক: ১৯৭৭ সালে পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করেছিল নাসা-র (NASA) ভয়েজার-১ (Voyager-1)। মানুষের তৈরি সবচেয়ে দূরে যাওয়া এই মহাকাশযান ২০১২ সালেই সূর্যের প্রভাববলয়ের বাইরে চলে গিয়েছিল। তার সঙ্গী ভয়েজার-২ (Voyager-2) একই পথ ধরে সৌরজগত ছাড়ে ২০১৮ সালে। এত দূরত্ব সত্ত্বেও দুই মহাকাশযানের সঙ্গেই যোগাযোগের সুতো টিকে ছিল। এবার বিজ্ঞানীরা জানালেন, ভয়েজার-১ পৌঁছেছে এমন এক রহস্যময় জায়গায়, যেখানে তাপমাত্রা ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। অথচ অবাক করার বিষয় হল, এত তাপমাত্রা সত্ত্বেও সেখানে কোনও আগুনের অস্তিত্ব নেই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আগুন ছাড়া এত তাপমাত্রা কীভাবে তৈরি হয়? আসলে সৌরজগতের প্রান্তে রয়েছে হেলিওপজ, যেখানে এসে শক্তিহীন হয়ে পড়ে সৌরবায়ু (Solar Wind)। এই সীমা পার হলেই শুরু হয় আন্তঃনাক্ষত্রিক বা ইন্টারস্টেলার জগৎ। ভয়েজার-১ এখন অবস্থান করছে এক বিশেষ অঞ্চলে, যাকে বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘ফায়ারওয়াল’ (Fire Wall)।
আরও পড়ুন: অন্ধকারে তলিয়ে যাবে পূর্ণিমার চাঁদ! বিরল ঘটনা সেপ্টেম্বরেই
নামের মধ্যে ‘ফায়ার’ থাকলেও, এখানে কোনও দহন থেকে কিন্তু তাপ উৎপন্ন হচ্ছে না, বরং অসংখ্য অতিশক্তিশালী কণার উপস্থিতি থেকেই সেখানের তাপমাত্রা চরমে পৌঁছে যায়। এসব কণা ছড়িয়ে আছে বিরাট বিস্তৃত অঞ্চলে, যা তাপমাত্রা বাড়ালেও ঘনত্ব এত কম যে তাপ সঞ্চালনের ক্ষমতা প্রায় নেই বললেই চলে। তাই সেখানে ভয়েজার-১ এর কোনও ক্ষতিও হয়নি।
উল্লেখ্য, এদিকে ভয়েজার-১ ও ভয়েজার-২—দুই মহাকাশযানের সঙ্গেই রয়েছে একটি বিশেষ সোনার রেকর্ড। ১২ ইঞ্চি ব্যাসের ওই ডিস্কে সংরক্ষিত রয়েছে সৌরজগতের মানচিত্র, পৃথিবীর বিভিন্ন শব্দ ও সংগীত, এমনকি রয়েছে এক খণ্ড ইউরেনিয়াম-২৪০ যার তেজস্ক্রিয় ক্ষয় দেখে উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারণ করা যাবে।
তবে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, খুব শিগগিরই দুই মহাকাশযানের শক্তি উৎস বন্ধ হয়ে যাবে, এবং সেগুলি আর কোনও সংকেত পাঠাতে পারবে না। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩৬ সালের মধ্যে ভয়েজার-১ এত দূরে পৌঁছে যাবে, যেখান থেকে আর কোনওভাবেই মানুষের পক্ষে সেটির নাগাল পাওয়া সম্ভব হবে না।
দেখুন আরও খবর: