কলকাতা: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) জামিন মামলার শুনানি (Hearing of Bail Petition) শেষ হল মঙ্গলবার। রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta HighCourt) বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ (Justice Joymalya Bagchi and Justice Ajay Kumar Gupta’s Division Bench)। বুধবার বা বৃহস্পতিবার রায়দান (Verdict) হতে পারে বলে আদালত সূত্রের খবর।
এদিন অনুব্রতর আইনজীবী কপিল সিব্বল (Lawyer Kapil Sibal) জানান, ৯৫ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৩৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে এখন পর্যন্ত। বাকিদের সাক্ষ্য কবে নেওয়া হবে, কে জানে। তিনি জানান, আসানসোল আদালতের বিচারককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় অনুব্রত যুক্ত নন। ওই ঘটনার তদন্ত কোন পর্যায়ে আছে, তাও জানা নেই। সিব্বল বলেন, আচমকাই অনুব্রতকে মূল চক্রান্তকারী বলে দেগে দেওয়া হয়েছে। তিনি ১৪৫ দিন ধরে জেলে রয়েছেন।
বিচারপতি বাগচী বলেন, আপনার মক্কেলের অনেক ভালো বন্ধু আছে, যারা বিচারককে তাঁর মুক্তির জন্য হুমকি দেন। সিবিআই বলছে, অনুব্রত মূল সাহায্যকারী। সিবিআইয়ের আইনজীবী ডি পি সিংহ বলেন, অনুব্রতর বিপুল সম্পত্তি রয়েছে। তাঁর রাজনৈতিক প্রভাবকে ব্যবহার করে এনামুল হক বাংলাদেশে গরু পাচার করত। সায়গল হোসেনের মাধ্যমে অনুব্রতর কাছে নগদ টাকা পাঠাত এনামুল হক। এর সঙ্গে বিএসএফের একটা অংশের যোগ ছিল। সব মিলিয়ে একটা বড় চক্র কাজ করত। সিবিআই আইনজীবীর আরও অভিযোগ, জেল থেকেই অনুব্রত এনামুল-সহ একাধিক ঘনিষ্ঠকে ফোন করেছেন। বিচারপতি জানতে চান. সিবিআই ফোনের বিস্তারিত তথ্য খুঁজে বার করার চেষ্টা করেছে কি না। সিবিআই জানায়, ফেস টাইমের মাধ্যমে কথা হয়েছে। তাই কল রেকর্ড পাওয়া যায়নি। সিবিআই আইনজীবী আরও জানান, এরই মধ্যে অন্য একটি মামলায় এক অভিযুক্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই অফিসারদের নামে এফআইআর করা হয়েছে। এভাবে মূল মামলার তদন্তকে ঘুরিয়ে দেওযার চেষ্টা হচ্ছে।
বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবীকে বলেন, খুনের চেষ্টার অভিযোগে এক বছর পরে কেন অনুব্রত মণ্ডলকে কেন গ্রেফতার করার প্রয়োজন হল। আপনাদের খুব দক্ষ পুলিশ অফিসার। অভিযোগ পেলেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গেলেন। অনুসন্ধান করলেন। আর অনুব্রতকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করলেন। পুলিশকে ব্যবহার করে একজনকে এভাবে গ্রেফতার করা যায় না। পুলিশের এই কাজ অত্যন্ত অস্বচ্ছ। খুবই লজ্জাজনক ঘটনা।
দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত জানায়, শুনানি শেষ। তবে রায়দান স্থগিত থাকছে। বুধ অথবা বৃহস্পতিবার রায়দান হবে।