কলকাতা: আমূল সংস্কার না হলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিলুপ্তি অবশ্যম্ভাবী৷ বৃহস্পতিবার টুইট করে দল সম্বন্ধে আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়৷ বিজেপি তথাগতর টুইটে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে না চাইলেও প্রবীণ নেতার মন্তব্য লুফে নেন পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ বলেন, ‘এই সত্যি কথাটা তথাগতবাবু অনেকদিন পর জানালেন৷’
আরও পড়ুন: পরিসর বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বিএসএফের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য, অপর্ণা সেনকে আইনি নোটিস
নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে তৃণমূলের কাছে পর্যুদস্ত হওয়ার পর থেকেই দলের নেতাদের একাংশ তথাগত রায়ের নিশানায়৷ একের পর এক টুইট করে বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের দিকে বিস্ফোরক অভিযোগ করে চলেছেন মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল৷ এমন এমন সব অভিযোগ করেন যে তাতে বিজেপির বিড়াম্বনা বেড়ে যায়৷ যেমন, একটি টুইটে তিনি লিখেছিলেন, ‘অর্থ এবং নারীর চক্র থেকে দলকে টেনে বার করা অত্যাবশ্যক৷’ সম্প্রতি এক টলিউড অভিনেত্রীর দল ছাড়ার পর সরাসরি কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নাম নিয়ে বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লিখেছিলেন, ‘শ্রাবন্তীকে দেখে মুখ থেকে প্রায় লালা ঝরছিল কৈলাসের৷ এই সব নেতার হাতে বিজেপির প্রার্থী চয়নের ভার ছিল৷’
ঠোঁটকাটা তথাগতর সোজাসাপ্টা অভিযোগগুলি অনেক বিজেপি নেতা-কর্মীর হজম করতে অসুবিধা হচ্ছিল৷ তাঁদের বক্তব্য, বিজেপির মত রেজিমেন্টেড পার্টিতে একজন কর্মীর এমন আচরণ শৃঙ্খলাভঙ্গের সমান৷ তিনি কেন কথাগুলি দলের ভেতরে বলছেন না? কথাগুলি কানে পৌঁছতে সেই সব কর্মীদের উদ্দেশে আজ টুইট করেন তথাগত৷ লেখেন, বিজেপির শুভানুধ্যায়ীরা বলছেন, টাকা ও নারী নিয়ে আমার অভিযোগ প্রকাশ্যে নয়, দলের ভিতরে করা উচিত৷ আমি সবিনয়ে জানাই, সে সময় পেরিয়ে গেছে৷ বিজেপি আমাকে যা ইচ্ছে তাই করতে পারে৷ কিন্তু নিজেদের চালচলন যদি আমূল সংস্কার না করে তা হলে পশ্চিমবঙ্গে দলের বিলুপ্তি অবশ্যম্ভাবী৷
আরও পড়ুন: বিজেপি রাজ্য সহসভাপতির জেলা সফরের দিনেই ভাঙন, দলবদলুদের হাতে পতাকা তুলে দিলেন অনুব্রত
তথাগতর টুইট বিজেপিকে আবার অস্বস্তিতে ফেললেও তৃণমূল অবশ্য প্রাক্তন রাজ্যপালের মন্তব্যে ভুল কিছু দেখছে না৷ রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘তথাগত রায় নিজের বক্তব্য পরিবর্তন করুক না করুক যে দিন থেকে পশ্চিমবঙ্গের হাওয়া না বুঝে মানুষের সেন্টিমেন্ট না বুঝে সাম্প্রদায়িকভাবে ভাগ করার চেষ্টা করেছে সেদিনই বিজেপি অবলুপ্তির পথে চলে গিয়েছে৷ যে ভাষায় বিরোধী দলনেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্বন্ধে কথা বলেছেন তাঁদের অন্যান্য নেতারা ব্যক্তিগত অপমান করেছেন সেই দিন মানুষ বুঝে গিয়েছে বিজেপি বাংলার দল নয়৷ বিজেপি অবলুপ্তির পথে চলে গিয়েছে৷ এই সত্যি কথাটা অনেকদিন পর তথাগত বাবু জানালেন৷’