কলকাতা: সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপি টানা আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যেতে চায়। গত কয়েক দিন ধরে বিজেপি সন্দেশখালি ইস্যুতে রাস্তাতেই রয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত সর্বত্র যে মুডে বিজেপির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী দলে দলে পুলিশ সুপারের অফিস কিংবা থানার সামনে জঙ্গি বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাতে উল্লসিত দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির পরিষদীয় দল ভালো পারফরম্যান্স করছে বলে মনে করছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিশেষ করে এদিন সব জেলায়, সব মহকুমায় বিক্ষোভ ঘিরে কম বেশি গোলমাল হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সর্বত্র দলীয় কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। দলের রাজ্য নেতা থেকে শুরু করে সাংসদ, বিধায়ক যে ভাবে পেরেছেন, সে ভাবে পথে নেমেছেন। রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, বহুদিন পর দলের নেতা-কর্মীদের এমন স্বতঃস্ফূর্ত মুডে রাস্তায় দেখা গেল। লোকসভা ভোটের মুখে এটা আমাদের বড় কৃতিত্ব।
বৃহস্পতিবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু যখন সন্দেশখালিতে ঢুকতে না পেরে ছয় কিমি দূরে সরবেড়িয়ায় প্রায় দুই ঘণ্টা রাস্তায় বসে, তখন রাজ্যের প্রায় সব জেলায় পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভ চলেছে। গতকাল রাত থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি। মঙ্গলবার থেকে তিনি সন্দেশখালিতে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। মঙ্গলবার প্রায় সারা রাত তিনি বসিরহাটের পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বসেছিলেন। ভোরে তাঁকে এবং তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতার করে একটি হোটেলে রাখা হয়। বুধবার দিনভর তিনি পুলিশকে নাকানিচোবানি খাইয়ে ছেড়েছেন।
আরও পড়ুন: এবার পঞ্জাব সফরে মমতা, আপ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা
তৃণমূল অবশ্য শুভেন্দু এবং সুকান্তর কর্মসূচিকে নাটক বলে হাল্কা করতে চেয়েছে। শাসকদলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, সুকান্ত এবং শুভেন্দু কে কত বড় নেতা, তা দেখানোর জন্য নাটকবাজি করছেন। তাঁদের এই নাটক রাজ্যবাসী ধরে ফেলেছে। এদিন বিধানসভায় সন্দেশখালির ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। শাসকদলের অন্য নেতারা সন্দেশখালি-কাণ্ডে বিজেপি এবং সিপিএমকে এক ব্র্যাকেটে ফেললেও মুখ্যমন্ত্রী তা করেননি। তিনি স্বীকার করেছেন, সন্দেশখালিতে আরএসএসের ভালোমতো প্রভাব রয়েছে। এটাকে প্রকারান্তরে তাদের পক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর সার্টিফিকেট বলেই মনে করছে বিজেপি।
এই আবহে আগামিকাল শুক্রবার সন্দেশখালি যাচ্ছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জে পি নাড্ডা। তাঁর সঙ্গে থাকবেন দলের আরও পাঁচ সাংসদ। তাঁদের মধ্যে চারজনই মহিলা। শুভেন্দু এদিন আবারও হুমকি দিয়েছেন, তিনি ফের সন্দেশখালিতে ঢুকবেন আদালতের অনুমতি নিয়ে। বুধবার শাসকদলের মন্ত্রী শশী পাঁজা হুমকি দিয়েছিলেন, জাতীয় তফসিলি কমিশনকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। রাজ্য প্রশাসন তাদের ঢুকতে দেবে না। তিনি বলেন, খবরদার, আপনারা আসবেন না। সাহস থাকলে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে যান। শান্ত বাংলাকে অশান্ত করবেন না। কিন্তু মন্ত্রীর হুমকি অগ্রাহ্য করেই এদিন জাতীয় তফসিলি কমিশনের সাত সদস্য সন্দেশখালিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন।