কলকাতা: রাজ্য-রাজ্যপাল (Jagdeep Dhankar) সংঘাত একেবারেই চরমে পৌঁছেছে। এবার রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে সংসদে প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করছে তৃণমূল (TMC)। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কালীঘাটের বাড়িতে ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্যপালের (Governor) ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়। সংসদের পাশাপাশি রাজ্য বিধানসভাতেও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নিন্দাপ্রস্তাব আনার ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা চলছে শাসকদলের অন্দরে।
বৃহস্পতিবারের ভার্চুয়াল বৈঠকের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ হয় শুক্রবার তৃণমূলের দৈনিক মুখপত্রে। সেখানে লেখা হয় রাজ্যপাল কার্যত রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের বক্তব্য উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, রাজ্যপাল অনৈতিক, রীতিবহির্ভূত, অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের ১১ বছরের শাসনে এরকম রাজ্যপাল দেখা যায়নি। বিরোধী দলের এজেন্সি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিব্রত করার নীতি নিয়েছেন রাজ্যপাল।
বৈঠকে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যপালের ভূমিকা ভয়ঙ্কর জায়গায় চলে গিয়েছে। সংসদের দুই কক্ষেই রাজ্যপালের কাজকর্ম নিয়ে সরব হবেন আমাদের সাংসদরা’। রাজ্যসভার সদস্য সুখেন্দুশেখর রায় জানান, রাজ্যসভায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রস্তাবনার কথা বলা হচ্ছে।
সাধারণতন্ত্র দিবসের আগের দিন বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে রাজ্যপাল নজিরবিহীন ভাবে আক্রমণ শানান রাজ্যের বিরুদ্ধে। তখন অদূরেই দাঁড়িয়েছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালের সাংবাদিক সম্মেলনের পর অধ্যক্ষও পালটা তোপ দাগেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপাল অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। এরপর বিধানসভায় আসতে চাইলে রাজ্যপালের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হবে বলে অধ্যক্ষ জানান।
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: তৃণমূলের অনুশাসন, শৃঙ্খলা নিয়ে সাংসদদের কড়া বার্তা মমতার
শুক্রবার তিনি ইঙ্গিত দেন, পরের বিধানসভা অধিবেশনে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নিন্দাপ্রস্তাব আনা হতে পারে। ইতিমধ্যেই তিনি বিধানসভা চত্বরে রাজ্যপালের বক্তব্যের ভিডিয়ো ফুটেজ চেয়ে পাঠিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘অতীতে অনেক রাজ্যপাল দেখেছি। কিন্তু এরকম রাজ্যপাল কখনও দেখিনি।’
রেড রোডে সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে মুখ্যমন্ত্রী ও অধ্যক্ষের সঙ্গে রাজ্যপালের দেখা হলেও কথা হয়নি। তাঁরা দুজনেই রাজ্যপালের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন অনুষ্ঠানস্থলে। একসময় মুখ্যমন্ত্রীর কানের কাছে মুখ নিয়ে রাজ্যপাল কিছু বলতে চান। মুখ্যমন্ত্রী দূরে সরে যান।