কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) উপর ভরসা রেখে কলকাতায় ফিরলেন কামদুনির প্রতিবাদীরা। শুক্রবার কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে মৌসুমি কয়াল, টুম্পা কয়াল, প্রদীপ মুখোপাধ্যায়রা বলেন, আমরা অনেক আশা নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলাম। সেখানে কিছুটা হলেও ভরসা পেলাম। জাতীয় মহিলা কমিশন যে এত খবর রাখে, আমরা জানতাম না। সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি করা নিয়ে আইনজীবী বাঁশুরি স্বরাজের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, রাজ্যের পুলিশের উপর আর আমাদের ভরসা নেই।
এদিকে কামদুনির নির্যাতিতার পরিবারের পাশে দাঁড়াল নির্ভয়ার পরিবার। বৃহস্পতিবার নির্ভয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কামদুনির (Kamduni) প্রতিবাদীরা। সেই দলে ছিলেন নির্যাতিতার ভাইয়েরাও। তাঁরা জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মারও সাহা্য্য চান। পরে সন্ধ্যায় যন্তর মন্তরে মোমবাতি জ্বালিয়ে ধরনায় বসেন কামদুনির প্রতিবাদীরা। কামদুনির নির্যাতিতা পরিবার যাতে তাঁর মেয়ের মতোই সুবিচার পায়, সে জন্য তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন নির্ভয়ার মা।
মৌসুমি, টুম্পা, প্রদীপরা দিল্লিতে দেখা করেন নির্ভয়ার মায়ের সঙ্গে। মোট নয়জনের প্রতিনিধিদল গিয়েছিল দিল্লিতে। দলে ছিলেন নির্যাতিতার দুই ভাইও। কামদুনির ধর্ষণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি চান তাঁরা।
আরও পড়ুন: মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ সংবাদমাধ্যমের, আদালতে রুজিরা
নির্ভয়ার মা মৌসুমিদের বলেন, অভিযুক্তেরা ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় তাদের মনোবল আরও বেড়ে যাবে। ধর্ষকদের তো জামিন দেওয়াই উচিত নয়। এরা জেল থেকে বাইরে বেরলে সমাজের অন্যান্য মেয়েদের জন্য বিপদ। মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে। মৌসুমি, টুম্পারা বলেন, অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় গ্রামের মেয়ে, বউরা ভয় পাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে হাইকোর্টের বিচারপতির জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় বদলে দেয়। মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একজন বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত তিনজনও বেকসুর খালাস হয়। ওই রায়ে ভেঙে পড়ে গোটা কামদুনি। সেদিনই টুম্পা, মৌসুমিরা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলে জানিয়ে দেন। দিল্লি যাওয়ার সময়ই প্রদীপ, মৌসুমি, টুম্পারা বলেন, আমরা রাজ্যে বিচার পেলাম না। ভেবেছিলাম রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু নিম্ন আদালতের রায় রাজ্য সরকারের গাফিলতির কারণেই হাইকোর্ট পরিবর্তন করল। তাঁদের অভিযোগ, প্রথম থেকেই রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে গা ছাড়া মনোভাব নিয়ে চলছিল। সিআইডিও দায়সারা গোছের চার্জশিট পেশ করেছে। হাইকোর্টের রায়েও সিআইডি এবং পুলিশের এই গাফিলতির কথা ধরা পড়েছে। তাই আমরা সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি করতে যাচ্ছি।
আরও অন্য খবর দেখুন