কলকাতা: স্বর্ণ ব্যবসায়ী শান্তিলাল বৈদ্য খুনে অভিযুক্ত ব্যক্তি মুক্তিপণের টাকা নিয়ে সোজা হাওড়া স্টেশনই নামে৷ ট্যাক্সি চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিস৷ ট্যাক্সি চালককে অভিযুক্ত জানিয়েছিল, রাত ১০টা ৪০-এর ট্রেন রয়েছে তার৷ সেই মতো চালক তাকে আট মিনিট আগেই হাওড়া স্টেশনে নামিয়ে দেয়৷ সত্যিই অভিযুক্ত রাতের ট্রেনে শহর ছেড়েছে না কি চালককে মিথ্যে কথা বলেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিস৷ এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের পরই ট্যাক্সি সুদ্ধ চালককে ছেড়ে দেন তদন্তকারীরা৷
সোমবার রাতে শম্ভুনাথ পণ্ডিত স্ট্রিটের একটি গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার হয় স্বর্ণ ব্যবসায়ী শান্তিলাল বৈদ্যর দেহ৷ ওই গেস্ট হাউসের কাছেই লি রোডের একটি অভিজাত আবাসনে থাকতেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী৷ পরিবারের সদস্যদের জেরা করে পুলিস জানতে পারে, সোমবার সন্ধে সাড়ে ৬টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন শান্তিলাল৷ এক ঘণ্টা বাদে শান্তিলালের মোবাইল থেকে অপরিচিত কণ্ঠে এক ব্যক্তি মুক্তিপণ দাবি করে৷ ওই ব্যক্তির কথামতো ২৫ লাখ টাকা নিয়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সাউথ গেটে যান পরিবারের সদস্যরা৷ হলুদ ট্যাক্সিতে চেপে সেখানে পৌঁছয় আততায়ী৷ মুক্তিপণের টাকা নিয়ে শান্তিলালের মোবাইল ওই ব্যক্তিকে ফেরত দেয় সে৷ এরপর ওই ট্যাক্সিতেই হাওড়া স্টেশনে যায় অভিযুক্ত৷
তদন্তে নেমে পুলিস তাই ওই ট্যাক্সি চালকের খোঁজ করে৷ জানা যায়, আততায়ী রবীন্দ্র পটেল নামে এক চালকের ট্যাক্সিতে উঠেছিল৷ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস৷ জেরায় ট্যাক্সিচালক জানায়, ওই ব্যক্তিকে হাওড়া ব্রিজে ওঠার সামনের রাস্তা থেকে গাড়িতে তোলে৷ ট্যাক্সিতে ওঠার পর সে চালককে ভিক্টোরিয়া দক্ষিণ গেট যেতে বলে৷ কিছুক্ষণ বাদে ভিক্টোরিয়া পৌঁছতেই সে আস্তে গাড়ি চালাতে বলে৷ চালককে জানায়, দাদার থেকে একটি ব্যাগ নেওয়ার আছে৷ তবে ট্যাক্সির জানলা দিয়ে ওই ব্যাগ নেয় সে৷ ব্যাগটি নেওয়ার পর একটি ফোন তাকে ফেরত দেয়৷ যার কাছে সে ব্যাগটি নিয়েছিল সে জিজ্ঞাসা করে, এটা করা ফোন? আততায়ী বলে, এটা আপনার চাচার ফোন৷
আরও পড়ুন: Bhowanipore Murder: স্বর্ণ ব্যবসায়ীর রহস্য মৃত্যুতে ট্যাক্সি চালককে জিজ্ঞাসাবাদ গোয়েন্দাদের
ব্যাগ নেওয়ার পরই ট্যাক্সি চালককে সে বলে হাওড়া স্টেশন যেতে৷ তার রাতের ট্রেন ধরার আছে৷ সেই মতো ১০টা ৩২ মিনিটে যাত্রীকে হাওড়া স্টেশনে নামিয়ে দেয় চালক৷ এদিকে ট্যাক্সি চালকের বয়ানের পরেও অনেক প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের৷ ট্যাক্সির যাত্রী যদি খুনী হয় তাহলে সে খুনটা করল কখন? যদি সে খুন করে থাকে তাহলে হাওড়া স্টেশন কেন গেল? না কি খুনের ঘটনায় আর কেউ জড়িত? ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে খুন? না কি অন্য কারণ রয়েছে?