কলকাতা : অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর কার্যকালের মেয়াদ সম্পূর্ণ। গত দু’বার খড়দহ থেকে ভোটে লড়ে জিতেছিলেন অমিত মিত্র। তাঁকেই রাজ্যের অর্থমন্ত্রী পদ দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু, শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার আর ভোটে লড়েননি অমিত মিত্র। তবুও তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের অর্থ দফতর সামলাতে তাঁর উপরই ভরসা রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ। কারণ বিধায়ক না হয়ে ছ’মাসের বেশি মন্ত্রী পদে থাকা যায় না। অন্যদিকে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন। একদিকে পঞ্চায়েত আবার অর্থ, দুটি বড় পদের দায়িত্ব কে নেবেন? উঠছে প্রশ্ন।
মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে বিধায়ক হিসেবে শপথ নিলেন উপনির্বাচনের চার কেন্দ্রের জয়ী প্রার্থীরা। উপনির্বাচনে খড়দহ, গোসাবা, দিনহাটা, শান্তিপুর কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের চার প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মণ্ডল, উদয়ন গুহ এবং ব্রজকিশোর গোস্বামী। তাহলে কি রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে চলেছে? সদ্য চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিপুল জয় হয়েছে তৃণমূলের। অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার প্রয়াত হয়েছেন রাজ্যের বর্ষীয়ান ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এদিকে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রেরও কার্যকালের মেয়াদ সম্পূর্ণ।
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রয়ানের পর গুরুত্বপূর্ণ পঞ্চায়েত দফতরের দায়িত্বে কে আসতে পারে, এই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। গত দু’বারই খড়দহ থেকে ভোটে জিতেছিলেন অমিত মিত্র। তাঁকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী পদ দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার ভোটে লড়েননি অমিত মিত্র। তবুও রাজ্যের অর্থ দফতর সামলাতে তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ। তাই মন্ত্রিসভার রদবদলের সম্ভাবনা থাকছেই। মঙ্গলবার বিকেল ৩টেয় মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে। সেই বৈঠকেই রদবদলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন : রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা, মমতার ক্যাবিনেটে নতুন মুখ?
সূত্রের খবর, নবনির্বাচিত বিধায়কদের মধ্যে থেকে দু’একজন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে পারেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। রেকর্ড ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, উদয়নকে মন্ত্রী করলে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে পারবেন মমতা। একদিকে যেমন মন্ত্রিসভায় উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব বাড়বে, ঠিক তেমনই রেকর্ড ভোটে জেতার পুরস্কারও দেওয়া যাবে। শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীও মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। এই কেন্দ্রে বিধানসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে হেরেছিল ঘাসফুল শিবির। উপনির্বাচনে শান্তিপুরে জোড়াফুল ফুটিয়েছেন ব্রজকিশোর। ৬০ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি।
বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়ায় খারাপ ফল করেছিল তৃণমূল। মতুয়া অধ্যুষিত এই জেলায় বেশ কয়েকটি আসনে পেয়েছিল বিজেপি। তার আগে লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাট আসন হারাতে হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীকে ক্যাবিনেটে স্থান দিতে পারেন মমতা। সদ্য প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় দীর্ঘদিন পঞ্চায়েত দফতর সামলেছেন। তার আমলে একাধিকবার ১০০দিনের কাজে দেশের সেরা হয়েছে বাংলা। সুব্রতবাবুর জায়গায় অভিজ্ঞ কোনও মুখকে আনতে পারেন মমতা। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান মন্ত্রিসভায় দুই সদস্য। অর্থ দফতর নিজের হাতেই রাখতে পারেন মমতা। সূত্রের খবর, পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েই অর্থ দফতরের উপদেষ্টা হিসেবে অমিত মিত্রকে কাজে লাগাতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিতের মন্ত্রিত্বের সময়সীমা শেষ । ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অর্থমন্ত্রী রয়েছেন অমিত মিত্র। আর্থিক সমস্যার মধ্যেও সরকারি প্রকল্পগুলি চালু রেখেছেন তিনি।