কলকাতা: রাজ্যের বকেয়া পুরভোট ফেব্রুয়ারির মধ্যেই দু’দফায় করার কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পুরভোট নিয়ে বিশদ পরিকল্পনার উল্লেখ রয়েছে কমিশনের হলফনামায়। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে ফের একবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে তলব করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। শুক্রবার, বিকেল সাড়ে ৪টের সময় রাজ্যভবনে যাবেন সৌরভ দাস। ধারণা, বকেয়া পুরভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কী ভাবছে, সেই পরিকল্পনার বিশদ জানতেই সৌরভ দাসকে তলব করা হয়েছে। সৌরভের সঙ্গে এই বৈঠকের পরেই রাজভবনে (Jagdeep Dhankhar) যাবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
হাইকোর্টে হলফনামায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানায়, মোট দু’দফায় ভোট করানো সম্ভব। প্রথম দফায় ২২ জানুয়ারি বিধানগর, চন্দননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি ও হাওড়ার ভোট হবে। দ্বিতীয় দফায়, ২৭ ফেব্রুয়ারি বাকি ১০৬টি পুরসভার ভোট করানোর পরিকল্পনা রয়েছে। রাজ্যের সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত। ভোটের দিনক্ষণ স্থির করার ক্ষেত্রে রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে বিষয়গুলি মাথায় রেখেছে, হলফনামায় তার উল্লেখও রয়েছে। সামনের বছরের মার্চ এবং এপ্রিলে রয়েছে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই ভোটের দিনক্ষণ স্থির করার ক্ষেত্রে সে বিষয়টি মাথায় রেখেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। দু-দফায় ভোট করাতে ইভিএমের কোনও ঘাটতি হবে না বলেও হলফনামায় জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
রাজ্যের পুরভোটকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে কমিশনের সঙ্গে একাধিকবার সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সবক’টি পুরভোট একসঙ্গে করতে নারাজ হওয়ায়, তোপও দাগেন রাজ্যপাল। রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, তা-ও বোঝানোর চেষ্টা করেন জগদীপ ধনখড়। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পুরভোট করানো নিয়েও সৌরভ দাসের সঙ্গে মতানৈক্য হয় রাজ্যপালের। জগদীপ ধনখড়ের কথা না-শুনেই কলকাতা পুলিস দিয়ে পুরভোট করানোর সিদ্ধান্তে অবিচল থাকেন সৌরভ দাস। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ালেও শেষ পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচনের কমিশনের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করেনি হাইকোর্ট। তবে, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি রাখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতার পুরভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে দাবি করলেও বিরোধীরা তাতে সহমত হয়নি। শাসকদলের বিরুদ্ধে ভোট-সন্ত্রাস ও ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলে বিরোধীরা আবারও আদালতে গিয়েছে। বিরোধীদের ক্রমাগত চাপের মুখে রাজ্যের বকেয়া পুরভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হবে নাকি এ বারও রাজ্য পুলিসেই কমিশন আস্থা রাখার কথা জানাবে, তা কিছুদিনের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1474266321751666690?s=20