কলকাতা: নিউটাউনের (Newtown) জঙ্গল থেকে অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার হওয়া নাবালিকা হত্যাকাণ্ডে নতুন মোড়। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে ধর্ষণ, তারপর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে মেয়েটিকে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তে নামে পুলিশ। জানা গেছে, জগৎপুর ৭ নম্বর এলাকা থেকে এক ই-রিক্সা চালক মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে তোলে। প্রথমে পেছনের সিটে বসানো হলেও, পরে অন্য যাত্রীরা ওঠার পর তাকে সামনের সিটে বসতে বলা হয়। এরপরই শুরু হয় ভয়ংকর ষড়যন্ত্র।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, নির্যাতিতাকে নিয়ে নিউটাউনের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরতে থাকে ই-রিক্সা চালক। অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে সে লোহা ব্রিজের কাছে একটি ফাঁকা জঙ্গলে নিয়ে যায় মেয়েটিকে। অভিযোগ, সেখানেই তার ওপর নৃশংস অত্যাচার চালানো হয়। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় নাবালিকাকে। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ নির্যাতিতা ই-রিক্সায় ওঠে। এরপর থেকেই তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। নিউটাউনের সিটি স্কয়ার সংলগ্ন এলাকায় নির্যাতিতাকে ই-রিক্সায় যেতে দেখা যায়। সেই সূত্র ধরেই শুরু হয় অভিযুক্ত চালকের খোঁজ। শনিবার গভীর রাতে নিউটাউন থানার পুলিশ এবং বিধাননগর গোয়েন্দারা অভিযান চালিয়ে নিউটাউন পুলিশ ক্যাম্প এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ধৃতের নাম সৌমিত্র রায় ওরফে রাজ (২৬), নদীয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা। নিউটাউনের আদর্শ পল্লীতে ভাড়া থাকত সে।
আরও পড়ুন: উত্তপ্ত ভাঙড়, সবজি বিক্রেতাকে গুলি
এদিকে, নাবালিকার দেহ বাড়িতে পৌঁছতেই শুরু হয় প্রবল বিক্ষোভ। শুক্রবার রাতেই মৃতদেহ দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন স্থানীয়রা। ক্ষোভে তারা দেহবাহী গাড়ি আটকে দেয়। তাঁদের দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। পুলিশি আশ্বাসের পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ঘটনার প্রতিবাদে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনাও ছড়ায়।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার ও সিপিআইএম নেতাকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নাবালিকার দেহ স্বরূপনগরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের দাবি, দ্রুত চার্জশিট জমা দিয়ে দোষীর কঠোর সাজা নিশ্চিত করা হবে। তবে এলাকায় এখনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে।
দেখুন আরও খবর: