বীরভূম: বোলপুর থানার আইসি (Police IC Bolpur ) লিটন হালদারকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগ অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বিরুদ্ধে। এতটাই কদর্য ছিল সেই ভাষা যে, প্রতি শব্দের পরই একাধিক বিপ-শব্দ ব্যবহার করতে হয়েছিল। অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। সেই অডিও ক্লিপ ভাইরাল হতেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতিতে। আগামী চার ঘণ্টার মধ্যে তাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে অন্যথা তার বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ বের করার হুশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। দলের নির্দেশে লিখিত ভাবে পুলিশের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। । মেনে নিলেন ভাইরাল হওয়া অডিয়ো ক্লিপ ‘অনুব্রত মণ্ডল বলছি’ বলে যে কণ্ঠ শোনা গিয়েছে, সেটা তাঁরই। তিনি বলেন, ‘আমি নানা ধরনের ওষুধ খাই। দিদির পুলিশের বিরুদ্ধে কউ অভিযোগ করলে মাথা গরম হয়। আমি সত্যিই দুঃখিত’।
বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। এমনকি তার মা ও স্ত্রীকে নিয়েও নোংরা মন্তব্য অনুব্রত মন্ডলের। সেই অডিও ক্লিপে বলা হচ্ছে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে থানা থেকে বার করে আইসিকে পেটানো হবে। কোয়ার্টার থেকে চুলের মুঠি ধরে বের করা হবে। এমনকি, আইসিকে কাজলের লোক বলতেও শোনা যায় সেই ক্লিপ। তবে সমাজমাধ্যমে সুকান্তর তুলে ধরা এই রেকর্ডিং নিয়ে মুখ খুলেছে বোলপুর থানা। তার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি কল রেকর্ডিংও (যার সত্য়তা যাচাই করেনি (কলকাতা টিভি অনলাইন) তুলে ধরে তিনি। এই অডিও ক্লিপ পোস্ট করে পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য পুলিশের ডিজির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। সুকান্তর দাবি, ‘বীরভূমের ছাল ছাড়ানো বাঘের মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। তিনি একজন পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে ঠিক কি ভাষায় কথা বলছেন!’
আরও পড়ুন: বোলপুর থানার IC-কে কদর্যভাষায় হুমকি কেষ্টর
আগামী চার ঘণ্টার মধ্যে তাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে অন্যথা তার বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ বের করার হুশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কমানো হল তার নিরাপত্তা। দল সূত্রে খবর, সরিয়ে দেওয়া হল অনুব্রতর ৫জন হাউস স্টাফ, ৪জন নিরাপত্তারক্ষীকে । তৃণমূলের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশের ঠিক দু’ঘণ্টা পরই ভুল স্বীকার করে দলনেত্রীকে চিঠি লেখেন অনুব্রতর। অনুব্রতর বক্তব্য, ”সাম্প্রতিক ঘটনায় আমি দুঃখিত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ পুলিশকর্মী থেকে একজন বড় অফিসার সবাই দিদির কাছের মানুষ। তাদের অপমান করার কথা ভাবতে পারিনা। দিদির পুলিশের কাছে আমি একবার কেন, ১০০ বার ক্ষমা চাইতে পারি।আসলে আমি নানা রকম ওষুধ খায় এবং দিদির পুলিশের বিরুদ্ধে কেউ কোনও অভিযোগ করলে মাথা গরম হয়ে যায়। চিঠির শেষেও তিনি লিখেছেন, ”কোনও পুলিশ বন্ধু আমাকে ভুল বুঝলে আমি দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
সেই ঘটনার প্রতিবাদে এদিন পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি বিজেপির। এমনকি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে থাকা অনুব্রত মণ্ডলের ছবি জুতোপেটা করলেন বিজেপি কর্মীরা। এমনকি এদিন পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে থেকে বিক্ষোভ সরাতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিজেপির নেতা ও কর্মীদের। পরে পুলিশ অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে শত প্রণোদিত মামলা হওয়ার কথা বিজেপি কর্মীদের জানালে তারপরে পুলিশ সুপারের অফিস চত্বর থেকে ওঠে বিক্ষোভ। সব মিলিয়ে এদিন ধুন্ধুমার পুলিশ সুপারের অফিস চত্বরে।
দেখুন ভিডিও