কলকাতা: ছাড়া পেয়েও ছাড়া পেলেন না নওশাদ সিদ্দিকি। তিনি কবে জামিন পাবেন তা নিয়ে রাজনীতিতে পারদ চড়ছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার চল্লিশ দিনের মাথায় আইএসএফ পার্টির একমাত্র বিধায়ক নওশাদকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্তু শুক্রবারও বন্দিদশা কাটল না তাঁর। তাঁর কাগজপত্র সময়মতো জেল কর্তৃপক্ষের কাছে এসে পৌঁছয়নি বলে তাই তিনি ছাড়া পেলেন না। এমনটাই যুক্তি প্রশাসনের।
আবির খেলা শুরু হয়ে গিয়েছিল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই। শুক্রবার সকালেও তার রেশ ছিল কীভাবে ভাঙড়ে নিয়ে এসে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। তারও প্রস্তুতি ছিল আইএসএফের। প্রস্তুত ছিল গাড়িও। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষাই সার হল। জানা গেল এদিন ছাড়া পাচ্ছেন না নওশাদ। তা নিয়ে ভাঙড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়।
গত ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে জমায়েত ছিল। সেই জমায়েতে আসার পথে ভাঙড়েই আইএসএফ কর্মীদের গাড়িতে তৃণমূল ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। তারই প্রতিবাদে ধর্মতলায় অবরোধ শুরু করে আইএসএফ। সেই অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে আইএসএফ সমর্থকদের। অবরোধে শামিল ছিলেন নওশাদ সহ দলের অন্য নেতারাও। পুলিশ লাঠি ও কাঁদানে গ্যাস চালায়। পাল্টা পুলিশকেও আক্রমণ করা হয়। দুই অফিসার সহ ১৯ জন পুলিশকর্মী জখ হন বলে অভিযোগ। নওশাদদের পুলিশ টেনে হিঁচড়ে পুলিশ ভ্যানে তোলে। নওশাদ সহ ৮৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন থেকেই নওশাদরা জেলবন্দি। একাধিক মামলায় পুলিশ তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে বলে দাবি আইএসএফের। নওশাদের অভিযোগ ছিল, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল প্রশাসন তাঁকে জেল থেকে ছাড়বে না।
আরও পড়ুন: Hooghly News: ভাইকে বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দাদার, জলে ডুবেই মৃত্যু ২ ভাইয়ের
পুলিশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে পড়ে। শুধু অবরোধ করায় ৮৮ জনকে কী করে বন্দি রাখা হয়েছে প্রশ্ন তোলে আদালত। পুলিশের দাবি ছিল, নওশাদ পুলিশকে মারার ব্যাপারে প্ররোচনামূলক ভাষণ দিয়েছেন। কিন্তু, সেই দাবির সমর্থনে পুলিশ আদালতে কোনও ভিডিয়ো ফুটেজ দেখাতে পারেনি। সাক্ষী হিসেবে পুলিশ এক হকারের কথা জানিয়েছিল। আদালত তাতেও কোনও গুরুত্ব দেয়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট নওশাদকে জামিনে মুক্তি দেয়। বাকিদেরও জামিন দেওয়া হয়।