১৯৮৪-এর ৩ ডিসেম্বর ইউনিয়ন কারবাইডের (Union Carbide) বিষাক্ত মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাসে (Methyl Isocyanate Gas) প্রায় ১৫ হাজার জনের মৃত্যু হলেও দেবী রাম সে যাত্রা বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু ক্যান্সার (Cancer) আক্রান্ত ৬০ বছরের দেবী রাম, কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের (Union Railway Minister Ashwini Vaishnaw) বুলডোজারের হাত থেকে রেহাই পেলেন না। জমি উদ্ধারের নামে তাঁদের ঝুপড়ি ভেঙে দেওয়ার পর, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত দেবী রাম শেষ পর্যন্ত মারাই গেলেন।
প্রায় ৩৮ বছর আগে বিদেশি মাল্টি ন্যাশনাল ইউনিয়ন কার্বাইডের ৪০ টন মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস লিক (Gas Leak) করে মাঝ রাত্তিরে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১৫ হাজার জনের। শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০ হাজার। দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিহতের পরিবারের লোক জনেরা যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পাননি। এই ৬০ হাজার জনেরই একজন ছিলেন ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত দেবী রাম। তাঁর ক্যান্সার রোগের কারণও মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস প্রভাব, এমন ধারণাও রয়েছে স্থানীয়দের মনে।
আরও পড়ুন: LIC : আদানির সংকটে আশঙ্কার কারণ নেই, গ্রাহকদের আশ্বস্ত করল এলআইসি
ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার লাগোয়া রেল লাইনের ধারে, রেলের জমিতে দেবী রামরা প্রায় ১১০০ মানুষ ঝুপড়ি বানিয়ে থাকতেন গত ৩০ বছর ধরে। এখানে যাঁরা থাকতেন, তাঁদের বড় অংশই ‘গ্যাস-ভিক্টিম’, বা গ্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত। সাংবাদিকদের এই কথা জানিয়েছেন ক্ষতি পূরণের দাবিতে আন্দোলনকারীদের পক্ষে, রচনা ধিংরা। তিনি আরও জানিয়েছেন, এখানকার বাসিন্দাদের বড় অংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর রেল কর্তৃপক্ষ তাদের জমি উদ্ধারের জন্য, দেবী রামের ঝুপড়ি সহ ওই অঞ্চলের প্রায় ৪০০ ঝুপড়ি ভেঙে দেয় বুলডোজার দিয়ে। রচনা ধিংরা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government) ২০১০ সালে এই সব মানুষদের পুনর্বাসনের জন্য ৪৯ কোটি টাকা দিয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি সরকার (BJP Govt.) সেই কাজ করেনি।
অসুস্থ ছিলেন ৬০ বছরের দেবী রাম। তিনি বহু জাতিকের গ্যাস আক্রমণ প্রতিহত করেছিলেন ২২ বছর বয়সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিজেপির বুলডোজারের কাছে হেরে গেলেন। শেষ হয়ে গেল দেবী রামের লড়াই।