Sunday, August 17, 2025
HomeআজকেAajke | হাকিম নড়ে গেল, হুকুম তো নড়েনি

Aajke | হাকিম নড়ে গেল, হুকুম তো নড়েনি

Follow Us :

বিচার নিয়ে একটা চালু কথা হল, জাস্টিস মাস্ট বি সিন টু বি ডান। মানে হল, কেবল বিচার দেওয়াটাই জরুরি নয়, ন্যায্য বিচার করা হচ্ছে সেটা যেন দেখতেও পাওয়া যায়। সেই জন্যই জাস্টিসদের কিছু অলিখিত কোড আছে। তাঁরা যত্রতত্র হাজির হন না, যে কারও সঙ্গে প্রকাশ্যে তাঁদের দেখা যায় না। কিছু এথিকাল কোড বা নৈতিক অবস্থানও আছে যেমন, তাঁদের স্বার্থ জড়িত বা তাঁর পরিবার পরিজনের স্বার্থ জড়িত কোনও মামলার রায়দান থেকে তাঁরা বিরত থাকবেন ইত্যাদি। তার মানে কি এই যে, বিচারবিভাগ মনে করে নিজের পরিবারের স্বার্থ থাকলেই একজন বিচারপতি পক্ষপাতিত্ব করবেন? না তেমনটা মনে করে না, কিন্তু ওই যে, ন্যায় বিচার হচ্ছে সেটা যেন মানুষ দেখতেও পায়, সেইজন্যই এমন নৈতিক অবস্থান। কাজেই বিচারককে মানুষের আস্থা পেতে হবে, বাদী বা বিবাদী পক্ষের প্রত্যেক মানুষ যেন মনে করেন তিনি ন্যায্য বিচার পাবেন। এবং এই প্রেক্ষিতকেই সামনে রেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা সরিয়ে নেওয়া হল। বেশ কিছুদিন ধরেই মনে হচ্ছিল এ রাজ্যের যাবতীয় দুর্নীতি একাই ঝেঁটিয়ে বিদেয় করবেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, সাধারণ মানুষ সেটাই ভাবতে শুরু করেছিলেন। খানিক মধ্য ৭০-এর অ্যাংরি ইয়ংম্যান অমিতাভ বচ্চনের মতো, একাই একশো, ভিলেন আর তার শাকরেদদের শুইয়ে দিয়ে হিরোইনকে উদ্ধার করে আনবেন। এবং ওনার ডায়ালগ নিয়েও হইচই হচ্ছিল। দুর্নীতির শেকড় ধরে টান দেব, আসল মাথাকে টেনে আনব ইত্যাদি, এসব কার জন্য বলা, কাকে উদ্দেশ্য করে বলা তা নিয়ে তো খুব ধোঁয়াশা ছিল না, কাজেই সরকার বিরোধী মহলে ওনার জনপ্রিয়তা বাড়ছিল। উনিও সেই সুবাদেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গেলেই উষ্ণ অভিনন্দন পাচ্ছিলেন। ওনার এজলাস মানেই খবর, ওনার এজলাস মানেই কাগজের হেডলাইন। এবং সেই সুবাদেই একটা টিভি সাক্ষাৎকার, সেই সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির রায়ে ওনার এজলাস থেকে সরিয়ে নেওয়া হল নিয়োগ দুর্নীতির সব মামলা। আজ সেটাই বিষয় আজকে, নিয়োগ দুর্নীতির বিচারক বদল।

বিচারপতির বিচার, আগেও হয়েছে, আবার হল। কিন্তু এবার প্রেক্ষিত রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা। মানুষের চোখের সামনে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে তাদের বাড়ি থেকে খামার বাড়ি থেকে উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা, গয়না, সম্পত্তির দলিল। দেখতে হাফ গেরস্ত ভালো মানুষ কিন্তু ঘরে টাকার পাহাড় এবং তাদের প্রত্যেকেই তৃণমূল দলের সঙ্গে জড়িত। হাজার হাজার ছেলেমেয়ে যৌবনের প্রারম্ভেই প্রতারণার শিকার। মেধাকে অস্বীকার করে কারেন্সি নোটের প্রাধান্য, জমি বেচে, জমি বন্ধক রেখে টাকা দিয়েছে কিছু মানুষ, সন্তানের চাকরির জন্য এইটুকু অসততা? হ্যাঁ, তারা এই অসততাকে এইটুকুই ভেবেছেন। আর যারা সেই টাকার জোগান দিতে পারেনি তাদের মেধা গড়ের মাঠে ট্রামলাইনের পাশে পড়ে আছে। সেই প্রেক্ষিতে যখন একজনের মুখে ফাঁপা হলেও ক্রুসেডের কথা শোনা যায়, শোনা যায় দুর্নীতির শেকড় ধরে এনে বার করার কথা তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই তিনি হিরো হয়ে ওঠেন।

আরও পড়ুন: Aajke | আত্মহত্যা কিশোরীর, গুলিতে মৃত যুবক, এএসআই কোমায়, সিভিক পুলিশ মৃত্যুশয্যায় 

কিন্তু সমস্যা হল, তিনি যা বিচার করবেন, সেটা আদৌ দুর্নীতি কি না? সেখানে সত্যিই টাকার লেনদেন হয়েছে কি না? তাতে কারা কারা জড়িত আছে? যদি দুর্নীতিই হয়ে থাকে তাহলে তা কতদুর বিস্তৃত, এই সমস্ত তথ্য জোগাড় করা কিন্তু বিচারকের কাজ নয়, বিচারক প্রশাসনের, সে যেই হোক না কেন, রাজ্য পুলিশ হতে পারে, সিবিআই হতে পারে, অন্য ভিজিলেন্স সংস্থা হতেই পারে তাদের জোগাড় করার কথা। তাঁর কাছে আনা তথ্যগুলো সামনে রেখে বিচারক এক যুক্তিনিষ্ঠ রায় দেবেন, এটাই তাঁর কাজ, তিনি অ্যাক্টিভিস্ট নন, তিনি অনুসন্ধানের দায়িত্বেও নেই। ধরুন একজন জাজ এজলাসেই বলছেন, ওনার নিউইয়র্কে বাড়ি আছে, কোথায় আছে বলব? এই বাড়ির হদিশ আনাও বিচারকের কাজ নয়, সেই হদিশ এলে তা এজলাসে বলাটাও বিচারকের কাজ নয়। কিন্তু যদি বলেন, তাহলে বুঝতে হবে তিনি স্থির করেই নিয়েছেন এটা দুর্নীতি, তিনি স্থির করেই নিয়েছেন নিউইয়র্কে একজনের বেআইনি বাড়ি আছে। এবং এসব বলার পরে হাততালি পাওয়া যায়, গ্যালারি গরম হয় বটে কিন্তু আখেরে তাঁর যেটুকু সদিচ্ছা আছে তা মাঠে মারা যায়। আপাতভাবে জাস্টিস গাঙ্গুলি যা করছিলেন তাতে মানুষের একটা ভরসা তো জন্মেইছিল যে উনি পারবেন, উনি দুর্নীতির শেকড় ধরে টান মারতে পারবেন। কিন্তু এই রায়ের পর অন্তত সেই অংশের মানুষ নিশ্চয়ই হতাশ। কেউ কেউ আবার আনন্দ গোপন করছেন না, শোনা যাক, মানুষ কী বলছেন।

দুর্নীতির এই রমরমা বাজারে একট কথা তো আমাদের মাথাতে রাখাই উচিত যে দুর্নীতির জন্য কোনও নাক্সভোমিকা তো আবিষ্কার হয়নি, কোনও চটজলদি উপায়ও নেই যা দিয়ে দুর্নীতি রোখা যাবে। যিনি অভিজিৎ গাঙ্গুলির প্রতিটা কথায় উচ্চস্বরে সমর্থন দিচ্ছেন তিনিই বার্থ সার্টিফিকেট বার করার জন্য ঘুষ দেন, তিনিই বাড়ির প্ল্যান স্যাংশন করানোর জন্য ঘুষ নেন। কে যেন বলেছিল করাপশন ইজ অ্যা সোশ্যাল ফিনোমেনন, দুর্নীতি এখন এক সামাজিক চেহারা। তবুও কারওর কথায়, কারওর কাজে আমাদের মনে খানিক ভরসা জাগে, কিন্তু সে ভরসা থাকে কই? তবে আজকের রায়ে স্বস্তি একটাই, হাকিম তো নড়ে গেছে, হুকুম কিন্তু নড়েনি। নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা কিন্তু চলবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Election Commission | ভোট চুরি নিয়ে কী বলল নির্বাচন কমিশন? দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Election Commission | কমিশনের কাঁধে ব/ন্দু/ক রেখে রাজনীতি করা হচ্ছে! আমরা কোনও ভেদাভেদ করি না
00:00
Video thumbnail
Election Commission | কেন SIR প্রয়োজন? কী ব্যাখ্যা দিল কমিশন? দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
West Bengal | Election Commission | পশ্চিমবঙ্গে কবে SIR? কী জানাল নির্বাচন কমিশন? দেখুন বিগ আপডেট
00:00
Video thumbnail
Rahul Gandhi | দেশজুড়ে SIR বি/ত/র্ক, এই আবহে রাহুলের পদযাত্রা, নির্বাচন কমিশনের প্রেস কনফারেন্স
00:00
Video thumbnail
Election Commission | বিহারে SIR-এর পর নির্বাচন কমিশনের প্রথম সাংবাদিক বৈঠক, দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Rahul Gandhi | বিহারে রাহুলের পদযাত্রা শুরু হতেই এ কি হল..দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Narendra Modi | RSS | লালকেল্লায় RSS-কে NGO বলে প্রশ্নের মুখে মোদি? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
07:56:41
Video thumbnail
Rahul Gandhi | বিহারে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ, এই আবহে রাহুলের পদযাত্রা, দেখুন সরাসরি
01:57:50
Video thumbnail
Donald Trump | 'ট্রাম্প মাস্ট গো' হোয়াইট হাউসের বাইরে এ কী অবস্থা? দেখুন এই ভিডিও
02:59