কলকাতা: সীমান্তে গরু পাচার-কাণ্ডে তদন্তে নেমে সম্প্রতি সিবিআই (CBI) রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শুল্ক দফতরের বেশ কয়েকজন অফিসারের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। কলকাতা, মুর্শিদাবাদ, ব্যারাকপুর, সোনারপুর, নদিয়া উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকায় এই অভিযান চলেছে বলে সিবিআই জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই তল্লাশি চালিয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর এক কমান্ডান্ট এবং আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে গরু পাচার নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা করা হয়। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। বিএসএফের (BSF) কমান্ডান্ট সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করা হয়। শাসকদলের বীরভূম (Birbhum) জেলা সভাপতি এনামুল হককেও প্রায় একই সময়ে গ্রেফতার করে সিবিআই। গরু পাচার মামলাতেই ধরা পড়েছেন অনুব্রত (Anubrata Mondal)। তার আগে সিবিআই গ্রেফতার করে অনুব্রতর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে। তাঁরা সকলেই এখন তিহার জেলে বন্দি।
আরও পড়ুন: TMC Inner Clash | স্বরূপনগরে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বাইক মিছিল তৃণমূলের
সেই পাচার মামলাতেই এখনও সিবিআই তল্লাশি জারি রেখেছে। সম্প্রতি এই রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় শুল্ক দফতরের অফিসার, ইন্সপেক্টরের বাড়িতে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআইয়ের দাবি, শুল্ক দফতরের ওই অফিসারদের মধ্যে অনেকে সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল, বাংলাদেশ সীমান্ত (Bangladesh Border) দিয়ে গরু পাচারে এই শুল্ক অফিসারদের ভূমিকা সন্দেহজনক ছিল। তাই সিবিআই গত কয়েকদিন ধরে ওই সব অফিসারের বাড়িতে অভিযান চালায়। তাঁদের বাড়ি থেকে বহু তথ্য মিলেছে।
সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি, এই শুল্ক অফিসারদের সঙ্গে অনুব্রত, সায়গল, এনামুলদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। সেই যোগাযোগকে কাজে লাগিয়েই গরু পাচারের কারবার চলে অবাধে। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল, শুল্ক অফিসার এবং বিএসএফ কর্তাদের একাংশের যোগসাজশে গরু পাচার চলেছে অবাধে।
গরু পাচারে শাসকদলের অনেক নেতার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তৃণমূল (TMC) বলে, সীমান্তে তো দায়িত্বে থাকে বিএসএফ। তাদের নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় সরকার। কাজেই এ ব্যাপারে কেন্দ্র তাদের দায় এড়াতে পারে না। সূত্রের খবর, সেই কারণেই সিবিআই এবার শুল্ক দফতরের অফিসারদের একাংশের উপর বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে। সাম্প্রতিক তল্লাশি সেই নজরদারিরই প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।