কলকাতা: কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গে (Third wave of Corona Kolkata) কোভিডের তৃতীয় ঢেউ এসে গিয়েছে। তৃতীয় ঢেউয়ের (Third wave scare Bengal) ধাক্কায় কলকাতায় (Covid-19 Kolkata) সংক্রমণ বৃদ্ধির হার (Covid-19 surge) বা পজিটিভিটি রেট ৩৮.৩৭ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে (Third wave of Corona Bengal) সংক্রমণ (Positivity rate in Kolkata) বৃদ্ধির হার ১৮.৯৬ শতাংশ। মঙ্গলবার রাজ্যে একদিনে কোভিডে সংক্রামিতের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার ছুঁয়েছে। এর মধ্যে কলকাতায় (Covid Kolkata) আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মত, ভাইরাসের চেহারা একেবারে বদলে গিয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার চেয়ে চার গুণ ক্ষমতা বাড়িয়ে হু হু করে ছড়াচ্ছে কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। স্বস্তির খবর একটাই, তৃতীয় ঢেউয়ের মারণ ক্ষমতা আগের মত নয়। রোগীর শরীরে উপসর্গও সামান্য। হাসপাতালে ভর্তির হার ৬ শতাংশের মত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশির ভাগ রোগীই অক্সিজেন থেরাপি ছাড়াই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।
![](https://kolkatatv.org/wp-content/uploads/2022/01/local-train-2-300x157.jpg)
অতিমারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায়, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীরা কলকাতা ও রাজ্যের মানুষকে এখনই সাবধান হতে বলছেন। বলছেন, ‘তা না হলে বড় বিপদের মুখে পড়বেন সাধারণ মানুষ।’ তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় চিকিৎসকদের একটাই দাওয়াই, ‘মাস্ক মাস্ট মাস্ট মাস্ট।’ বাইরে বেরলেই ‘মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।’ আর জমায়েত একেবারে নিষিদ্ধ। জানুয়ারিতে আর কয়েক দিন পরেই গঙ্গাসাগর মেলা। বাইশ জানুয়ারি বিধাননগর, কোন্নগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি পুরনিগমে ভোট। চিকিৎসকদের একাংশ পুরভোট আপাতত স্থগিত রাখার কথা বলেছেন। জমায়েত ও ভিড় এড়াতে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
![Park Street](https://kolkatatv.org/wp-content/uploads/2021/12/New-Project-22-300x157.jpg)
সংক্রমণের গতিবেগ নিয়েই চিন্তিত চিকিৎসকেরা। চিকিৎসক কুণাল সরকারের মতে, “চেহারা একেবারে বদলে ফেলেছে কোভিডের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট। সংক্রমণ বৃদ্ধির ক্ষমতা চার গুণ বাড়িয়েছে।’ চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীর মতে, ‘কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আরও দু’ সপ্তাহ পরে এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের চরিত্র বোঝা যাবে।’ বলেছেন, ‘শঙ্কার কারণ, ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ক্ষমতা এতটাই বেশি যে, তা ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
অতিমারী বিশেষজ্ঞ যোগীরাজ রায়ের পরামর্শ, ‘বাঁচতে হলে মাস্ক পরে ভাইরাসকে লকডাউন করুন।’ গত সাত আট দিনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানিয়েছেন, রোগীদের অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ছে না। এমনকি হাসপাতালগুলো যে একেবারে কোভিড রোগীতে ভরে গিয়েছে তাও নয়। যোগীরাজ রায়ের মতে, ‘গত বছরের ডিসেম্বরে সাতাশ-আঠাশ ডিসেম্বরের পর থেকে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।’ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কোভিড সংক্রমণের পর আট দিন থেকে চোদ্দ দিনের মধ্যে কোনও কোনও রোগীকে অক্সিজেন থেরাপি দিতে হয়। অর্থাৎ তৃতীয় ঢেউয়ে আদৌ অক্সিজেনের প্রয়োজন হবে কি হবে না, বা হলে কতটা হবে, তা বুঝতে আরও এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে চিকিৎসকদের।