বিষ্ণুপুর (বাঁকুড়া): মহিলা তৃণমূলের জনসংযোগ কর্মসূচিকে ঘিরেও প্রকাশ্যে এল দ্বন্দ্ব। বিধায়ক, চেয়ারম্যানকে নিয়ে তৃণমূল মহিলা সভানেত্রী ঘুরলেন একপথে। আর অন্যপথে ঘুরলেন তৃণমূল কাউন্সিলর। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের ১৬ নং ওয়ার্ডে এভাবেই ধরা পড়ল অন্তর্দ্বন্দ্বের ছবিটা। দলের ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বাদ দিয়ে তৃণমূল মহিলা সভানেত্রী বিধায়ক ও চেয়ারম্যানকে নিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচি পালন করলেন। অন্যদিকে, দলীয় কাউন্সিলর নিজের এলাকায় একাই সারলেন জনসংযোগ কর্মসূচি। এই ঘটনায় তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর ঠান্ডা লড়াই একেবারেই প্রকাশ্যে এল। এনিয়ে যথারীতি কটাক্ষ করতে ছাড়ল না বিজেপি।
গত শনিবার ১৬ নং ওয়ার্ডে জনসংযোগ কর্মসূচি পালন করা হয় বিষ্ণুপুর শহর মহিলা তৃণমূলের তরফ থেকে। বিষ্ণুপুর শহর মহিলা সভানেত্রী সঞ্চিতা পরামানিক বিধায়ক তন্ময় ঘোষ ও পুরসভার চেয়ারম্যান গৌতম গোস্বামীকে নিয়ে কর্মসূচি পালন করেন। বিধায়কের বাড়ি থেকে এই যাত্রা শুরু করে ১৬ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়ায়। যে ওয়ার্ডে শহর মহিলা তৃণমূল সভানেত্রী দলীয় বিধায়ক, চেয়ারম্যানকে নিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচি পালন করলেন সেই ওয়ার্ডের মহিলা তৃণমূল কাউন্সিলরের দেখা পাওয়া গেল না।
আরও পড়ুন: Weather Today: পৌষালি শীতে মনোরম বাংলা, পারদের ওঠাপড়াতেও উত্তুরে হাওয়ার খেলা
কাউন্সিলর টুম্পা দাস মহন্তের অভিযোগ শহরের মহিলা তৃণমূল সভানেত্রী ও বিধায়ক বিভাজনের রাজনীতি করছেন। মহিলা সভানেত্রী ও বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে কাউন্সিলের অভিযোগ, কাউন্সিলরের কোনও সম্মান নেই। বারবার বিভিন্নভাবে এলাকায় যাতে উন্নয়নের কাজ করতে না পারি, সেই চেষ্টা করে এলাকায় দ্বন্দ্ব লাগানোর চেষ্টা করছেন বিধায়ক। এদিন ডাক না পেয়ে নিজের মতো করে একাই দলের কয়েকজন মহিলা কর্মীকে নিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচি পালনও করেন কাউন্সিলর।
কোনও দ্বন্দ্ব নয় কাউন্সিলরকে বলা হয়েছিল। তিনি কেন আসেননি, সেটা বলতে পারব না বলেই পালটা দাবি করলেন বিষ্ণুপুর শহর মহিলা সভানেত্রী সঞ্চিতা পরামানিক। তবে তিনি বিধায়ক, চেয়ারম্যানকে নিয়ে আলাদা জনসংযোগ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে, সেটা তিনি স্বীকার করেন।
বিজেপির দাবি, বিধায়ক বিজেপি থেকে জিতে এখন তৃণমূলে যোগ দিয়ে তৃণমূলের দালালি করছেন। সেটা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই দ্বন্দ্ব হচ্ছে, এটাই স্বাভাবিক, জানালেন বিজেপির বিষ্ণুপুর নগর মণ্ডলের সভানেত্রী শুক্লা চট্টোপাধ্যায়।
সব মিলিয়ে দলের কাউন্সিলরকে বাদ দিয়ে জনসংযোগকে ঘিরে বিধায়ক ও দলের সভানেত্রীর বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে দলীয় কাউন্সিলর বুঝিয়ে দিলেন, বিষ্ণুপুরের তৃণমূলের অন্দরে ঠান্ডা লড়াই অব্যাহত রয়েছে। যাকে ঘিরে বিজেপিও শুরু করে দিয়েছে ঘোলা জলে মাছ ধরার রাজনীতি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শহর তৃণমূলের এই কোন্দল ভালোভাবে মেনে নিচ্ছেন না দলের অনেক নিচুতলা কর্মীরাও।