Monday, June 9, 2025
HomeআজকেAajke | রাজ্যপালের রাজা হওয়ার ইচ্ছে

Aajke | রাজ্যপালের রাজা হওয়ার ইচ্ছে

Follow Us :

মাফ করবেন কবীর সুমন। আজকের আলোচনার আগে আপনার গানের ক’টা লাইন না আউড়ে শুরুই করতে পারলাম না। কবীর সুমন লিখছেন,

ইচ্ছে হল এক ধরনের গঙ্গাফড়িং
অনিচ্ছেতেও লাফায় খালি তিড়িং বিড়িং
ইচ্ছে হল এক ধরনের বেড়ালছানা
মিহি গলার আবদারে সে খুব সেয়ানা
ইচ্ছে হল এক ধরনের মগের মুলুক,
ইচ্ছে হাওয়ায় অনিচ্ছেটাও দুলছে দুলুক
ইচ্ছে হল এক ধরনের আতসবাজি
রাতটাকে সে দিন করে দেয় এমন পাজি

ইচ্ছে ভালো জিনিস, ইচ্ছে ফুরিয়ে গেলে তো মানুষ ফুরিয়ে যায়। ইচ্ছে থাকা ভালো, কিন্তু বামন হয়ে চাঁদ ধরার ইচ্ছে? সেটা বড় সাংঘাতিক। সে বাতিক যাদের আছে তারা নিজেদের ইচ্ছের নাগাল পায় না। ছিলেন আমলা, দেশের প্রধানমন্ত্রীর বা তাঁর দলের মনে হয়েছে বেশ বাধ্য ছেলে তারপর হিন্দু সহবতও জানে বোঝে, অতিরিক্ত যোগ্যতা লালমোহন গাঙ্গুলি সুলভ কমিক মুখচ্ছবি আর চোখে অঞ্জন দত্ত সুলভ কালো চশমা ঝোলে ২৪ ঘণ্টা। তাই ওঁকে করা হল রাজ্যপাল। বাংলার বিশাল রাজভবনে কৈলাসে কেলেঙ্কারি, হনলুলুর হায়না, বাতিস্তার বাপ কিংবা ক্যাপ্টেন হ্যাডকের হাটবাজারের কথা পড়ে কাটিয়ে দিতে পারতেন, সেরকম ইচ্ছেও ছিল শুরুর দিকে। এসেই বলেওছিলেন বাংলা শিখবো, হাতেখড়ি দিতে চাই, বড়লোকের বখাটে ছেলেপুলের বায়না বাংলার মানুষ অনেক শুনেছে, ওঁরটাও শুনেছিলাম। কিন্তু ক’দিন যেতেই দিল্লিতে ডেকে ওঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওহে বাপু আড়াই ইঞ্চির যে কাঠিটা হাতে দিয়ে পাঠালাম সেটার প্রয়োগ কোথায়, সেটার ঠিকঠাক প্রয়োগের পরেই তো উপরাষ্ট্রপতি হওয়া যায়। ব্যস, চেগে গিয়েছেন শ্রীমান আনন্দ। পালা করে প্রতিদিন সকালে বিকেলে কাঠিবাজি চালিয়েই যাচ্ছেন, সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, রাজ্যপালের রাজা হওয়ার ইচ্ছে।
এমনিতে রাজ্যপালই হল ভারতীয় গণতন্ত্রের একমাত্র সাংবিধানিক পদ যার যোগ্যতার কোনও নির্দিষ্ট মাপকাঠি নেই। তিনি ২৫ বছরের উপরে হলেই হল, শিক্ষাদীক্ষা, জ্ঞান, মানুষের সমর্থন কিচ্ছুটির দরকার নেই, কেবল সরকারে আসীন ইউনিয়ন গভর্নমেন্টের পছন্দ হলেই হল। এই রাজ্যপাল নিয়ে আমার মতে সবচেয়ে লাগসই কথাটা বলেছিলেন দক্ষিণের নেতা আন্নাদুরাই। তিনি বলেছিলেন, রামছাগলের দাড়ি আর রাজ্যপাল পদ দুটোরই কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। রামছাগলের দাড়ি কেটে নেওয়া হলে বা রাজ্যপাল পদ তুলে দেওয়া হলে কারও কিচ্ছু যাবে আসবে না বরং রাজ্যের অনেকগুলো টাকা বেঁচে যাবে। 

আরও পড়ুন: Aajke | মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেন্ডিয়া 

ধনখড় বিদেয় হতে আমাদের কেউ কেউ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল, এরমধ্যেই এসে হাজির আনন্দ বোস, তিনি কেন বোস? জানা গেল নেতাজির ভক্ত ওঁর বাবা-মা নামের শেষে বোস লাগিয়ে দিয়েছেন। সন্দেহ তখনই হয়েছিল, ফেলুদাও নাকি বলেছিলেন, ব্যাপারটা ভালো লাগছে না রে তোপসে। তারপর কিছুদিন যেতে না যেতেই উনি বায়না ধরেছেন উনিই চালাবেন রাজ্য। উনিই বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ খরচা অনুমোদন করবেন, উনিই উপাচার্যদের নিয়োগ করবেন, উনিই রাজ্যের শান্তিশৃঙ্খলা দেখবেন। নিত্যনতুন বায়না আর তার সঙ্গে চোখা চোখা ডায়ালগ, কখনও ম্যাকবেথ থেকে কখনও জুলিয়াস সিজার থেকে ইদানিং কেউ রবিঠাকুরের কোট দেওয়ার জন্য নিযুক্ত হয়েছেন বলে আমার ধারণা। এখন, কেবল ধারণা প্রকাশ করলেও হত, ধারণা এক ধরনের প্রেসার কুকার, বেশি গরম হলে হুস করে বেরিয়ে যায়, দেশের শান্তি, দশের শান্তি। কিন্তু উনি আবার ধারণাতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চান না, সর্বক্ষেত্রে কাঁঠালিকলা হয়ে বিরাজমান হতে চান। শান্তি কক্ষ তৈরি করছেন শান্তি ট্রেন চালানোর কথা বলছেন, এবং সর্বত্র দেখতে পাচ্ছেন রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা। মণিপুরের বেলায় চোখে ন্যাবা, উনি কেবল মালদা দেখতে পাচ্ছেন, ওই যে ধারণা হুউউউস করে বের হচ্ছে। তো সেই হেন রাজ্যপাল যাদবপুরে ছাত্রের মৃত্যুর খবর পেয়েই চলে গেলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, ঘটনাচক্রে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। পুলিশ কুকুরের বহু আগেই ঘটনাস্থলে গিয়েই বুঝতে পারলেন রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মানে রাজ্য সরকারের উচিত প্রতিটা ছেলেমেয়ের পিছনে একটা করে পুলিশ রাখা, যিনি কিছু হলেই আটকাবেন। রাজ্যে র‍্যাগিং আটকানোর চেষ্টা নেই? কমিটি নেই? প্রচার নেই? প্রতিদিন র‍্যাগিংয়ে ছাত্র মারা যাচ্ছে? তাও নয়। একটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে উনি বিরোধী নেতার অনুপস্থিতিতে বিরোধিতার দায়িত্ব নিয়ে ফেলেছেন। আসলে সেই ইচ্ছে, পোড়ারমুখো ইচ্ছেকে কি আর চাপা যায়? ইচ্ছে হয়েছে রাজ্যপাল নয় রাজা হওয়ার, সেটাই ফুটে ফুটে বের হচ্ছে। আমরা আমাদের দর্শকদেরকে প্রশ্ন করেছিলাম, রাজ্যপাল নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রীদেরকে পিছনে ফেলে রাজ্য শাসনের দায়ভার নিজের হাতেই নিতে চাইছেন, এটা কতখানি যুক্তিযুক্ত? 

একটা আর্জি ছিল রাজ্যপাল সাহেব, আমাদের দেশের সংবিধান বলছে পাগল বা আদালতে দোষী সাব্যস্ত না হলে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ভোটাধিকার যেমন আছে, তেমনিই নির্বাচিত হওয়ার অধিকারও আছে। আপনার যখন এতই রাজা হওয়ার ইচ্ছে, তখন এই বাংলার যে কোনও বিধানসভা আসনে, যে কোনও লোকসভা আসনে দাঁড়িয়ে পড়ুন, জিতুন, তারপর রাজা বনে যান, পিস মার্চ করুন, পিস রুম বানান, যা ইচ্ছে করুন। কঠিন লাগছে? তাহলে এবার দাঁড়িয়ে আপনার জামানতটা অন্তত বাঁচিয়ে দেখান, এর পরেরবার লড়াইয়ের সময় কথা দিলাম আমি নিজে আপনার দেওয়াল লিখন লিখব। চেষ্টা করুন, চেষ্টা চালিয়ে যান।   

 

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Sheikh Hasina | ফের সরাসরি বক্তব্য রাখছেন হাসিনা, কী বলছেন শুনুন
03:02:26
Video thumbnail
Sheikh Hasina | এই প্রথম সরাসরি বক্তব্য রাখছেন শেখ হাসিনা, দেখুন Live
03:04:05
Video thumbnail
Dilip Ghosh | Suvendu Adhikari | দিলীপের প্রত্যাবর্তন, চাপে শুভেন্দু?
00:42
Video thumbnail
Rekha Patra | সন্দেশখালির শুভেন্দুর সভায় মঞ্চে নেই রেখা পাত্র, হঠাৎ কী হল? ফুলবদল কী সময়ের অপেক্ষা?
01:56
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | BJP | শুভেন্দুর আচরণে ক্ষু/ব্ধ বিজেপি কর্মীর স্ত্রী, কেন? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
02:32:54
Video thumbnail
Nitish Kumar | BJP | বিজেপি-নীতীশ জোট আদৌ টিকবে? আসন রফাতেই শুরু প্রবল ঝা/মেলা, দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Nitish Kumar | BJP | বিজেপি-নীতীশ জোট আদৌ টিকবে? আসন রফাতেই শুরু প্রবল ঝা/মেলা, দেখুন এই ভিডিও
02:57:19
Video thumbnail
Rekha Patra | Suvendu Adhikari | সন্দেশ শুভেন্দুর গলায় আটকে, মঞ্চে নেই রেখা, কী বলছে সন্দেশখালি?
06:40
Video thumbnail
Rekha Patra | Suvendu Adhikari | সন্দেশ শুভেন্দুর গলায় আটকে, মঞ্চে নেই রেখা, কী বলছে সন্দেশখালি?
00:00
Video thumbnail
TMC | দেশ ওপারে, ভোট এপারে, কাকদ্বীপ কাণ্ডে তদন্তের নির্দেশ তৃণমূলের
05:32