বদলি হয়েও ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের ভালোবাসা ও অনুরোধের টানে বদলি প্রত্যাহার করে নিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। অভাবনীয় এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ায় (Bankura)। এই ঘটনা রীতিমতো নজির তৈরি করেছে শিক্ষক সমাজে। বলা হয় শিক্ষক ও শিক্ষিকা (Teacher) সমাজ গড়ার কারিগর। বাবা-মায়ের পর আমাদের জীবেন তাঁদের অবদানই সবচেয়ে বেশি। ছোটো থেকে বড় হওয়ার পথে তাঁরাই আমাদের পথপ্রদকর্শক (Guide), সমাজের উপযোগী মানুষ হিসেবে তাঁরাই আমাদের গড়ে তোলেন।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের সিমলাপালা মাচাতোড়া ইউনিয়ন হাইস্কুলে ২০১৬ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলে আসছেন মনোরঞ্জন গোস্বামী। বাড়ি থেকে স্কুলে যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছিল তাঁর, সেই কারণে সম্প্রতি তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনলাইনে বদলির জন্য দরখাস্ত করেছিলেন। তাঁর বাড়ির কাছাকাছি রানীবাঁধের পুরানপানি হাইস্কুলে (High School) বদলির আবেদন (Request for Transfer) করেছিলেন তিনি। সেই আবেদন মঞ্জুরও হয়ে গিয়েছিল। মাচাতোড়া ইউনিয়ন হাইস্কুলে গত মঙ্গলবারই ছিল প্রধান শিক্ষক হিসেবে মনোরঞ্জন গোস্বামীর কাজের শেষ দিন। কিন্তু বিদায় বৈঠকে ছাত্রছাত্রীদের ভালোবাসার আবদার আর তিনি ফেলতে পারলেন না।
আরও পড়ুন: Supreme Court: মামলার শুনানিতে কেন দেরি? কৈফিয়ত তলব প্রধান বিচারপতির
স্কুলে বিদায় সংস্ক্রান্ত আলোচনার ফাঁকে ছাত্রছাত্রীরা বদলির খবর জানতে পারে। খবর পাওয়া মাত্রই প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন গোস্বামীকে ঘিরে ধরে যেতে দেব না বলে অনুরোধ জানাতে থাকে ছাত্রছাত্রীরা। বেশ অনেকটা সময় ধরে চলতে থাকে ভালোবাসা মেশানো সেই আবদার। শতচেষ্টা করেও তিনি ছাত্রছাত্রীদের দমাতে পারেননি। শেষমেশ ছাত্রছাত্রীদের আবদার এবং অনুরোধের সামনে নিজের সিদ্ধান্ত বদল করেন প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন গোস্বামী। বদলির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন তিনি। এই খবর চাওর হওয়ার পর অনেকেই বলছেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল যে একজন শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের কাছে কতটা প্রিয় হতে পারেন।