শিলং: গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত (North-East India) এখন সরগরম তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Election) নিয়ে। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরায় (Tripura) ভোট রয়েছে, তারপর ২৭ তারিখ ভোটগ্রহণ হবে নাগাল্যান্ড এবং মেঘালয়ে (Nagaland and Meghalaya)। দিনক্ষণ যত এগিয়ে আসছে, ততই মাইলেজ পাচ্ছে মেঘালয়ের নির্বাচন। গোটা দেশের নজর এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্যকে ঘিরে। রাজ্যে এই মুহূর্তে ক্ষমতায় রয়েছে মেঘালয়া ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (Meghalaya Democratic Alliance)। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কে জিতবে কিংবা ন্যাশনাল পিপল’স পার্টি (National People’s Party) ফের ক্ষমতায় বসবে কিনা, তা সময় এলেই জানা যাবে। কিন্তু বর্তমানে যে প্রশ্নটি এখন মেঘালয়ে রাজ্য রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে, তা হল মেঘালয়ের রাজনীতি কি দিনদিন পরিবারতান্ত্রিক (Dynasty Politics) হয়ে উঠছে? বিশেষ করে আগামী বিধানসভা নির্বাচন।
আরও পড়ুন: Meghalaya Assembly Elections 2023: ৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছালো মেঘালয়ে
২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের ক্ষমতাসীন (Incumbent) এবং বিরোধী দলগুলি (Oppositions) প্রার্থী তালিকা (Candidate Lists) ঘোষণা করেছে। ক্ষমতাসীন এনপিপি’ও দল ঘোষণা করেছে। আর সেই কারণেই প্রশ্নটি উঠতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের আশঙ্কা, মেঘালয়ের রাজ্য রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের ছাপ যত স্পষ্ট হয়ে উঠবে, রাজ্যের জন্য তা ভালো নাও হতে পারে।
কেন এই আশঙ্কা? রাজ্যে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ২০১২ সালে গঠিত হয়েছিল। সে বছর জুলাইতে এনসিপি (NCP) থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল পিএ সাংমাকে (PA Sangma)। তারপর তিনি এনপিপি দল গঠন করেন। ২০১৬ সালে পিএ সাংমা (Late PA Sangma) প্রয়াত হন। তারপর থেকেই দলের সমস্ত দায়িত্ব ও কার্যভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন পিএ সাংমার পুত্র কনরাড সাংমা (Conrad Sangma)। ২০১৮ সালে তিনি বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন এবং মুখ্যমন্ত্রীর (Chief Minister) কুর্সিতে বসেন। ২০১৮ সালে তাঁর ভাই জেমস সাংমা (James Sangma) পশ্চিম গারো পার্বত্য জেলা (West Garo Hills district) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এনপিপির টিকিটে। বর্তমানে তিনি ক্যাবিনেট মন্ত্রী (Cabinet Minister)। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এনপিপি এবার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক আমপারিন লিংডো (Ampareen Lyngdoh) এবং জেসমিন লিংডো (Dr Jasmine Lyngdoh)-কে টিকিট দিচ্ছে। দুই বোন এবার পূর্ব শিলং এবং নংথিম্মাই (East Shillong and Nongthymmai) বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। প্রথম দিনেই তাঁরা মনোনয়নপত্র (Nominations) জমা দিয়েছেন। ফলাও করে বলেছেনও, এটা তাঁদের পারিবারিক ট্র্যাডিশন। এমনকি বিজেপি নেতা আলেকজান্ডার লালু হেক (Alexander Laloo Hek) এবার নিজের ভাইপোর বিরুদ্ধেই ভোটে লড়বেন। এএল হেকের ভাইপো এনপিপির টিকিটে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন।
অন্যদিকে, বাংলায় ক্ষমতাসীন তৃণমূলও (TMC) এবার মেঘালয়ে নজর দিয়েছে। কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের সদস্য এবং রাজ্যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা (Mukul Sangma) ২০২১ সালে সর্বভারতীয় তৃণমূলে (AITC) যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতা। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর কন্যা, স্ত্রী ও ভাই প্রার্থী হচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৯টি দখল করেছিল এনপিপি। এরপর বিজেপি (BJP) এবং অন্যান্য দলের সহযোগিতায় সরকার গঠন করে তারা। কনরাড সাংমা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তারপর। সেই বছরই মে মাসে উইলিয়ামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে (By-Election) জয়লাভ করে এনপিপি। বর্তমানে মেঘালয় বিধানসভায় তাদের মোট আসন সংখ্যা ২০।