কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: কবি লিখেছিলেন অনন্ত নক্ষত্রবীথি তুমি অন্ধকার। ব্রহ্মাণ্ডের সেই সুদূরতম অন্ধকারে আলো জ্বেলে দিল নাসা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। পৃথিবী থেকে কয়েক হাজার লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে, আমাদের ছায়াপথ ছাড়িয়ে মহাশূন্যের অজানা দিকের ছবি তুলে তাক লাগিয়ে দিল। প্রথমবারের জন্য এত স্পষ্ট করে পৃথিবীর মানুষ দেখতে পেল গ্যালাক্সি ক্লাস্টার এসএমএসিএস- জিরো সেভেন টু থ্রি-কে।
কাকে বলে এই গ্যালাক্সি ক্লাস্টার? কীভাবে এর ছবি তোলা সম্ভব হল? ক্লাস্টার গ্যালাক্সি হচ্ছে ছায়াপথের ঝাঁক। মহাশূন্য তৈরির আদি অবস্থা জানতে, ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদিকথার শিক্ষা নিতে গত বছরের শেষে মহাশূন্য পাঠানো হয়েছে জেমস স্পেস টেলিস্কোপকে। প্রচণ্ড শক্তিশালী এক দূরবীক্ষণ যন্ত্র। যে যন্ত্র পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়িয়ে, সৌরলোকের একটা নির্দিষ্ট অবস্থান থেকে মহাশূন্যের ছবি তুলতে ব্যস্ত।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা, ইওরোপের স্পেস এজেন্সি এবং কানাডার স্পেস এজেন্সি। এই তিন সংস্থা মিলে তিলে তিলে দিনরাতের অক্লান্ত পরিশ্রমে তৈরি করেছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। মহাশূন্যের ছবি তুলতে কুড়ি বছরের অভিযানে পাঠানো হয় এই টেলিস্কোপকে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে পৃথিবী ছেড়ে মহাকাশ পাড়ি দেয় জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। এই মুহূর্তে পৃথিবী থেকে পনেরো লক্ষ কিলোমিটার দূরে যার অবস্থান। সেখান থেকেই গ্যালাক্সি ক্লাস্টার এসএমএসিএস- জিরো সেভেন টু থ্রি-এর ছবি তুলে পাঠিয়েছে জেমস ওয়েব।
ঐতিহাসিক সেই ছবি প্রকাশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইনফ্রারেড প্রযুক্তির সাহায্যে তোলা সেই ছবি দেখে তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন তাবড় মহাকাশ বিজ্ঞানীরাও। এত গভীরতম মহাশূন্যের এত স্পষ্ট ছবি এর আগে কখনও দেখতে পাওয়া যায়নি। এক ঝাঁক ছায়াপথকে এভাবে লেন্সবন্দি করা যায়নি এর আগে। যদিও বিজ্ঞানীরা বলছেন, অনন্ত মহাশূন্যের এ এক সামান্য বালি কণা মাত্র। আর কিছু না।