মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের (immersion) সময় হড়পা বানে মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করল বিজেপি ৷ মৃতদের পরিবার পিছু ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ও সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবিও তুলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল৷ শুক্রবার ফালাকাটার বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মনের নেতৃত্বে কয়েকজন বিধায়ক ও সাংসদের একটি প্রতিনিধিদল অকুস্থলে যায়। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা ৷
পরে সাংবাদিক বৈঠকে (press conference) ওই প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে দীপক বর্মন বলেন, ওই ঘটনার আমরা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত (investigation) দাবি করছি৷ তাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দফতরের বিশেষজ্ঞদের (expert) রাখতে হবে৷ হড়পা বানে মৃত্যুর ঘটনাকে তিনি সরাসরি খুনের সঙ্গে তুলনা করেন। বিধায়ক বলেন, এটা ম্যান মেড ডিজাস্টার ৷ তাঁর আশঙ্কা, অনেকের দেহ সেই রাতে উদ্ধার করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ বিজেপি প্রতিনিধিদলের আরও অভিযোগ, স্থানীয় মহকুমা শাসক এবং পুরসভা এই ঘটনায় দায়ী৷ মাল নদীর গতিপথ বাঁধ দিয়ে আটকে তাঁরা বেআইনিভাবে বিসর্জনের ব্যবস্থা করেছেন৷ তাই এই ঘটনার দায় তাঁরা এড়াতে পারেন না৷ নদীর গতিপথ আটকানোর অভিযোগ তুলেছে সিপিএম-ও৷
জেলা প্রশাসন অবশ্য ওই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে৷ জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, নদীর গতিপথ বদলানোর অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি প্রাথিমক তদন্তে৷ নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য নদীর একটি নির্দিষ্ট অংশে চ্যানেল তৈরি করা হয়েছিল৷ জেলাশাসকের দাবি, ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা ছিল, পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমও ছিল৷ হাজির ছিল অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী, পুলিস এবং পুরসভার স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী৷ তার জন্যই আরও বড় মাপের বিপর্যয় এড়ানো গিয়েছে৷ ওই দুর্ঘটনার জন্য এদিন জেলার পুজো কার্নিভালও বাতিল করা হয়েছে৷
এদিন ওই বিজেপি প্রতিনিধদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন হারানো লোকজন। তাঁদের কয়েকজনের অভিযোগ, স্থানীয়দের উদ্ধার কাজে নামতে দেওয়া হয়নি। পুলিস (police) লাঠিচার্জ করেছে। ওই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর ক্রমশ বাড়ছে।
শুক্রবার পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চালিয়ে ৮ জনের দেহ (dead body) উদ্ধার (rescue) করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছন বেশ কয়েকজন। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, আহত ১৩ জনের মধ্যে নয় জনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪ জনও ভালো আছেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বারবার মাইকে প্রচার করে নিষেধ করা সত্ত্বেও নদীতে নেমেছিলেন বহু মানুষ।