মল্লিকার্জুন খড়গে দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কংগ্রেসের সাংগঠনিক রদবদল শুরু হয়ে গেল। বুধবার দলের ওয়ার্কিং কমিটির সব সদস্য এবং এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক ও অন্য কর্মকর্তারা নতুন সভাপতি মল্লিকার্জুনের কাছে ইস্তফাপত্র পেশ করেন। দলীয় সূত্রের খবর, এরপরে এআইসিসি সদস্য পদেও নির্বাচন হবে। সদস্যরা ইস্কফা দেওয়ার ফলে ওয়ার্কিং কমিটি কার্যত ভেঙে গেল। তার বদলে গড়া হল স্টিয়ারিং কমিটি। এই কমিটিতে মল্লিকার্জুন ছাড়াও মোট ৪৭ জনের নাম রয়েছে।
স্টিয়ারিং কমিটিতে নাম নেই শশী থারুর এবং অশোক গেহলটের। থারুর সভাপতি নির্বাচনে মল্লিকার্জুনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তিনি এক হাজারের সামান্য বেশি ভোট পেয়েছেন। গান্ধী পরিবার প্রথম থেকেই সভাপতি পদে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের নাম ভেবে রেখেছিল। কিন্তু গেহলট রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে নারাজ ছিলেন। ওই মরু রাজ্যের কুর্সি তাঁর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী সচিন পাইলটকে ছাড়তে তীব্র আপত্তি ছিল তাঁর। গেহলট গান্ধী পরিবারকে জানিয়েছিলেন, তিনি দুটি পদেই থাকতে চান। তার মধ্যেই রাজস্থানে গেহলটের অনুগামী বিধায়করা বিদ্রোহ করে বসেন। তাঁদের দাবি ছিল, বিশ্বাসঘাতক পাইলটকে কিছুতেই মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসানো চলবে না। তাঁরা দিল্লি থেকে পাঠানো দুই পর্যবেক্ষকের ডাকা বৈঠক পর্যন্র বয়কট করেন। তাতে সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী ক্ষুব্ধ হন। গেহলটকে দিল্লিতে ডেকে তাঁরা এই ক্ষোভের কথা জানিয়ে দেন। গেহলট বোঝানোর চেষ্টা করেন, বিধায়কদের বিদ্রোহের পিছনে তাঁর কোনও হাত ছিল না। কিন্তু গান্ধী পরিবার তা বিশ্বাস করতে চায়নি। তখনই পরিষ্কার হয়ে যায়, গে্হলটের কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার সুযোগ আর রইল না। হলও ঠিক তাই। সভাপতি পদে গান্ধী পরিবারে্র ইচ্ছা অনুযায়ী প্রার্থী হলেন মল্লিকার্জুন। তিনি জিতলেনও বিপুল ভোটে।
নয়া স্টিয়ারিং কমিটিতে বিক্ষুব্ধ জি ২৩ গোষ্ঠীর পরিচিত নেতাদের মধ্যে রাখা হয়েছে কেবল আনন্দ শর্মাকে। শশীও এই শিবিরের অন্যতম মুখ। তাঁকে কমিটিতে রাখা হয়নি। একইভাবে বাদ রাখা হয়েছে গেহলটকে। কংগ্রেসের অন্দরের খবর, এর মাধ্যমে প্রবীঁণ এই নেতাকে বুঝিয়ে দেওয়া হল, দলে বিদ্রোহীদের কোনও স্থান নেই। কমিটিতে রাখা হয়নি হরিয়ানার জাঠ নেতা আর এক বিক্ষুব্ধ ভূপেন্দ্র সিং হুডাকেও। তালিকায় স্থান হয়নি বিক্ষুব্ধ মণীশ তিওয়ারির।
এদিন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল দাবি করেন, ওয়ার্কিং কমিটি এবং এআইসিসি সদস্যদের ইস্তফা দেওয়ার মধ্যে কোনও চমক বা নতুনত্ব নেই। কংগ্রেসের এটাই রীতি। যখন নতুন কেউ সভাপতি হন, তিনি তাঁর মতো করে টিম গঠন করেন। এআইসিসির সব সদস্যই স্টিয়ারিং কমিটিতে রয়েছেন।
এদিন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি এবং সংসদীয় দল বৈঠকে বসে। সেখানে গুজরাতের বিধানসভা ভোট নিয়ে কথা হয়। আলোচনা হয়েছে হিমাচল প্রদেশের ভোট নিয়ে। নয়া সভাপতি মল্লিকার্জুনের কাছে এই দুই রাজ্যের বিধানসভা ভোটই এখন বড় চ্যালে়ঞ্জ।