কলকাতা: ভাগ্যদেবতা সঙ্গ দিলে সব সম্ভব। নিজেদের সেরা ফুটবলের ধারে-কাছেও এদিন ছিলেন না লাল-হলুদ ফুটবলাররা। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও দুরন্ত জয়। রুদ্ধশ্বাস ডুরান্ড সেমিফাইনালে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে টাইব্রেকারে(৫-৪) হারিয়ে ফাইনালে যাওয়ার ছাড়পত্র আদায় করে নিল ইস্টবেঙ্গল। দিনের শেষে মঙ্গলবারের যুবভারতীর রঙ ‘লাল-হলুদ’।
ম্যাচের শুরুতে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণের ভগ্নদশা প্রকট হয়ে ওঠে। নর্থইস্ট উইনাইটেডের একাধিক আক্রমণে প্রায় কালঘাম ছোটে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডারদের। ২২ মিনিটের মাথায় চমক দেখায় নর্থইস্ট। বাঁ প্রান্তে বক্সের বাইরে বল পান ফাল্গুনি। ফিতরে ঢুকে রক্ষণের উপর দিয়ে বক্সের ভিতরে বল ভাসিয়ে দেন তিনি। লাল-হলুদ ডিফেন্ডারকে ঘাড়ের কাছে নিয়ে হেডে গোল করেন জাবাকো। এগিয়ে যায় নর্থইস্ট। গোল শোধ করার সুযোগ পেয়েছিলেন জাভিয়ের সিভেরিয়ো। কিন্তু নাওরেমের ক্রস নামাতে পারেননি তিনি।
ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায় আক্রমণের ঝাঁঝ একটু বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। ৩৬ মিনিটের মাথায় বক্সে ভাল জায়গায় বল পান মন্দার। সরাসরি গোলরক্ষক মিরশাদের হাতে মারেন তিনি। কিন্তু গোল করা থেকে ব্যর্থ হন।প্রথমার্ধের বাকি সময়ে গোল করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। মাঝেমধ্যেই ফুটবলারেরা চোট পাওয়ায় খেলায় বিঘ্ন ঘটছিল। শেষ পর্যন্ত ০-১ গোলে পিছিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল-হলুদ ব্রিগেড।
দ্বিতীয়ার্ধে ৫৬ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে লম্বা বল ধরে গোল করেন নর্থইস্টের ফাল্গুনি। ইস্টবেঙ্গলের গোটা রক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখছিল। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় নর্থইস্ট। গোটা ম্যাচে কিছুতেই মাঝমাঠের দখল নিতে পারছিলেন না লাল-হলুদ ফুটবলারেরা। ভুল পাসের কারণেই দখল হারাচ্ছিলেন তাঁরা।
৭৬ মিনিটের মাথায় এক গোল শোধ করে ইস্টবেঙ্গল। ক্লেইটন সিলভার ক্রস থেকে নাওরেমের শট নর্থইস্টের ডিফেন্ডার দীনেশ সিংহের পায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে গোলে ঢুকে যায়। গোল করার পর চাপ আরও বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। ক্লেইটন ভাল খেলছিলেন। তিনি নামায় আক্রমণের চাপ বাড়াচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল। উল্টো দিকে গোল খেয়ে সম্পূর্ণ ভাবে রক্ষণাত্মক খেলা শুরু করে নর্থইস্ট। তাতে আরও চাপে পড়ে যায় তারা। অন্তিম লগ্নে ত্রাতা আবারও সেই ডার্বির নায়ক নন্দকুমার। সংযুক্তি সময়ে শেষ মুহূর্তে হেডে গোল করে সমতা ফেরান তিনি।
এরপর টাইব্রেকারে ইস্টবেঙ্গলের নায়ক হয়ে ওঠেন গোলকিপার প্রভসুখন গিল। এই জয়ের সঙ্গে ১৯ বছর পর আবারও ডুরান্ড জয়ের স্বপ্নে বিভোর লাল-হলুদ সমর্থকেরা। প্রতিপক্ষ যদি মোহনবাগান হয় তাহলে তো কোনও কথাই নেই…