পুরুলিয়া : রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Vote) আর দেরি নেই। আসন্ন সেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলকে(TMC) বয়কটের ডাক দিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ (Adibasi Kurmi Samaj) । একইসঙ্গে কোনও রাজনৈতিক (Political) দলের মিটিং, মিছিল ও প্রচারে সামিল হবে না আদিবাসী কুড়মি সমাজ । পুরুলিয়া শহরে অবস্থিত আদিবাসী কুড়মি সমাজের দলীয় কার্যালয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করলেন সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাতো (Ajitprosad Mahato) । তিনি বলেন, কুড়মি সম্প্রদায়কে এসটি (ST)তালিকাভুক্তির দাবিতে সিআরআই (CRI) কমেন্ট ও জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট পাঠানোর ক্ষেত্রে টালবাহানা করছে রাজ্য সরকার । বিগত দিনে আদিবাসী কুড়মি সমাজের রেল রোকো আন্দোলনেও কোনওরকম সদর্থক ভূমিকা পালন করেনি রাজ্য সরকার । এরই প্রতিবাদে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল দলকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ । এছাড়াও বাকি রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষেত্রে মিটিং মিছিল ও প্রচারে এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অংশ নেবে না আদিবাসী কুড়মি সমাজ ।
আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাতো সোমবার বলেন, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল আমরা বান্দোয়ানে দুদিন বৈঠক করেছি। সেখানে আলোচনা হয়েছে। চারটি রাজ্যের কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা শাসকদলকে মোটেই সমর্থন করছি না। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকার তলে মিছিলে, মিটিংয়ে কেউ যাবে না। আমাদের রেলরোকো আন্দোলনে তারা কোনও সদর্থক ভূমিকা নেয়নি।
আরও পড়ুন: Jiban Krishna Saha | গ্রেফতারের পরই উদ্ধার জীবনের দ্বিতীয় মোবাইল
উল্লেখ্য, মুখ্যসচিবের সঙ্গে কুড়মি সমাজের বৈঠকে মেলেনি কোনও সমাধানসূত্র। আদিবাসী কুড়মি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্ত করা, সারনা ধর্মের স্বীকৃতি, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা-সহ একাধিক দাবিতে কুড়মি সমাজ অনেক দিন ধরেই আন্দোলন করছে। সম্প্রতি তারা রেল এবং রাস্তার রোকো আন্দোলনে নামে। চারদিন পর তাদের অবরোধ ওঠে। মঙ্গলবার ওই সব দাবিতেই কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গ নবান্নে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠকে বসে। রাজেশ মাহাতর নেতৃত্বে ২০ জনের এক প্রতিনিধিদল ওই বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠক থেকে বেরিয়ে রাজেশ বলেন, এই বৈঠকে আমরা খুশি নই। আমাদের দাবি দেওয়ার বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট আশ্বাস মেলেনি। কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।
কুড়মিদের অভিযোগ, ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকারকারের কাছে রাজ্যের তরফে একটি সিআরআই রিপোর্ট গিয়েছিল। তার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৩ সাল পর্যন্ত জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট পাঠাতে বললেও রাজ্য সরকার তা পাঠায়নি। এর আগে ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রক তা মনে করিয়ে দিলেও রাজ্য সরকার ২০১৭ সালের একটি পুরনো রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয়।