Friday, June 6, 2025
Homeকলকাতাধৃত বাংলাদেশি মহ্ফুজুর রহমানের পাক-যোগ? তদন্ত লখনউ ATS

ধৃত বাংলাদেশি মহ্ফুজুর রহমানের পাক-যোগ? তদন্ত লখনউ ATS

Follow Us :

কলকাতা: মাহ্ফুজুর রহমান (Mahfuzur Rahman)। আনন্দপুর থানা (Anandapur Police Station) এলাকা থেকে ধৃত কিং-পিন। মাহ্ফুজুরকে (Lucknow Anti-Terrorism Squad)  আড়কাঠিও বলা চলে। লক্ষ লক্ষ টাকার মাধ্যমে এক দেশ থেকে আর এক দেশে মানুষ পাচার করাই তার কাজ। এ বারও সতেরো জন বাংলাদেশিকে (Bangladeshi Arrested)  ভারতে বা পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি ভাবে এনেছিল মাহ্ফুজুর।

অভিযোগ ধৃত বাংলাদেশিদের জাল ভোটার আইডি, প্যান কার্ড, আধার কার্ড ইত্যাদি তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে মাহ্ফুজুর। ঠিক ছিল এই সব জাল পরিচয় পত্র দেখিয়েই বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজনীয় পাসপোর্ট বা ভিসার আবেদন করা হবে। পেয়ে গেলেই বিদেশে পাচার করা হবে বেআইনি ভাবে প্রবেশ করা বাংলাদেশিদের। কিন্তু শুধুই কি বিদেশে পাচারের পরিকল্পনা না কি আরও গভীর কোনও ষড়যন্ত্র? এটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারী সংস্থাকে। লখনউ পুলিসের জঙ্গি দমন শাখা মাহ্ফুজুরকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিতে চাইছে। লখনউ নিয়ে গিয়ে জেরা করা হবে তাকে।

আরও পড়ুন: Bangladeshi Arrest: আনন্দপুরের ওই বাড়িতে চলত মাদ্রাসা, পুলিস খুঁজছে কওসরকে

গুলশন কলোনির এই বাড়িতেই ডেরা বেঁধে ছিল ধৃত বাংলাদেশিরা                                                                                        

ধৃত বাংলাদেশিদের সঙ্গে পাক-যোগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। জানা গিয়েছে, ধৃতেরা হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে কথা বলত। কাদের সঙ্গে কথা হত, কী কী ভাষায় কথা হত সে সমস্তও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। ধৃত মাহ্ফুজুরের কাছ থেকে প্রচুর জাল নথি উদ্ধার করা হয়েছে। সে গুলো থেকেও বিভিন্ন সূত্র খুঁজছেন গোয়েন্দারা। লখনউ পুলিসের জঙ্গি দমন শাখার ইনপুট পেয়ে কলকাতা পুলিস আনন্দপুর থানা এলাকার গুলশন কলোনির এল-আটত্রিশ নম্বরের ঠিকানায় হানা দেয়। মোট সতেরো জন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করে। যারা জাল ভারতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে বিদেশে পালানোর ছক কষেছিল।

আরও পড়ুন: Bangladeshi Arrest: অনুপ্রবেশকারী ১৭ বাংলাদেশির ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিস হেফাজত

চৌবাগার এই এলাকাটা অপরিচ্ছন্ন। পাকা রাস্তা নেই। বৃষ্টি নেই অথচ জল জমে। দিনের বেলাতেই টিমটিমে আলো জ্বলছে। সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টার শুনেই মুখ লুকোচ্ছেন বাসিন্দারা। দরজা বন্ধ করে দিচ্ছেন। এত বড় ঘটনা কিন্তু অনেকেই বলছেন, ‘না তাঁদের কিছু জানা নেই।’ এ কথা যখন বলছেন, তখন চোখে মুখে উৎকন্ঠার ছাপ। কথা শুনে মনে হয় কিছু আড়াল করার চেষ্টা করছেন। সামনেই একটা পানের দোকান। পরিচয় দিলাম। অবাঙালি এই পান বিক্রেতার দোকান থেকে নিয়মিত টুকিটাকি কেনাকাটা করত সন্দেহভাজন বাংলাদেশিরা। পান বিক্রেতার কাছ থেকে জানা গেল, এক সঙ্গে সতেরো জন বাড়ির বাইরে বেরোতো না। দোকানে এসে বাংলায় কথা বলতেন। কিন্তু সেই বাংলা পানবিক্রেতা বুঝতে পারতেন না। আর প্রত্যেকেই খুব পান খেত।

এল-আটত্রিশ নম্বরের ঠিকানা পৌঁছলাম। এখানকার সব বাড়ি গুলোই প্রায় একরকম। কোনওরকম কলাম ছাড়াই উঁচু আবাসন। দেখেই মনে হয় বেআইনি নির্মাণ। বিল্ডিংয়ের দু’তলার একটি ঘরে থাকতেন ধৃতেরা। একটাই ঘর। লম্বা মতন। এর মধ্যেই গাদাগাদি করে কুড়ি জনের বেশি আবাসিক থাকতেন। যাঁদের অধিকাংশেরই কোনও বৈধ পরিচয় পত্র ছিল না। দেড় মাস ধরে তাঁরা এ খানে থাকতেন। ফ্ল্যাটে একটাই বাথরুম। আর রান্নাঘর। বাড়ির মালিক কওসর। তাঁকে খুঁজছে পুলিস। প্রশ্ন উঠছে কী ভাবে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই এত জন বাংলাদেশিকে ভাড়া দেওয়া হল? তা হলে কি এই এলাকায় বেআইনি ভাড়া দেওয়ার চল রয়েছে? গুলশন কলোনির ওই বাড়ির অন্যান্য বাসিন্দারাও মুখ খুলতে নারাজ। বললেন, ‘দোতলার দরজা বেশির ভাগ সময়ই বন্ধই থাকত।’ তাঁদের কথায় জানা গেল, বাংলাদেশিরা নিজেদের পেশায় কম্বল বা জ্যাকেটের ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছিল।

সত্যিই কী উদ্দেশ্যে এত জন বাংলাদেশের নাগরিক গুলশন কলোনিতে ডেরা বেঁধেছিল? কী ভাবে পাসপোর্ট ভিসা না থাকলেও সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতা এসে পৌঁছল। মহফিজুর রহমান, যাঁর সাহায্যে বেআইনি ভাবে এতো জনের অনুপ্রবেশ, তিনি কে? কী ভাবে জাল ভোটার আই-কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড জোগাড় করল ধৃতেরা? এ রকম অনেক গুলো গুরুতর প্রশ্ন উঠছে গুলশন কলোনিকে ঘিরে।

RELATED ARTICLES

Most Popular