কলকাতা: মহা সমারোহে শুরু হল বাবুলাল আগরওয়াল ধর্মশালাতে রাজরাজেশ্বরী মায়ের পুজো (Rajrajeswari Mayer Puja)। প্রচুর সাধারণ মানুষের সমাগম। ১৬৭ বছর আগে গত ৩ মে বড়বাজারে সুতো ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে শুরু হয়েছে এই সুতোপট্টি বারোয়ারি শ্রী শ্রী রাজরাজেশ্বরী মায়ের পুজো। দীর্ঘদিন ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। পুজো চলবে আগামী ১০ মে পর্যন্ত। বিশিষ্টদের মতে, শ্রী শ্রী রাজরাজেশ্বরী মা হলেন দুর্গার (Durga) আরেক রূপ। তিনি ত্রিপুরা সুন্দরী। মহাদেবের নাভি থেকে উঠেছে পদ্ম এবং সেই পদ্মের উপরে বিরাজমানা শ্রী শ্রী রাজরাজেশ্বরী মা। মা চতুর্ভুজা। তাঁর চার হাতে শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্ম। মায়ের একেবারে সামনে দুটি শ্বেত হস্তি। মায়ের দুই ধারে দুই সখী জয়া, বিজয়া। মহাদেবের (Mahadev) নীচে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-রুদ্র এবং পঞ্চানন শিব। ঐতিহ্য মেনে এই পুজো হয়।
এখানে দেবীর দুই পাশে রামায়ণ (Ramayan) এবং মহাভারতের (Mahabharat) নতুন নতুন পর্ব তুলে ধরা হয়। এই বছর রামায়ণে সোনার হরিণ (Sonar Horin) দেখানো হয়েছে। এবং মহাভারতের দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ দেখানো হয়েছে। তা দেখতে মানুষের কৌতূহল চোখে পড়ার মতো। মা এখানে অন্ন গ্রহণ করেন না। আগে মায়ের ভোগ তৈরি হত গঙ্গা জলে এবং ভালো ঘি দিয়ে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গঙ্গা জল দূষিত হওয়ায় নামমাত্র গঙ্গা জল দিয়ে ভোগ তৈরি হয়। মা ঘি দিয়ে তৈরি লুচি, পটল ভাজা, খাস্তা কচুরি, মিষ্টি গজা, দরবেশ এবং সন্দেশ খান। প্রত্যেকদিন মায়ের পুজোতে মিষ্টি দই, চন্দন ক্ষীর দিতে হয়।
আরও পড়ুন: Shantiniketan | কাঁটাতার শিল্প-সংস্কৃতির পথে বাধা হতে পারে না, একমত দুই বাংলার বুদ্ধিজীবীদের
৮ মে কুমারী পুজো অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে প্রায় ১০০ জন কুমারীকে পুজো করা হবে। তা এখানকার পুজোর অন্যতম আকর্ষণ। ৯ তারিখ মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। এবং ওই দিন সন্ধেয় সব সুতো ব্যবসায়ীদের নিয়ে এক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ১০ তারিখ দরিদ্র নারায়ণ সেবার ব্যবস্থা করা হয়। অন্ন গ্রহণের ব্যবস্থা থাকে। তারপরে মায়ের বিসর্জন। কলকাতার চিৎপুর রোড এবং হ্যারিসন রোডের ক্রসিংয়ে বাবুলাল আগরওয়াল ধর্মশালাতে এই পুজোটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে মাকে দর্শন করতে যেতেই পারেন এবং ভোগ গ্রহণ করতেই পারেন। সেখানকার পুজো উদ্যোক্তারা আহ্বান জানিয়েছেন, সবাই যাতে এই পুজো দেখতে যান।