ইসলামাবাদ: পাকিস্তানে এই মুহূর্তে খাদ্য সঙ্কট (Food Crisis) চলছে এবং দিনদিন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ (Grimmer) আকার নিচ্ছে। অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে গমের ঘাটতি (Wheat Shortage) দেখা দিয়েছে। দ্য পাকিস্তান মিলিটারি মনিটর (The Pakistan Military Monitor – PMM) তাদের প্রকাশিত রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এর ফলে দেশে নৈরাজ্যের (Anarchy) সৃষ্টি হতে পারে। আন্তর্জাতিক মহলের বক্তব্য, ভারতের প্রতিবেশী দেশে খাদ্য সঙ্কট তৈরি হয়েছে এবং দিন দিন তা যে পথে মোড় নিচ্ছে, তাতে আগামী দিনে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি দেখা দিলে, তা পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক সরকারের (Democratic Government of Pakistan) আয়ত্তের বাইরে চলে যাতে পারে।
আরও পড়ুন: Modi Government | মোদি সরকারের ৫ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির স্বপ্ন ‘জুমলা বাজি’ ছাড়া আর কিছুই নয়
২০২২ সালে পাকিস্তানে ভয়ানহ বন্যা পরিস্থিতি (Flood Situation) দেখা দিয়েছিল। তারপর থেকে সেদেশে আর্থিক পরিস্থিতি (Economical Situation) ক্রমশ খারাপের দিকে মোড় নিয়েছে। গরিবি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, মুদ্রাস্ফীতির (Inflation) নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। দেশে কোনও বিদেশি বিনিয়োগ (Foreign Investment) না থাকায় একের পর এক ইউনিট এবং কারখানা (Unit and Factories) বন্ধ হচ্ছে, যার জেরে লোকজন কর্মহারা (Unemployed) হয়ে পড়েছেন। মানুষের কাছে টাকা নেই, অভুক্ত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বিনামূল্যে খাদ্যবিলির স্থানে পদপিষ্ট (Stampede) হওয়ার ঘটনা ঘটছে। যে কোনও সমাজের জন্য কোনও বিপর্যয় তখনই সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে, যখন সমাজের দুর্বল শ্রেণি (Weaker Section of the Society) প্রভাবিত হয়। পাকিস্তানেও এখন সেই অবস্থা চলছে। পাক সরকারের কাছে বর্তমান পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার কোনও রাস্তা নেই। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (International Monetary Fund – IMF) আর্থিক সাহায্য করবে বলেছে, কিন্তু তার জন্য কয়েক দফা শর্ত চাপানো হয়েছে। ওইসব শর্ত পূরণ করতে পারলে, তবেই মিলবে আইএমএফের আর্থিক সাহায্য। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল যেসব শর্ত চাপিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো, সাধারণ জনগণের আরও কর আরোপ (Imposing More Taxes) করা। এর ফলেই পাকিস্তানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া হয়ে পড়েছে।
পেট ভরানোর জন্য সাধারণ খাদ্যদ্রব্যের দাম এতটা বেড়েছে যে এবার ঈদের (Eid) সময় সাধারণ পাক জনগণ প্রায় অনাহারে কাটিয়েছে। গরিব মানুষ আগে যেখানে উপোসের পর শ্রেফ সিঙাড়া (Samosa), পকোড়া (Pakoda) খেয়েই পেট ভরাতেন, এখনও তাও দুর্মূল্য হয়ে উঠেছে। খবরে প্রকাশ, পাকিস্তানের গরিব জনতা এখন সাধারণ খাবারের দোকানে পড়ে থাকা আগের দিনের বাসি খাবার (Left Overs) খেয়ে পেট ভরাতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতিদিন গোটা দেশে একটাই ছবি, লক্ষ লক্ষ মানুষ সরকারি খাদ্যবণ্টন দোকানের সামনে সারাদিন দাঁড়িয়ে রয়েছেন লাইন দিয়ে, কিন্তু তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগকেই খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। ভর্তুকি দেওয়া সরকারি গম (Subsided Wheat) যাও বা আসছে, তাও সাধারণের মানুষের কাছে পৌঁছানোর আগেই কালোবাজারে (Black Market) বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। ধনী ব্যক্তিরাই সেসব জিনিস কিনছেন। পাকিস্তান ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিক্স (Pakistan Bureau of Statistics) প্রকাশিত সর্বশেষ সেনসিটিভ প্রাইস ইন্ডিকেটর (Sensitive Price Indicator – SPI) বলছে, ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তানে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে ৪৭.২ শতাংশ।