কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Poll) পরই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রভোট (Student Election) হবে বলে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Education Minister Bratya Basu)। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। আমাদের কাছে সেটিই প্রথম অগ্রাধিকার। পঞ্চায়েত ভোট শেষ হলে ছাত্রভোট হবে। তিনি জানান, তবে সব প্রতিষ্ঠানে একসঙ্গে ভোট করানো হবে না। জোন (Zone) ভাগ করে ছাত্রভোট হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Chief Minister Mamata Banerjee) সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, এখনও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়নি।
এর আগে একাধিকবার শিক্ষামন্ত্রীকে ছাত্রভোটের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। বারবারই তিনি জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানানো হবে। এখনও তাঁর সঙ্গে কথা বলা হয়নি।
গত প্রায় ছয় বছর ধরে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে (College and University) ছাত্র সংসদের ভোট হয়নি। সরকার বিরোধী দলগুলি (Opposition Parties) ছাত্রভোটের দাবিতে আন্দোলন করলেও সরকার ভোট করায়নি। গত দেড় দুই বছরের মধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুটিকয় প্রতিষ্ঠানে ছাত্রভোট হয়েছে। নির্বাচিত ছাত্র সংসদের দাবিতে মাসদুয়েক আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়ারা অনশন আন্দোলন করেন। পরে ডাক্তারি ছাত্ররা নিজেদের উদ্যোগেই ছাত্র সংসদের ভোট করেন। সেই সংসদ আইনিভাবে বৈধ কি না, তা অবশ্য পরিষ্কার নয়। যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রভোটের দাবিতে বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে। কিছুদিন আগেই যাদবপুরের সমাবর্তনে এই দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের (CV Ananda Bose) গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ চলে। পরে রাজ্যপাল গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। দিনকয়েক আগেই এসএফআই (SFI) একই দাবিতে মিছিল করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Calcutta University) কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে। সেই মিছিল আটকাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে এসএফআই সমর্থকদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশের বাধা সরিয়েই মিছিলকারীরা ভিতরে ঢুকে পড়েন।
বাম ছাত্র সংগঠনগুলির অভিযোগ, আসলে সরকার ছাত্রভোট করতে ভয় পাচ্ছে। তাদের দাবি, ঠিকঠাক ভোট হলে কোনও প্রতিষ্ঠানেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP) সংসদ গঠন করতে পারবে না। টিএমসিপি নেতারা অবশ্য বাম ছাত্রদের ওই দাবি খারিজ করে দিয়ে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় আমরা সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েই জিতব। এসএফআই নেতা সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এমন অনুপ্রেরণা দিয়েছেন যে, দুর্নীতির জালে জড়িয়ে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী-সহ প্রায় গোটা শিক্ষা দফতরই জেলবন্দি। ফলে সরকার আর ছাত্রভোট করার সাহস পাচ্ছে না। দেখা যাক, পঞ্চায়েত ভোটের পর ছাত্রভোট হয় কি না।