Sunday, August 3, 2025
HomeআজকেAajke | বাম জমানাতেও গোলাপ আর ঠান্ডা জল ছিল না, সেদিনও পড়ত...

Aajke | বাম জমানাতেও গোলাপ আর ঠান্ডা জল ছিল না, সেদিনও পড়ত লাশ

Follow Us :

আমার সোনার বাংলা আবার ফিরেছে ছন্দে। আবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েছে উন্নয়ন আর বিকাশ, এবারে হাতে বাঁশ, মুখে গামছা, কোঁচড়ে বোমা, কোমরে গোঁজা পাইপগান। হ্যাঁ, আজ সকাল থেকে গুলিবিদ্ধ ৬ জন আর ভাঙড়ে গেলে খানিক ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ছবি দেখা যাচ্ছে। কোথায় গেল গোলাপ আর ঠান্ডা জল কে জানে। ঘোষণা অনুযায়ী আজই ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। গ্রামবাংলার মানুষজন যাঁরা এমনিতেই সার, বীযের মূল্যবৃদ্ধিতে অর্ধমৃত। বাবা, ঠাকুরদা কি তারও ঠাকুরদা ধান চাষ করতেন তাই অভ্যেসবশত চাষ করে চলেছেন, ধান উঠলে টের পান কত ধানে কত চাল। ছেলে বেকার, মেয়ের বিয়েতে জমি বেচতে হয়। সেই বাংলার কৃষকদের, মানুষজনদের উপকার করার জন্য, তাদের উন্নয়ন আর বিকাশের জন্য চব্বিশ ইন্টু তিনশো পঁয়ষট্টি দিন কাজ করার জন্য আকুলিত প্রাণেরা আপাতত নেমে পড়েছেন মাঠে, মানুষের সেবা করার অধিকার তাকেই পেতে হবে, জান কবুল। শুরুর দিকে ধীরে সুস্থে শুরু হয়েছিল, গোলাপ আর ঠান্ডা জলের কথা শোনা যাচ্ছিল, এলাকায় বিখ্যাত কাজল শেখ নিজেই বাইকে করে প্রার্থী পৌঁছে দিলেন মনোনয়ন কেন্দ্রে। কিন্তু বেলা বাড়তেই, মনোনয়ন জমা পড়ার শেষ দিনে বাংলা উত্তাল। তৃণমূলের নবজোয়ারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কত ভালো ভালো কথা বললেন, বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিক, শান্তিতে নির্বাচন হোক। তাহলে কি সেই সব কথা কেবল কথার কথা ছিল? আসলে এটাই বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতি। তাই বিষয় আজকে, বাম জমানাতেও গোলাপ আর ঠান্ডা জল ছিল না, সেদিনও পড়ত লাশ।

বাংলা জুড়ে রাজনৈতিক হিংসা কেন হয় তা নিয়ে গতকাল আলোচনা করেছিলাম। বলেছিলাম যে আমাদের রাজ্যের দরিদ্রতম মানুষজন তাঁদের রোজগার, তাঁদের পেটের লড়াই জুড়ে থাকে রাজনৈতিক দল বা বলা ভালো শাসকদলের প্রতি আনুগত্য। কাজেই সমাজের নিম্নতম স্তরে এক তীব্র ভায়োলেন্স জন্ম নেয়, যা আসলে বেঁচে থাকার লড়াই। শাসককে ঘিরে একদল গরিব মানুষ, যাঁদের দিনান্তের রোজগার ওই শাসকদল জোগায়। অন্যদিকে থাকে সেই না পাওয়া গরিব মানুষেরা, যারা মনে করে বিরোধী দল এবার ক্ষমতা দখল করবে, কাজেই সেখান থেকে জুটে যাবে রোজগারের ব্যবস্থা। কাজেই অনিবার্য সংঘর্ষ। মরে কারা? সেসব লাশের দিকে চোখ রাখলেই বুঝতে পারবেন, ক্ষয়াটে চেহারা, পেটে খিদে নিয়ে মরিয়া কিছু মানুষ। কিংবা নেহাতই মজা দেখতে এসে গুলি খেয়ে লাশকাটা ঘরে ঢুকে গেল যে, সেও ওই গরিব মহল্লা, প্রান্তিক চাষি বা খেতমজুরদের একজন। এবং অবশ্যই আমাদের ভায়োলেন্সের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বঙ্গ জীবন, যারা তেভাগা দেখেছে, মধ্য ষাটের বাম আন্দোলন দেখেছে, দেখেছে রক্তক্ষয়ী নকশাল আন্দোলন, সেসব তো গান্ধী টুপি মাথায় দিয়ে আইন অমান্য ছিল না। হিংসার সঙ্গে তার অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক ছিল। সেই ঐতিহ্যই এখন নব নব রূপে এসে হাজির। তাহলে আমাদের রাজ্য রাজনীতির প্রতিটা পদে এই হিংসা, গুলি, বোমাকে যদি আমরা রাজনীতির অঙ্গ হিসেবেই এনে নিই, তাহলে এ নিয়ে আলোচনার একটাই রাস্তা থাকে। এবছর কি আগের বছরের থেকে বেশি হিংসা হল? বেশি লাশ পড়ল? বেশি গুলি চলল? নাকি কম? চলুন সেটাও দেখে নিই।

আরও পড়ুন: Aajke | কোথাও গোলাপ, কোথাও ঠান্ডা জল, কোথাও লাঠি হাতে তৃণমূল 

২০০৩, তখন বাম জমানা, লাল ঝান্ডা। তথ্য বলছে পঞ্চায়েত ভোটে মোট মৃতের সংখ্যা ৭০, কেবল মুর্শিদাবাদে ৪৫, ভোটের দিনে ১৩ জন, তার মানে ভোটের প্রস্তুতিতেই ৫৭ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০০৮, তখনও বাম জমানা, মোট মৃত্যু ৩০, ভোটের দিনে মারা গিয়েছিলেন ১৮ জন। ২০১৩, পরিবর্তন এসে গেছে, মোট মৃত্যু ৩৯ জন, ২৫ জন মারা গিয়েছিলেন ভোটের দিনে। ২০১৮তেও মারা গিয়েছিলেন ৩০ জন মানুষ। এবারে ভোট ঘোষণার পর থেকে সরকারি তথ্য অনুযায়ী মারা গিয়েছেন ৩ জন, বেসরকারি বা বিরোধী রাজনৈতিক দলের দাবি মোট চার জন মৃত। এবার আপনারা ওই লাশের কমপারিজন লিস্ট তৈরি করে নিন, আমি কেবল বলব এখনও পর্যন্ত আগেরবারের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম। যদিও এখনও অনেক পথ বাকি। এরপর প্রচার হবে, তখন মারপিটও হবে। তারপর ভোটের দিন, মানে সেই কুরুক্ষেত্রের বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী, সেই যুদ্ধ, কতজন মারা যাবেন কে জানে? তারপর ফল ঘোষণার পরে হেরে যাওয়া কিছু মানুষকে কি মারা হবে না? হবে। কাজেই লাশের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত কম, এটা ঠিক, তেমন অনেক পথ চলা বাকি, এটাও ঠিক। মানুষকে জানিয়েছিলাম ২০০৩-এ ৭০, ২০০৮-এ ৩০, ২০১৩ তে ৩৯, ২০১৮ তে ৩০ জন মারা গেছেন, এবার এখনও পর্যন্ত তিন জন, ভোট শেষ হতে ঢের বাকি। তাহলে কি যে কোনও জমানাতেই এই রাজনৈতিক হিংসা জারি থাকবে? মানুষ কী বলছেন শুনুন। 

হ্যাঁ, গোলাপ আর ঠান্ডা জলের দখল নিচ্ছে বোমা, বুলেট আর লাঠি, মৃত্যুসংখ্যা এখনও কম, কিন্তু বাড়বে, নিশ্চয়ই বাড়বে। এবং কী ভাবে এই হিংসার রাজনীতির গোলকধাঁধা থেকে এ রাজ্যকে বার করে আন যাবে তা নিয়ে কেউ কি চিন্তিত? যে মানুষেরা মারা গিয়েছেন এর আগে, ২০০৩, ২০০৮, ২০১৩ বা ২০১৮তে, কেউ কি এনে দিতে পারবেন তাঁদের পরিবারের খবর, কোনও দল মনে রেখেছে সেই সব মৃত মানুষদের কথা? আজ যিনি বা যাঁরা মার গেলেন, তাঁদের লাশ নিয়ে মিছিল হবে, তাঁদের ঘরে যাবেন নেতারা, হয়তো কিছু সাহায্যও দেবেন। কিন্তু তারপরে? বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাবে সেই সব মানুষ, তাঁরা তখন সংখ্যা, ২০০৩-এ ৭০, ২০০৮-এ ৩০, ২০১৩তে ৩৯ , ২০১৮তে ৩০ আর ২০২৩-এ কত? আমরা সেই সংখ্যার দিকেই তাকিয়ে আছি।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Aadhar Update | ব্লক করা হল ১ কোটি আধার! কেন? দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
00:00
Video thumbnail
SIR Issue | বিহার SIR নিয়ে বাড়ছে সমস্যা, স্বচ্ছতা কমছে, ধোঁয়াশা বাড়ছে, কী কী সমস্যা দেখা যাচ্ছে?
00:00
Video thumbnail
TMC | বাংলাভাষীদের উপর অ/ত্যা/চারের প্রতিবাদ তৃণমূলের কী বললেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা?
00:00
Video thumbnail
Neet UG | জামিন পেলেন নিট ইউজি ২০২৪-র প্রশ্নফাঁসের মূল পান্ডা, প্রশ্নের মুখে CBI-র ভূমিকা
08:11
Video thumbnail
Aadhar Update | ব্লক করা হল ১ কোটি আধার! কেন? দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
01:47
Video thumbnail
Mamata Banerjee | সোমবার ভার্চুয়াল বৈঠক মমতার, দলীয় সাংসদদের কী পরামর্শ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী?
03:31:13
Video thumbnail
Presidency University | SFI-এর বি/ক্ষো/ভ, এন্ট্রান্সের ফল প্রকাশের দিন ঘোষণা প্রেসিডেন্সির
05:28
Video thumbnail
TMC | বাঙালি বি/দ্বে/ষের চূড়ান্ত নজির, দিল্লি পুলিশের অফিশিয়াল চিঠিতে, কী শাস্তি চায় তৃণমূল?
06:05
Video thumbnail
জনতা যা জানতে চায় | বিহার বাহানা, বাংলা নিশানা?
06:22:45
Video thumbnail
Rahul Gandhi | রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক অ্যা/টম বো/ম, 'দেশ চালাচ্ছে অ/বৈ/ধ সরকার'
06:37:06