কলকাতা: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় ছাত্রনেতা হাওড়ার আমতার বাসিন্দা আনিস খান হত্যার (Anis Khan Murder Mystery) তদন্ত যতই এগোচ্ছে যত জটিল হচ্ছে রহস্য। ঘটনার গতিপ্রকৃতি দেখে পুলিসের অনুমান, এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে বহিরাগত বড় কোনও মাথা। কারণ, সানি ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে আনিসের সম্পর্ক ভালোই ছিল। তেমন কোনও শত্রুতা ছিল না বলেই প্রাথমিক তদন্তে এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছে পুলিস। তাছাড়া এইভাবে পুলিস সেজে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার মতো কোনও ঘটনা স্থানীয় গ্রামবাসীর পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয় বলে পুলিসের তদন্তকারী দলের একাংশের অভিমত। পাশাপাশি ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সিআইডির হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
হাওড়া গ্রামীণ পুলিসের ডিএসপি (ডি এন্ড টি) সুব্রত ভৌমিকের নেতৃত্বাধীন তদন্তকারী দল গত দু’দিন ধরে তদন্ত চালিয়ে দেখেছে, আমতার দক্ষিণ পাড়ায় আনিসের তেমন কোনও শত্রুতা ছিল না। বছরখানেক আগে একটি রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে আত্মীয়দের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল আনিসের। তখন নিরাপত্তা চেয়ে পুলিসের কাছে আবেদন করেছিলেন বাগনান কলেজের এসএফআই নেতা আনিস খান।
তার পরেও গ্রামে চারটি রক্তদান শিবির হয়ে গিয়েছে। কোনটিতেই কোনও অশান্তি হয়নি। তাহলে এক বছর আগের রক্তদান শিবিরের ঝামেলার বদলা এতদিন পরে কেন? প্রশ্ন উঠেছে তদন্তকারী পুলিস আধিকারিকদের মনে। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সুকান্ত পালের সঙ্গেও আনিসের সম্পর্ক ভালো ছিল। সুকান্ত পাল জানান, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যখনই আনিসের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে তখনই আমাকে সম্মান দিয়ে কথা বলেছে। অত্যন্ত ভালো এবং ভদ্র ছেলে ছিল সে। যে কোন দরকারে সে আমার কাছে আসতে। উলুবেড়িয়া গ্রামীণ তৃণমূলের সভাপতি এবং রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায় জানান, আমি চাই ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক এবং প্রকৃত অপরাধীরা দ্রুত ধরা পড়ুক। তবেই আসল রহস্য সামনে আসবে।
আরও পড়ুন: Lee Road Murder: শান্তিলালের খুনি অধরাই, খোঁজ পেতে পুরস্কারের ঘোষণা
ঘটনার রাতে গ্রামে বসে একটি ধর্মীয মেহফিল অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে বিভিন্ন বক্তা ধর্মীয় বক্তব্য রাখছিলেন। আনিস ছিলেন এই অনুষ্ঠানের অন্যতম কর্মকর্তা। সেই অনুষ্ঠানের জন্যই সেদিন তিনি গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন কলকাতা থেকে। সারা গ্রামে লাগানো হয়েছিল মাইক। সেই কারণেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী খুঁজে পাওয়া যায়নি। আনিসের বাড়ির পাশে আরও কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। কিন্তু সেই রাতে আনিসের চিৎকার-চেঁচামেচি কেউ শুনতে পাননি উচ্চস্বরে মাইক চলার জন্য।