কলকাতা: চারদিকে পুজোর গন্ধ। মাঠে-ঘাটে কাশফুল। ঝলমলে আকাশ, জানান দিচ্ছে পুজো চলে এসেছে। আর তো হাতেগোনা কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। শুরু হয়ে গিয়েছে দেবীপক্ষের। সেজে উঠেছে শহর থেকে শহরতলি। আর পুজোময় শহরে অভিনেত্রী ঈশা সাহা কী করছেন? কলকাতা টিভি অনলাইনে সৌমীর সঙ্গে আড্ডায় কী জানালেন পড়ুন–
সৌমী: কেমন আছো?
ঈশা: আমি খুব ভালো আছি (খুব হেসে)।
আরও পড়ুন: পুজোতে মধুমিতা কী করেন জানেন?
সৌমী: পুজো তো চলেই এল। ঝলমলে আবহাওয়া, পুজো পুজো গন্ধ পাচ্ছো? কেমন লাগছে?
ঈশা: একদমই পাচ্ছি (উৎসাহিত হয়ে)। খুব ভাল লাগছে। কিছুদিন আগে দেখো বৃষ্টির জন্য মনেই হচ্ছিল না যে, অক্টোবর মাস চলে এসেছে। সামনেই পুজো। কিন্তু এখন ঝলমলে আকাশ দেখে, কাশফুল, পুজো বাজার আর বিখ্যাত গরম দেখে মনটা ভাল হয়ে গিয়েছে (হাসি)। সত্যিই দারুন লাগছে, পুজো আসছে…। মজা লাগছে। চারদিকে এত ভিড়। তুমি যখন সাউথ সিটি বা গড়িয়া হাটের সামনে দিয়ে যাবে, মনে হবে সত্যিই পুজো চলে এসেছে।
সৌমী: পুজো শপিং হয়ে গিয়েছে?
ঈশা: না সেরকম ভাবে না (হেসে)। কোভিডের পর থেকে… নাআআআ… কোভিড নয়, আসলে ইন্ড্রাস্ট্রিতে আসার পর থেকে বেশি কেনাকাটি অনলাইন থেকে হয়ে যাচ্ছে (হেসে)। এছাড়াও ডিজাইনার বন্ধুরা যাঁরা আছেন, তাঁদের থেকে আমি সারা বছর ধরে টুকটাক কিনতে থাকি। ওই বলা যায় আমার ১২ মাসই কেনাকাটা লেগেই থাকে। এগুলো ছাড়াও আমি গিফট পেয়েছি শাড়ি। এছাড়াও আমি বেশ কয়েকটা শাড়ি কিনেওছি। শাড়ি ভাল লাগে আমার খুব। পুজোতে শাড়ি মাস্ট।
সৌমী: আগের মতো মার্কেটে গিয়ে, হাতে ধরে আর শপিং হয় না…?
ঈশা: না গো… (হেসে)। এখন আর হয় না সেই ভাবে। আমার মনে আছে, স্কুলের শেষের দিকে বা কলেজের শুরুতে পকেট মানি যতটা পাওয়া যেত, সেই সময় নিউ মার্কেটে যেতাম। তখন আমি লিলুয়াতে থাকতাম। মনে আছে আমার, যতটা টাকা থাকতো সবটা দিয়ে বার্গেনিং করে কিনতাম। এখন আর সেখানে যাওয়াই হয়না।
সৌমী: পুজোর কয়েকটা দিন কীভাবে কাটাও?
ঈশা: প্রথমেই বলে দিই, পুজোটা আমারা কাছে পুরোও ছুটি (খুব হেসে)। ওই সমটায় কোনও কাজ হয় না সেরকমভাবে। যেটুকু কাজ থাকে ষষ্টীর আগে শেষ হয়ে যায়। এই কাজের সুবাধে ঠাকুর দেখা হয়ে যায় আমার। আমার কাছে ঠাকুর একটাই। মানে ভগবান একজনই। একটা ঠাকুর দেখলেই আমার মনে হয় ঠাকুর দেখা হয়ে গিয়েছে। মাকে দেখা হয়ে গিয়েছে, বাকি ভিড় ঠেলে আমায় না দেখলেও চলবে। তাছাড়া আজকাল তো অনলাইনের মাধ্যমে বাড়ি বসে সেই সুযোগটা এখন মানুষ পেয়ে যান।
সৌমী: তাহলে… এই চার’টে দিন কী বন্ধু-প্রিয়জন না পরিবার? কার সঙ্গে কাটবে?
ঈশা: বন্ধু-বন্ধবরা যাঁরা বাইরে থাকে একসঙ্গে পুজোতে কলকাতায় দেখা হয়। একটা রিইউনিইয়নের মতো হয়। প্রচুর মজা করি, আড্ডা দিই। এর বাড়িতে আজকে, ওঁর বাড়িতে কালকে, এই ভাবে দারুন কাটে পুজো। তবে হ্যাঁ, পুজোর সময় ডেফিনিটলি যেটা করি সেটা হল ঠাকুরের ভোগ খাওয়া। এটা আমি প্রত্যেক বছর করি। তবে জানি না, এই বছর কতোটা হবে। তবে চেষ্টা তো করবোই।
সৌমী: ঈশা আমরা কোভিডের সেই ভয়াবহ দিন কাটিয়ে এসেছি আমরা। কোভিডের সময় পুজো এবং এখনকার পুজোর মধ্যে কী পরিবর্তন লক্ষ্য করছ?
ঈশা: লাস্ট দু-তিন বছর থেকে অনেকটাই ডিফারেন্ট এই বছর। আমার মনে হয় না এখন আর কেউ মাস্ক পরে বেরোবে। এখন সেই ভয়টাই আর নেই। সবাই অনেকটাই ওভারকাম করে উঠেছে। আমার মনে হয় এখন সবটাই নরমান হয়ে গিয়েছে।লাস্ট দু-তিন বছরের থেকে এই বছর মনে বেটার কাটবে।
সৌমী: পুজো আসছে… পুজো মানেই চুটিয়ে খাওয়া-দাওয়া। ডায়েট আছে নাকি তোমার?
ঈশা: (প্রথমেই হাসি)। একদম নেই। আমি এখনও নেই ডায়েটে। পুজোর রুটিনটা আমি তৈরি করছি (খুব হেসে)। পুজোর সময় হয় না এই সব। বাঙালির খাওয়ার এমনিতেই পছন্দের। খাবার ছেড়ে থাকা যায় নাকি বল তো পুজর সময় (হাসি)। তার উপর ভোগ রয়েছে। সম্ভবই না। ডায়েট কি করে হবে বল?
সৌমী: কিন্তু ঈশা… শরীর চর্চা তো রয়েছেই। কীভাবে মেনটেন করছো এখন, পরেই বা কী করবে?
ঈশা: দেখো আমাদের তো সারাবছরই থাকে। পুজর সময় আলাদাভাবে না করলেও হয়। পুজোর সময় ওই সব নিয়ে খুব এদকটা ভাবি না। ভাবলেই বেশি সমস্যা। শুধু ইনজয় করি (হেসে)।
সৌমী: পুজোর পর কী কী প্রজেক্ট আসছে তোমার?
ঈশা: মোস্ট প্রবাবলি… পুজোর পরে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের একটা ছবি আছে ‘একটু সরে বসুন’ রিলিজ হতে পারে দীপাবলির পরেই। সিওর হয়ে এই মূহুর্তে বলতে পারছি না। কিন্তু হওয়ার কথা আছে। হইচইয়ে একটি ওয়েব সিরিজ আছে ‘অন্তরমহল’। সেটা আশা করি নভেম্বরেই আশার কথা রয়েছে। আর বাকি… নেক্সট ইয়ারে। এছাড়াও কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি অসুখবিসুখ সেটা পরের বছর আসতে চলেছে। আর জয়দ্বীপ মুখোপাধ্যায়ের একটা ছবি রয়েছে ‘অপরিচিত’। এই ছিতে আমি, ঋতিক দা ও অনির্বান চক্রবর্তী রয়েছে। এই ছবির শুটিং লন্ডনে হয়ছে কয়েক মাস আগে। সেটাও বোধহয় নেক্সট ইয়ার। আপাতত এই রয়েছে আমার। এগুলোর সবটার শুটিং হয়ে গিয়েছে। আর অবশ্যই পরের বছরের জন্য ‘ইন্দু’র শুটিং বাকি আছে। ইন্দু প্রেমীদের জন্য সুখবর (হেসে)।
সৌমী: একদম, পুজো খুব ভালো কাটাও…
ঈশা: থ্যাঙ্ক ইউ, তুমিও খুব ভালো পুজো কাটাও…কলকাতা টিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য অনেক অনেক পুজোর শুভেচ্ছা।
অন্য খবর দেখুন: