বারুইপুর: আজও জমিদারী প্রথার ইতিহ্য বহন করে দুর্গা পুজো (Durga Puja) হয়ে আসছে বারুইপুরের (Baruipur) রামনগরের (Ramnagar) ঘোষ বাড়িতে (Ghosh Bari)। ১৪১ বছর ধরে। ইংরেজ আমলে বড়লাট লর্ড ক্যানিং (Lord Canning) ছিলেন জমিদার নরেন ঘোষের ঘনিষ্ঠ। তাই ক্যানিং যাওয়ার পথে দুর্গা পুজোয় এসেছিলেন লর্ড ক্যানিং। পুজোয় কয়েক ঘন্টা সময় কাটিয়েছিলেন তিনি। ছাগল বলি বন্ধ হয়ে গেলেও নিয়ম করে আখ, চালকুমড়ো বলি হয়ে আসছে পুজোয়। অষ্টমীর দিন ঘোষ বাড়ির পুজোয় নিরামিষ আহার খেতে ভিড় করেন গ্রামের লোকজন। পুজো নিয়ে এমনই বললেন পরিবারের প্রবীণ সদস্য মলয় ঘোষ।
রামনগরের ঘোষ বাড়ির প্রথম জমিদার ছিলেন কৈলাস ঘোষ। তাঁর নাম অনুযায়ী বাড়ির নাম কৈলাস ভবন। কৈলাসবাবুর ছেলে নরেন ঘোষ ইংরেজ আমলে ঘোষ বাড়িতে দুর্গা পুজো শুরু করেন। বাড়ির দুর্গা দালানে এখন চলছে প্রতিমা তৈরির প্রস্তুতি। কয়েকদিন পরেই সাজ সাজ রব পড়ে যাবে জমিদার বাড়িতে। কলকাতা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন ঘোষ পরিবারের সদস্যরা। সবাই পুজোর কয়েকদিন মিলিত হয়ে যান দুর্গা দালানে।
আরও পড়ুন: জামদানি থেকে কো-অর্ড সেট, পুজোয় ট্রেন্ডিং কোন পোশাক
পরিবারের প্রবীণ সদস্য মলয় ঘোষ বলেন, ইরেজ আমলে বারুইপুর থেকে ক্যানিং যাওয়ার রাস্তা ছিল মাটির। তাই ক্যানিং যাওয়ার সময় বড়লাট লর্ড ক্যানিং তাঁর ফিয়ট গাড়ি বাড়ির পিছনে রেখে দিতেন। তারপর ঘোড়ার গাড়িতে ক্যানিং যেতেন। দুর্গা পুজোয় তিনি বাড়িতে এসে পুজো দেখেওছিলেন। এছাড়া প্রায় সময়েই ইংরেজ সাহেবরা তাঁদের গাড়ি রাখার জন্য আসতেন বাড়িতে। আগে ষষ্ঠীর দিন রাঁধুনি সোনা ঠাকুরের কচু, দেশি চিংড়ির ঝোল রান্না খেতে প্রচুর মানুষ আসতেন। অষ্টমীর দিন এখনও নিরামিষ লুচি, ফুলকপির ডালনা খেতে গ্রামবাসীরা আসেন। তবে সংখ্যা কিছুটা কমেছে। সপ্তমী থেকে দশমী চালকুমড়ো বলি হয়। সন্ধি পুজো দেখতে আশপাশের গ্রামের মহিলারাও জড়ো হয়ে যান। পরিবারের আর এক সদস্য প্রিয়জিত সেন বলেন, বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে আমাদের পুজো হয়। জমিদারী প্রথার রীতি মেনেই বিসর্জনের দিন কাঁধে করে ঢাক ঢোল বাজিয়ে মাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির পুকুরে। সেই পুকুর হেদুয়ার পুকুর বলে এলাকায় পরিচিত। এই পুকুরেই ইংরেজ সাহেবরাও স্নান করতেন।
আরও খবর দেখুন