কলকাতা: ৭৯ বছরে পা দিল বেহালা ক্লাবের (Behala Club Durga Puja) দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023)। প্রতি বছরের মতো এবারও পুজোর থিমে থাকছে বড় চমক। এবারে তাদের থিমের নাম হল ‘ভাতকাপড়’। হয়তো ভাবছেন ভাত কাপড় আবার পুজোর থিম হতে পারে?
হ্যাঁ, এবার মাতৃ আরাধনায় এই থিমেই সেজে উঠবে বেহালা ক্লাবের পুজো মণ্ডপ। দুর্গাপুজো আসলে আমাদের সকলের কাছে এক এক রকমের বার্তা নিয়ে আসে। এক একজনের কাছে এক এক রকমের অনুভূতি। বিভিন্ন মানুষের কাছে দুর্গাপুজোর এক এক রকমের অর্থ, এক এক রকম ভাবে তারা দুর্গাপুজো পালন করে। তাই প্রাত্যহিক জীবন থেকে উৎসাহিত হয়ে এবারের থিমে বেহালা জায়গা করে নিয়েছে ভাতকাপড়কে।
বিয়ের পর স্বামী স্ত্রীর ভাতকাপড়ের দায়িত্ব নেয় । বাঙালির বিয়ের এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এভাবেই সূচনা হয় দাম্পত্যের। যুগ যুগ ধরে এই রীতি চলে আসছে আমাদের সমাজে।
আরও পড়ুন: ঐতিহ্যকে বজায় রেখেই পুজোর কাজে হাত লাগান বাড়ির ছেলেরা
সকাল থেকে রাত, রাত থেকে দিন বিনা পারিশ্রমিক, বিনা ছুটিতে হাসিমুখে সবার জন্য খেটে চলে বাড়ির বউরা। বাড়ির বউদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাহায্য করে চলেছেন। যারা আমাদের কাজের মাসি বা হেল্পিংহ্যান্ড। তারা আমার আপনাদের বাড়িতে সকাল থেকে রাত খেটে চলেছেন। তারা আমাদেরই একজন। কাজের মাসি বা হেল্পিংহ্যান্ড জীবনধারাকেই এ বছর এই পুজো কমিটি থিমে তুলে ধরার চেষ্টা করবে। এমনটাই জানিয়েছেন ক্লাব কর্তারা। পুজোর বাজেট ২৫ লক্ষের কাছাকাছি। ৭৯ বছরে পা দেবে এই পুজো কমিটির পুজো। মণ্ডপসজ্জার দায়িত্বে অদিতি চক্রবর্তী। প্রতিমাও গড়েছেন অদিতি, সঙ্গে রয়েছেন রাকেশ মাঝি।
পুজো কমিটির এক সদস্যের কথায়, আমাদের মাঝে এমন অনেক মহিলা আছেন, যাঁদের ভাতকাপড়ের দায়িত্ব নিয়েও স্বামীরা কথা রাখেননি। এমনকী প্রাপ্য সম্মানটুকুও খুইয়ে তাঁরা বাধ্য হয়েছেন নিজেদের সংসারের ভার একার কাঁধে তুলে নিতে। যাঁরা একদিন মন দিয়ে শুধু সংসার করতে চেয়েছিলেন আজ তাঁরা অর্থ উপার্জনের কারণে অন্যদের সংসারের কাজ করে চলেছেন। দিনের প্রথম আর শেষ বাস কিংবা ট্রেন তাঁদের জীবন সংগ্রামের নির্বাক সাক্ষী হয়ে থেকে যায়। ঝি, কাজের মাসি এসব শব্দের আড়ালে চাপা পড়ে যায় তাদের আসল পরিচয়। তাঁদের দুঃখ-কষ্টও এবার উঠে আসছে বেহালা ক্লাবের পুজোর থিমে।
আরও অন্য খবর দেখুন